খাবার ও গৃহস্থালি কাজে ভূগর্ভের পানি ব্যবহার নির্বিচারে বাড়ছে। এর ফলে ক্রমেই নিচে চলে যাচ্ছে পানির স্তর। পানিতে আর্সেনিকসহ বিভিন্ন রাসায়নিকের উপস্থিতি বাড়ছে। সেচের সমস্যার কারণে ফসল উৎপাদন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ অবস্থায় ঢাকা মহানগরীতে পদ্মা ও মেঘনা নদীর পানি পরিশোধনের পর সরবরাহ করা হচ্ছে। এরই ধারাবাহিকতায় রাজশাহী মহানগরীতে ভূ-উপরিভাগের পানি সরবরাহে নেওয়া হয়েছে বড় উদ্যোগ। এ বিষয়ে ৪ হাজার ৬২ কোটি ২২ লাখ টাকা ব্যয় ধরে একটি প্রকল্প গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) অনুমোদন পায়। রাজধানীর এনইসি সম্মেলন কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে একনেক সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল অনুমোদন পাওয়া প্রকল্পগুলোর বিস্তারিত সংবাদমাধ্যমে তুলে ধরেন।
মন্ত্রী জানান, গতকাল একনেক সভায় মোট ১৭টি প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এসব প্রকল্প বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ১৪ হাজার ২০০ কোটি ৫৯ লাখ টাকা। সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে এসব প্রকল্পে ১১ হাজার ১৯৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয় করা হবে। বাস্তবায়নকারী সংস্থাগুলোর নিজস্ব তহবিল থেকে ব্যয় হবে ২ হাজার ৮১১ কোটি ৬২ লাখ টাকা। আর অবশিষ্ট ১৯৫ কোটি ২৮ লাখ টাকা প্রকল্প সহায়তা হিসেবে বিদেশি উৎস থেকে সংগ্রহ করার পরিকল্পনা রয়েছে।
পরিকল্পনামন্ত্রী জানান, চট্টগ্রাম অঞ্চলে পাহাড় কাটা বন্ধ করতে বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, পাহাড় কাটার কারণে যেন কোনো মানুষ মাটিচাপা পড়ে মারা না যায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাজশাহী সিটি করপোরেশন এলাকার বাইরেও পাইপলাইনের মাধ্যমে পানি সরবরাহ করতে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন পরিকল্পনামন্ত্রী।
গত মঙ্গলবার একনেক বৈঠকে ২০ প্রকল্পের অনুমোদন দেওয়া হয়। এক দিনের ব্যবধানে গতকাল আবারো একনেক বৈঠক ডেকে অনুমোদন করা হয়েছে ১৭ প্রকল্প। এ বিষয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে হলে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। বেসরকারি বিনিয়োগ কম হচ্ছে। তাই প্রবৃদ্ধি ধরে রাখতে সরকারি বিনিয়োগ বাড়াতে হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, অনুমোদনের অপেক্ষায় এখনো ২৬টি প্রকল্প রয়েছে। এসব প্রকল্প দুটি বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হবে। নির্বাচনের সঙ্গে এসব প্রকল্পের সম্পর্ক নেই বলে তিনি জানান।
গুলশান-বনানী লেক উন্নয়ন প্রকল্প একনেকে উপস্থাপন হলেও অনুমোদন দেওয়া হয়নি। এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে ওই এলাকার ১২ হাজার মানুষকে অন্যত্র সরিয়ে নিতে হবে। তাদের কোথায় পুনর্বাসন করা হবে সেটি এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। পুনর্বাসনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে প্রকল্পটি একনেকে উপস্থাপনের নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।