নানা সমস্যায় হর্টেক্স ফাউন্ডেশন

ছবি : সংগৃহীত

ফিচার

নানা সমস্যায় হর্টেক্স ফাউন্ডেশন

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১২ অগাস্ট, ২০১৮

দেশে উৎপাদিত কৃষি ও খাদ্যশস্য প্রক্রিয়াজাতকরণে সহায়তা দেওয়া হর্টিকালচার এক্সপোর্ট ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের (হর্টেক্স ফাউন্ডেশন) অন্যতম কাজ। এ লক্ষ্যে ১৯৯৩ সালের কোম্পানি আইনের অধীনে এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি চালু করেছিল সরকার। কিন্তু পর্যাপ্ত জনবল ও অর্থায়নের অভাবে প্রতিষ্ঠার পর থেকে নিজ লক্ষ্যে বিশেষ কোনো অবদান রাখতে পারেনি ফাউন্ডেশনটি। দীর্ঘদিন ধরে প্রতিষ্ঠানটি খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে চলছে বলে অভিযোগ সংশ্লিষ্টদের।

সংশ্লিষ্টরা জানান, উৎপাদন থেকে শুরু করে উৎপাদিত ফসলের বাজারজাতকরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার জন্য হর্টেক্স ফাউন্ডেশন চালু হয়েছিল। প্রতিষ্ঠানটির মূল লক্ষ্য ছিল দেশে উৎপাদিত পণ্যের রফতানি বাড়াতে সব ধরনের পদক্ষেপ গ্রহণসহ উদ্যানতাত্ত্বিক ফসল উৎপাদন কর্মপরিকল্পনা তৈরি এবং তা বাস্তবায়ন, উৎপাদক ও রফতানিকারকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন প্রশিক্ষণ, সভা, সেমিনার, কর্মশালার আয়োজন করা, ফসলের মাঠ প্রদর্শনী, প্রযুক্তিগত ও প্রায়োগিক গবেষণা সহায়তা, কৃষক-বাজার সংযোগ স্থাপন, নিয়মিত উদ্যান ফসলের উৎপাদন প্রযুক্তি ও রফতানির নতুন নতুন বাজার তৈরি, রফতানি পণ্যের জন্য শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কৃষিপণ্য পরিবহনে ব্যবস্থা করা। তবে বাস্তবে এসব কাজ আটকে রয়েছে শুধু কাগজ-কলমেই। বছরে দু-একটি কৃষক পর্যায়ে প্রশিক্ষণ আর পাঁচটি শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কৃষিপণ্য পরিবহনে গাড়ি ভাড়া পর্যন্তই সীমাবদ্ধ ফাউন্ডেশনের কাজ।

জানা গেছে, কৃষি মন্ত্রণালয়ের অধীন এ ফাউন্ডেশনটি প্রতিষ্ঠার পর থেকেই জনবল স্বল্পতায় ভুগছে। এখনো ফাউন্ডেশনের কাঠামোতে ৪৬ জন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা থাকার কথা থাকলেও কাজ করছেন মাত্র ১৫ জন। বর্তমানে কৃষি অধিদফতরের সাবেক মহাপরিচালক মো. মনজুরুল হান্নান ফাউন্ডেশনটিতে ব্যবস্থাপনা পরিচালকের দায়িত্ব পালন করলেও ফাঁকা পড়ে রয়েছে তার অধীন গুরুত্বপূর্ণ অন্যান্য পদ।

জনবল কাঠামোতে এখানে একজন জেনারেল ম্যানেজার থাকার কথা থাকলেও সে পদ ফাঁকা রয়েছে দীর্ঘদিন। এমনকি তিনজন ডেপুটি ম্যানেজারেরও কেউই নেই। চারজন অ্যাসিসট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজারের কাজ চালাচ্ছেন দুজন। আর ছয়জন ম্যানেজারের দায়িত্বে রয়েছেন একজন।

এদিকে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা অর্থায়ন জটিলতার কিছুটা নিরসন হয়েছে গত বছর। ২০১৪ সালের পর থেকে ফাউন্ডেশনের কোনো প্রকল্প না থাকায় তৈরি হয়েছিল এ জটিলতা, যা গত বছর আগের প্রকল্প ন্যাশনাল অ্যাগ্রিকালচারাল টেকনোলজি প্রোগ্রাম-ফেজ প্রজেক্ট (এনএটিপি-২) আবারো চালু হওয়ায় কিছুটা নিরসন হয়েছে। এ প্রকল্পের অর্থ ছাড়া বাকি আয় শুধু শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত কৃষিপণ্য পরিবহনে ৬ গাড়ি ও ফাউন্ডেশনের অডিটোরিয়াম ভাড়া থেকে আসে, যা দিয়ে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেওয়া হচ্ছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কর্মকর্তা বলেন, জনবল দুর্বলতা ও অর্থায়ন এ ফাউন্ডেশনের প্রধান সমস্যা। সে বিষয়ে সরকার আন্তরিক নয়। এ কারণে ফসলের বাজারজাতকরণসহ বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালনার কথা থাকলেও আসলে কোনো কাজই ঠিকঠাক মতো হচ্ছে না। শুধু প্রকল্পের আওতায় বছরে কয়েকটি প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালানো সম্ভব হচ্ছে।

উচ্চ পর্যায়ে সাত সদস্যের পরিচালনা পর্ষদ (গভর্নিং বডি) দ্বারা হর্টেক্স ফাউন্ডেশন পরিচালিত হয়। এর মধ্যে দুজন সরকারি প্রতিনিধি, অবশিষ্ট পাঁচজন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের নির্বাচিত প্রতিনিধি রয়েছেন। কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব পদাধিকার বলে পরিচালনা পর্ষদের চেয়ারম্যান এবং ব্যবস্থাপনা পরিচালক চিফ এক্সিকিউটিভ অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads