নির্বাচনে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতাই কাম্য

ছবি : সংগৃহীত

মুক্তমত

নির্বাচনে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতাই কাম্য

  • প্রকাশিত ২৪ ডিসেম্বর, ২০১৮

নির্বাচনে নিরপেক্ষ শব্দটি সবচেয়ে বেশি কার্যকর সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে। কেননা সাধারণ জনতার বিশেষ রাজনৈতিক পক্ষপাতিত্ব থাকবেই, তার ইচ্ছামতো যেকোনো দলের হয়ে প্রচারণামূলক কর্মকাণ্ড চালাবে এটাই স্বাভাবিক। তবে সাংবাদিকতার দৃষ্টিকোণটি ভিন্ন। সাংবাদিকদের কোনো পক্ষপাতিত্ব থাকা মোটেই কাম্য নয়।  আর সেটা যদি হয়, দেশের জাতীয় নির্বাচনের ক্ষেত্রে তাহলে তো কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। সাংবাদিকদের সব সময় মনে রাখা উচিত জনতার কাছে তারা দায়বদ্ধ।

নির্বাচনী মাঠ অনেক ঘটনাবহুল। এতে কোনো দলের পক্ষপাতিত্ব নিয়ে কোনো সংবাদ তৈরি করলে তা জনগণকে প্রভাবিত করবে। জনগণের দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে যাবে। মিডিয়ার একক আধিপাত্য এবং দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিতে পারে সমাজের পুরো চিত্র। যেকোনো সময় একটি সংবাদের ওপর ভিত্তি করে হয়ে যেতে পারে বড় ধরনের সংঘর্ষ। এক্ষেত্রে নিরপেক্ষ সাংবাদিকতার পাশাপাশি সম্পাদকমণ্ডলীদেরও সতর্ক থাকতে হবে; যাতে এমন সংবাদ প্রকাশ না হয়, যেটাতে সাংবাদিকের নিজস্ব পক্ষপাতিত্বের দৃষ্টিভঙ্গি ফুটে ওঠে, কিংবা এমন কোনো শব্দ, বাক্য যাতে পক্ষপাতিত্বের কোনো ধরনের সঙ্কেত বহন করে।

নিরপেক্ষ সাংবাদিকতাই উপহার দিতে পারে নিরপেক্ষ নির্বাচন। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সাংবাদিকতার ওপর ভিত্তি করেই অনেক কিছু নির্ধারিত হয়। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে সেই ষাটের দশক থেকে সাংবাদিকতার জরিপ এবং আধিপাত্য নির্বাচনকে অনেকটাই প্রভাবিত করেছে।  গবেষণায় দেখা গেছে, সাংবাদিকের প্রতিবেদন অনুযায়ী জনমত গড়ে উঠেছে এবং সেই অনুযায়ী নির্বাচনী মাঠেও প্রতিফলন ঘটেছে।

ঠিক এরকমই, নির্বাচনী মাঠে গণমাধ্যম জনমত গড়ে তোলে, গণমাধ্যম কোনো একদিকে হেলে পড়লে জনমতও একদিকে হেলে পড়ে, এক্ষেত্রে নিরপেক্ষতাই কাম্য সাংবাদিকদের কাছ থেকে। না হয় পুরো জাতির কাছে এবং সচেতন মহলের কাছে প্রশ্নবিদ্ধ হবে সাংবাদিকতা। বস্তুনিষ্ঠতার প্রতি গুরুত্ব দিতে হবে, যেহেতু এটি জাতীয় নির্বাচন। যেখানে যা ঘটেছে তার প্রকৃৃত বিবরণ এবং ভোটকেন্দ্রে যা প্রত্যক্ষ করবে তার ও সত্য বিবরণ তুলে ধরতে হবে। কোনো ধরনের পক্ষপাতিত্ব না করে, কোনো রাজনৈতিক দলের আস্থাভাজন না হয়ে, জনতার কথা মাথায় রেখে, দায়িত্ব পালন করতে হবে সাংবাদিকদের। বিশেষ করে মফস্বল সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে এটি বেশি গুরুত্বপূর্ণ।

নির্বাচন উপলক্ষে প্রতিটি গণমাধ্যমেরই থাকবে কিছু নির্দিষ্ট নীতিমালা, সাংবাদিকদের সেই নিরপেক্ষ নীতিমালার প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে, নির্বাচনকে স্বাভাবিক রাখতে সচেষ্ট ভূমিকা রাখতে হবে সাংবাদিকদের। তাহলেই সম্ভব, অনেক সংঘর্ষ এড়ানো, অনেক গুজব রক্ষা, অনেক সম্ভাবনাকে তুলে আনা এবং একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়া।

সোহাগ মনি

লেখক : শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads