ধুবড়িয়ার শতবর্ষী স্কুল

ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

ধুবড়িয়ার শতবর্ষী স্কুল

অবিভক্ত বাংলায় মুসলিমদের প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিদ্যালয়

  • মো. জসিউর রহমান (লুকন)
  • প্রকাশিত ৭ অগাস্ট, ২০১৮

ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয় : নাগরপুর উপজেলার দক্ষিণ-পশ্চিমের ইউনিয়ন ধুবড়িয়া, যা প্রাচীন ইতিহাস ঐতিহ্য এবং বিদ্যাপীঠের সাক্ষ্য বহন করে। শিক্ষা সংস্কৃতিতে এই গ্রামের অর্ধসহস্র বছরের ঐতিহ্য রয়েছে। ধুবড়িয়াতে শিক্ষিত ও সংস্কৃতিমনা লোকজনের বসবাস। এমনি একজন মানুষ ছিলেন ছেফাতুল্লাহ মিয়া। তার প্রচেষ্টায় টোল ব্যবহারের অবসান ঘটে এবং শিক্ষার বিস্তার হয়। তিনি ছিলেন প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ উচ্চ বিদ্যালয়ের কথা বলতে গেলে উঠে আসে ছেফাতুল্লাহ মিয়া ও তার পরিবারের কথা। ছেফাতুল্লাহ মিয়া সর্বপ্রথম ধুবড়িয়াতে একটি মাধ্যমিক বিদ্যালয় স্থাপনের কাজ শুরম্ন করে শেষ করার আগেই ১৯১৪ সালে ২১ নভেম্বর ইনতিকাল করেন। স্বামী বিয়োগের পর মহৎপ্রাণ স্ত্রী মাহাবুবুন নেছা ও সন্তানরা তার প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান দেখিয়ে অসমাপ্ত বিদ্যালয়ের কাজ বাস্তবায়নে এগিয়ে আসেন।  সমুদয় খরচ বহন করেন জনাব ছেফাতুল্লাহ মিয়ার স্ত্রী মাহাবুবুন নেছা এবং চার পুত্র ও পাঁচ কন্যা যথাক্রমে ১। আব্দুল সামাদ ২। আব্দুল সাত্তার ৩। মহম্মদ আব্দুস সালাম ৪। মহম্মদ শামসুল হক ১। নাজমুন নেছা বিবি ২। কুলছুমুন নেছা বিবি ৩। হাজেরা খাতুন ৪। হালিমা খাতুন ৫। নাতিজা খাতুন। ৬.৫০ একর জমির ওপর এ বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। ১৯১৭ সালের ৩ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিকভাবে ধুবড়িয়া ছেফাতুল্লাহ হাই ইংলিশ স্কুল নামে স্কুলটির কার্যক্রম শুরু হয়। অবিভক্ত বাংলায় টাঙ্গাইল অঞ্চলের মুসলিমদের প্রতিষ্ঠিত প্রথম বিদ্যালয়। ১৯১৬ সাল থেকে নিম্নমাধ্যমিক ও ১৯২০ সালে জানুয়ারির ১ তারিখে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত হয় এ বিদ্যালয়টি। ১৯২০ সালেই ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বর্তমানে ২৩ শিক্ষক কর্মচারী, ৬৬৭ শিক্ষার্থী নিয়ে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ২০১৫, ২০১৬ সালে এসএসসি পরীক্ষায় পাসের হার ৮৫ ও ৭৭.৬৮ শতাংশ।

ধুবড়িয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় : ১৯১৪ সালে নাগরপুর উপজেলার ধুবড়িয়া ইউনিয়নে মাহাবুবুন নেছা প্রাথমিক বিদ্যালয় নাম নিয়ে এই প্রাথমিক বিদ্যালয়ের যাত্রা শুরু। যেখানে হয়েছিল আধুনিক শিক্ষা ব্যবস্থার গোড়াপত্তন। বিদ্যালয়টির নাম থেকেই অনুধাবন করা যায় মাহাবুবুন নেছা বিবি ছিলেন প্রতিষ্ঠাতা। ৫২ শতাংশ নিজ ভূমি দান করে তার ওপর বিদ্যালয়ের অবকাঠামো নির্মাণ করে দিয়েছিলেন শিক্ষানুরাগী এ নারী। মাহাবুবুন নেছা বিবি ছিলেন মোগল সম্রাট শাহজাহানের কাছ থেকে ফরমান বলে মাদাত-ই-মায়াশ হিসেবে লাখেরাজ ভূমি প্রাপ্ত শেখ মো. দিলওয়ারের অষ্টম অধস্তন পুরুষ মুন্সী নৈমুদ্দিন সাহেবের একমাত্র সন্তান ও ধুবড়িয়ার স্বনামখ্যাত ব্যবসায়ী ও শিক্ষানুরাগী ছেফাতুল্লাহ মিয়ার স্ত্রী। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ে ৪৪২ জন ছাত্র-ছাত্রী অধ্যয়নরত যার মধ্যে ২২৮ ছাত্রী এবং ২১৪ ছাত্র। ২০১৭ সালের পাসের হার ৯১.৬৭ শতাংশ  এবং ২০১৫ ও ২০১৬ সালের পাসের হার শত ভাগ। এ ছাড়া প্রতি বছর বৃত্তিপ্রাপ্ত হচ্ছে এ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়টি ৫টি ভবন নিয়ে গঠিত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads