পুরনো ব্যর্থতাকে ভুলে নতুনকে সঙ্গী করেই এগিয়ে যেতে হবে। বিদায়ী বছরে কিসে ব্যর্থ হয়েছেন, সেই হিসাব বাদ দিয়ে নতুন বছরে সফলতার পথ খুঁজে বের করুন। নানা রকম ভুল অভ্যাসই আমাদের পেছনে ফেলে দেয়, ব্যর্থ করে দেয় বেশিরভাগ সময়। তাই নতুন বছরে সফলতার পথে হাঁটতে হলে নিজেকে কিছু সুন্দর অভ্যাসের মধ্য দিয়ে গড়ে তুলতে হবে। তাই নতুন বছরে বদলে ফেলুন নিজের কিছু অভ্যাস।
১. দিনের বেশিরভাগ সময় সোশ্যাল মিডিয়ায় বুঁদ হয়ে থাকার অভ্যাস থাকলে তা থেকে বাইরে বেরিয়ে আসুন। সুযোগ পেলেই সোশ্যাল মিডিয়ায় যুক্ত থাকার এই বদঅভ্যাসটি গড়ে উঠছে আমাদের। প্রতি মুহূর্তে অনলাইনে থাকার প্রবণতা অনেক সময় কেড়ে নিচ্ছে আমাদের। তাই নতুন বছের না হয় নিয়মটা একটু পাল্টে নিলেন! বই পড়তে ভালোবাসলে অথবা গান শুনতে পছন্দ করলে এই সময়টা কাজে লাগান। এতে সারাক্ষণ সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি আসক্তিও কমবে। আবার প্রিয় শখ বজায়ও থাকবে।
২. অফিসে থাকলে দুপুরের খাবারটা কি কোনোমতে শেষ করেই আবার সিটে গিয়ে বসে পড়েন? এমনটা করলে এ বছর থেকে এই নিয়ম বদলে ফেলুন। বরং হাতে কিছুটা সময় রাখুন। দুপুরে খাওয়ার পর কয়েক মিনিট হাঁটাহাঁটি করার অভ্যাস করুন। দশ বা পনেরো মিনিট হাঁটলে শরীরের বিপাক হার বাড়িয়ে খাওয়ার হজম করা সহজ হবে। তাছাড়া ওবেসিটির ভয়ও অনেকটা কমবে।
৩. সবসময়ই নিজের ব্যর্থতার দায় অন্যদের ওপর চাপাতে পছন্দ করি আমরা। ভেবে দেখুন গত বছর কতগুলো ভালো চাকরির আবেদন করতে পারেননি খুব তুচ্ছ কিছু ব্যস্ততার অজুহাতে। কতগুলো গুরুত্বপূর্ণ ক্লাস মিস করেছেন অলসতার কারণে। আপনার জীবনের মালিক আপনি। আপনার সব কাজের জন্য আপনিই দায়ী। ভালো কাজ করলে সুফল পাবেন আপনি। নিজের কাজের প্রতি কোনো অজুহাত দেওয়া যাবে না। গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলো সবার আগে করুন। ত্যাগ স্বীকার করুন। দেখবেন অনেক বেশি সফলতা আসবে।
৪. ইমেইলের ইনবক্সে একগাদা অপ্রয়োজনীয় মেইল জমিয়ে রাখার অভ্যাসটি বাদ দিতে হবে। এতে দরকারি সময় প্রয়োজনীয় মেইল খুঁজে পেতে যেমন সুবিধা হবে। ঠিক তেমনই জীবনের একটা দিক অন্তত গুছিয়ে ফেলতে পেরেছেন দেখে মানসিক তৃপ্তিও পাবেন।
৫. গবেষণায় দেখা গেছে, বাড়তি খাবারে আস্থা রাখেন যারা, তাদের শরীরে অন্যদের তুলনায় প্রতি সপ্তাহে ১৭৩ ক্যালোরি ও প্রতি দিন প্রায় ১৬ গ্রাম করে কম চিনি প্রবেশ করে। সুতরাং মাঝে মাঝে বাইরে খান ক্ষতি নেই, কিন্তু কথায় কথায় রেস্তোরাঁয় আর নয়। মাঝে মাঝে বাইরে খেতে গেলেও নিজের কমফোর্ট জোন থেকে বেরিয়ে আসুন। বরং কখনো খাননি এমন কোনো ডিশ অর্ডার করুন পছন্দের রেস্তোরাঁয়। এতে নানা কুইজিনের সঙ্গে পরিচয় যেমন হবে, তেমনি প্রিয় খাবারের তালিকাও বাড়তে পারে।
৬. সারাক্ষণ খুব নিয়ম মেনে চলতে না পারলেও অন্তত ঘুমানোর আগে নিজের সেলফোনটি সরিয়ে রাখুন। এতে ঘুম না আসার সমস্যাকে আয়ত্তে আনতে পারবেন অনেকটাই। তাছাড়া কয়েক গুণ মানসিক চাপও কমে যাবে।
৭. রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে অন্তত পাঁচ মিনিট নিজের ত্বকের যত্ন নিন। এতে ত্বকের উজ্জ্বলতা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি শত কাজের ব্যস্ততার মধ্যেও নিজের শরীরের কোনো যত্ন নিতে না পারার আক্ষেপও অনেকটা ঘুচবে।
৮. সময় এবং সুযোগ করে বেড়ানোর অভ্যাস করুন। একান্তই দূরে যাওয়ার সময় করে উঠতে না পারলে অন্তত কোনো আত্মীয়ের বাসা থেকে বেড়িয়ে আসুন কয়েকটি দিন। এতে কাজের থেকে মুক্তি যেমন মিলবে, তেমনি অবসাদ দূর হয়ে পারিবারিক বন্ধনও দৃঢ় হবে।
৯. বছরের প্রথম মাস থেকেই অল্প অল্প করে টাকা জমান। প্রতি মাসের খরচের পর বাজেটের বেঁচে যাওয়া টাকা জমিয়ে রাখুন। এতে মাসের শেষে বেশ কিছুটা টাকা হাতে থেকেই যায়। তার ওপর জমানোর অভ্যাসটাও আলাদা করে তৈরি হয়।
১০. পরিবার ও ঘনিষ্ঠ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার জন্য কিছুটা সময় বরাদ্দ রাখুন। অন্তত সপ্তাহে একদিন কোনো ঘনিষ্ঠ জনকে ফোন করুন। সময় বের করে দু-তিন মাসের ব্যবধানে একটি ছোটখাটো আড্ডার আয়োজন সেরে ফেলুন। এতে ব্যস্ত রুটিনের মধ্যে নিজেকেও খানিকটা ঝরঝরে লাগবে।