নিঝুম দ্বীপে হচ্ছে ইকো-ফ্রেন্ডলি পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে

নিঝুম দ্বীপে সারি সারি কেওয়া সবুজ বৃক্ষ আর দলে দলে হরিণের পদচারণা

সংগৃহীত ছবি

ফিচার

নিঝুম দ্বীপে হচ্ছে ইকো-ফ্রেন্ডলি পর্যটন কেন্দ্র হচ্ছে

  • এম সালাহউদ্দিন
  • প্রকাশিত ২ অক্টোবর, ২০১৮

হাতিয়ার একটি বিচ্ছিন্ন দ্বীপ নিঝুম দ্বীপ। বঙ্গোপসাগরের বুক চিরে জেগে ওঠা ৮১ বর্গকিলোমিটারের এ দ্বীপ পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয়। চারদিকে মেঘনা নদী ও সাগর পরিবেষ্টিত এ দ্বীপে সারি সারি কেওয়া সবুজ বৃক্ষ আর দলে দলে হরিণের পদচারণা। পাখির কলরবে মুখর নিঝুম দ্বীপে রয়েছে ১৫ হাজারের বেশি হরিণ, ২১ প্রজাতির বৃক্ষ, হাজার হাজার গরু-মহিষ আর এক-তৃতীয়াংশ জুড়ে বাগান। গুটিকয়েক জেলের বসবাস দিয়ে এই দ্বীপের অগ্রযাত্রা শুরু হলেও বর্তমানে জনসংখ্যা রয়েছে ৫৭ হাজার ৭৩৫ জন। এদের মধ্যে ৯০ ভাগ মানুষ মৎস্য ও কৃষিজীবী। পুরো দ্বীপে সবুজের সমারোহ। এসব বনের অধিকাংশ গাছ হচ্ছে কেওড়া। বনে হরিণ আর বানরসহ নানা রকম পশুপাখির বসবাস। দ্বীপের দক্ষিণে বৃত্তাকারে প্রায় ১২ কিলোমিটার জুড়ে রয়েছে বিশাল সি-বিচ।

চন্দ্রালোকে জোয়ার ভাটায় এক মনোমুগ্ধকর দৃশ্য সৃষ্টি করে। দক্ষিণে বঙ্গোপসাগরের ঢেউয়ের উত্তাল গর্জন, পূর্বে দমার চর, পশ্চিমে মেঘনা নদীর কলতান ও উত্তরে মোক্তারিয়া খালের দুই পাড়। শীতের সময় লাখ লাখ অতিথি পাখি এসে এ দ্বীপে এসে আশ্রয় নেয়। এ সময় পাখিদের ডাকে পুরো দ্বীপ মুখরিত হয়ে ওঠে। সূর্যোদয় ও সূর্যাস্তের বিরল দৃশ্য দেখার জন্য সি-বিচ। কিন্তু সি-বিচ এলাকায় বসার জন্য নেই কোনো সুব্যবস্থা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ ও সমৃদ্ধ এই লীলাভূমি উপভোগ করার জন্য দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রতিদিন শত শত পর্যটক যাওয়া-আসা করেন। কিন্তু গত ৩০ বছরেও এই দ্বীপে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। ১৯৯৬ সালে সরকার এই দ্বীপকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে। কিন্তু প্রায় দুই যুগ পরেও তার কোনো কার্যক্রম শুরু হয়নি। এরই মাঝে নিঝুম দ্বীপকে ২০০৮ সালে পূর্ণাঙ্গ ইউনিয়ন ঘোষণা করে সরকার। এলাকাবাসী জানায়, পূর্ণাঙ্গ ইউনিয়ন হলেও সরকারের পক্ষ থেকে চোখে পড়ার মতো কোনো উন্নয়ন কর্মকাণ্ড হয়নি এই দ্বীপে।

নিঝুম দ্বীপ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মেয়াজউদ্দিন জানান, নিঝুম দ্বীপের চারপাশে বেড়িবাঁধ না থাকায় জোয়ারের সময় হু হু করে পানি ঢুকে পড়ে। এতে বাড়িঘর ফসল পানিতে তলিয়ে যায়। সম্প্রতি নিঝুম দ্বীপে এসে নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান ইকো-ফ্রেন্ডলি পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের মহাপরিকল্পনা সরকার হাতে নিয়েছে বলে জানান। এ বিষয়ে নিঝুম দ্বীপ বিটের বন কর্মকর্তা মো. জাবের হোসেন জানান, দেশি-বিদেশি পর্যটকদের আকর্ষণে নিঝুম দ্বীপকে ঘিরে ইকো-ফ্রেন্ডলি পর্যটন কেন্দ্র গড়ে তুলতে একটি প্রকল্প গ্রহণ করছে বেসামরিক বিমান ও পর্যটন মন্ত্রণালয়। এজন্য ৪৮ কোটি ৭৭ লাখ ৬৬ হাজার টাকার প্রকল্প প্রস্তাবনা অনুমোদন দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads