নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারে হিরো আলম

নারী নির্যাতন মামলায় বহুল আলোচিত হিরো আলমকে গ্রেফতার আদালতে প্রেরণ করে সদর থানা পুলিশ

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

নারী নির্যাতন মামলায় কারাগারে হিরো আলম

  • বগুড়া প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৭ মার্চ, ২০১৯

যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে গ্রেফতার আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছ আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা বগুড়া সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রহিম হিরো আলমকে সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (সদর) আদালতে হাজির করেন। শুনানী শেষে আদালতের বিচারক শাহরিয়ার তারিক তাকে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।

গতকাল বুধবার দুপুরে হিরো আলমের স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমির (২৮) বাবা সাইফুল ইসলাম খোকন যৌতুক ও নির্যাতনের অভিযোগে সদর থানায় মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় রাত সাড়ে ১০টায় বগুড়া সদর থানা পুলিশ হিরো আলমকে গ্রেফতার করে।

হিরো আলমের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় বাদি সাইফুল ইসলাম উল্লেখ করেন, তার মেয়ে সুমি বেগমকে ১১ বছর আগে বগুড়া সদরের এরুলিয়া পলিবাড়ী গ্রামের আব্দুর রাজ্জাকের পালিত ছেলে আশরাফুল ইসলাম আলম ওরফে হিরো আলমের সাথে বিয়ে দেন। তাদের দুই মেয়ে ও একটি ছেলে রয়েছে। বিয়ের পর থেকেই হিরো আলম তার স্ত্রীর কাছে দুই লাখ টাকা যৌতুক দাবি করে আসছিল। মেয়ের সংসারে সুখের কথা বিবেচনা করে গত বছরের ২৫ ডিসেম্বর হিরো আলমকে তিনি এক লাখ টাকা দেন। আরো এক লাখ টাকার জন্য হিরো আলম তার স্ত্রীকে প্রায়ই মারধর ও নির্যাতন করতো। গত ৫ মার্চ হিরো আলম যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী সুমি বেগমকে বেদম মারধর করে। পরে তাকে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম বদিউজ্জামান জানান, সাইফুল ইসলাম খোকন তার মামলায় উল্লেখ করেছেন ২লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে হিরো আলম তার স্ত্রী সুমি বেগমকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতো। গত সোমবার রাতে এবং মঙ্গলবার দু’দফা সে তার স্ত্রীকে মারপিট করে, বর্তমানে সে বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এই ঘটনায় দায়েরকৃত মামলায় রাতে হিরো আলমকে গ্রেফতার করা হয়। আজ বৃহস্পতিবার তাকে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে।

আদালতে হিরো আলমের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট এস এম মাসুদার রহমান স্বপন। তিনি হিরো আলমের জামিনের আবেদন করলেও আদালত সেই আবেদন নামঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। অ্যাডভোকেট স্বপন জানান, নিম্ন আদালত ওই মামলায় হিরো আলমের জামিন না দেওয়ায় উচ্চ আদালতে জামিনের আবেদন করা হবে।

বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন হিরো আলমের স্ত্রী সাদিয়া বেগম সুমি জানান, দুই মাস পর গত সোমবার রাতে হিরো আলম বগুড়া শহরতলীর এরুলিয়া গ্রামে তার বাড়িতে আসেন। বাসায় ফেরার পর থেকে বিছানায় শুয়ে একটানা তিন ঘন্টা মোবাইল ফোনে ঢাকার এক নারীর সাথে কথা বলেন হিরো আলম।

এর প্রতিবাদ করলে সোমবার রাতেই তাকে বেদম মারধর করা হয়। তিনি অভিযোগ করেন, হিরো আলম ঢাকায় দ্বিতীয় বিয়ে করেছেন। একারণে বগুড়ায় থাকা স্ত্রী-সন্তানের কোন খবর রাখেন না এবং সংসার খরচ দেন না। এর প্রতিবাদ করায় আগেও তাকে শারিরিক নির্যাতন করেছেন হিরো আলম।

হিরো আলমের শ্বশুর সাইফুল ইসলাম জানান, মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর তার মেয়েকে আবারো নির্যাতন করছে খবর পেয়ে মেয়ের বাড়িতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে মেয়েকে উদ্ধার করে রাতেই হাসপাতালে ভর্তি করে দেন। মারপিটে তার মেয়ে সুমির মাথার পেছনে রক্তাক্ত যখম হয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। একারণে যৌতুক ও নারী নির্যাতন আইনে থানায় মামলা দায়ের করেছি।

এর আগে মঙ্গলবার রাতে হিরো আলম তাকে মারপিট করার অভিযোগ এনে শ্বশুর ও স্ত্রীসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগ দায়ের করেছিলেন। প্রাথমিক তদন্তে ওই অভিযোগের সত্যতা পায়নি পুলিশ। একারণে তার অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করেনি সদর থানা কর্তৃপক্ষ।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads