নির্বাচন সুষ্ঠু হবে জনগণ বিশ্বাস করতে পারছে না : ফখরুল

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

ছবি : সংগৃহীত

নির্বাচন

নির্বাচন সুষ্ঠু হবে জনগণ বিশ্বাস করতে পারছে না : ফখরুল

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৬ নভেম্বর, ২০১৮

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন- আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে তা জনগণ এখনো বিশ্বাস করতে পারছে না। তবে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে ফ্রন্টের বিজয় সুনিশ্চিত বলে দাবি করেন মির্জা ফখরুল। গতকাল দুপুরে মতিঝিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ও গণফোরাম সভাপতি ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে ফ্রন্ট নেতাদের বৈঠক শেষে তিনি এ কথা বলেন।

দলের প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করার বিষয়ে জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল সাংবাদিকদের বলেন- বিএনপি, ২০-দলীয় জোট ও জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করার কাজ চলছে। গত চার দিন ধরে বিএনপি প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার নেওয়া হয়েছে। ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার শেষ হয়েছে। এখন এগুলো চূড়ান্ত করার জন্য সবার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে ঐকমত্যের ভিত্তিতে প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা হবে।

অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আগামী ২৮ তারিখের মধ্যে চূড়ান্ত মনোনয়ন তালিকা নির্বাচন কমিশনে (ইসি) জমা দিতে হবে। তার আগেই কিছু প্রার্থী চূড়ান্ত করা হবে। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময়ের মধ্যে বাকিটা চূড়ান্ত করা হবে। এর মধ্যেও না হলে পরেও প্রার্থী তালিকা চূড়ান্ত করা যাবে। বিএনপি বিশ্বাস করে শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে থাকতে পারলে এবং সরকার ও নির্বাচন কমিশন বড় ধরনের কোনো বাধা হয়ে না দাঁড়ালে ফ্রন্টের বিজয় সুনিশ্চিত।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নির্বাচনের প্রক্রিয়া অব্যাহত রেখেছে। কারণ, বিএনপি নির্বাচনে অংশ নিতে চায়। লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হলে নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হবে। কিন্তু এখনো নির্বাচন কমিশন (ইসি) বা সরকারের কর্মকাণ্ডে এতটুকুও প্রতীয়মান হয়নি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য তাদের উৎসাহ আছে।

‘এখনো বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে’- এমন অভিযোগ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মামলা ও হয়রানি চলছে। কিছুক্ষণ আগে তিনি কোর্ট থেকে মতিঝিলে এসেছেন। সিনিয়র নেতারা এখনো জেলে আছেন। তারপরও বিএনপি নির্বাচনের কাজগুলো সমাপ্ত করার চেষ্টা করছে।

‘বিএনপির দাবি অযৌক্তিক’- ইসির এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ইসির বিষয়ে মন্তব্য করার কোনো প্রয়োজন নেই। নির্বাচন কমিশনার মাহবুব তালুকদার স্টেটমেন্ট দিয়েছেন পুলিশের সামনে। বক্তব্য দিয়েছেন তাদের মিটিংয়ে। এটাই যথেষ্ট। দ্বিতীয়ত, প্রত্যেকটি দল ও জোট বলছে নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য ইসি এমন কিছু করেনি যাতে বলা যাবে তারা নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে চায়। বিএনপির পক্ষ থেকে যে গায়েবি মামলার তালিকা দেওয়া হলো, সে সম্পর্কে এখনো তারা কিছু করতে পারেনি।

মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপির পক্ষ থেকে যেসব কর্মকর্তাকে বদলি বা সরিয়ে দেওয়ার কথা বলা হয়েছিল, তাদের বিষয়ে সিইসি বলেছেন- কাউকে সরানো হবে না। গত শনিবার আরো মারাত্মক কথা বলেছেন, পুলিশ নাকি তাদের নিয়ন্ত্রণে আছে। তারা ইসির নির্দেশেই সব করছে। তাহলে যত গায়েবি মামলা, মিথ্যা মামলা ও যত হ্যারাসমেন্ট হচ্ছে, সবই তাদের নির্দেশে হচ্ছে। এটা হলে তো কোনো লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি হবে না।

‘আমরা খালেদা জিয়ার মুক্তি চেয়েছি, কিন্তু দেওয়া হয়নি’- এমনটা উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, মুক্তি তো দেওয়া হলো না বরং পাল্টা একটার পর একটা মামলা দিচ্ছে। অন্যদিকে বিএনপির নির্বাচন করার মতো যোগ্য ও সিনিয়র নেতাদের কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছে। তাদের মুক্তি দেওয়া হচ্ছে না।

এর আগে দুপুর সাড়ে ১২টায় মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে বৈঠক করেন ফ্রন্ট নেতারা। বৈঠকে ড. কামাল হোসেন ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন মির্জা ফখরুল, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী প্রমুখ। বৈঠকে চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন ফ্রন্ট নেতারা। এরপর তারা জাতীয় প্রেস ক্লাবে যান সংবাদ সম্মেলন করতে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads