দেশে এইডস আক্রান্তদের ২৫ শতাংশ নারী

এইডস আক্রান্তদের ২৫ শতাংশ নারী

প্রতীকী ছবি

জাতীয়

দেশে এইডস আক্রান্তদের ২৫ শতাংশ নারী

# সবচেয়ে বেশি চট্টগ্রামে কম রংপুরে # ঢাকায় মাদক গ্রহণকারীদের ২২ শতাংশের শরীরে সংক্রমণ # বিশ্বে আক্রান্ত তিন কোটি ৪০ লাখ # প্রতিদিন আক্রান্ত হচ্ছে ৭০০ কিশোর-কিশোরী

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

দেশে ২০১৭ সালের জুন থেকে ২০১৮ সালের জুন পর্যন্ত এইচআইভি পরীক্ষা করিয়েছেন ৫২ হাজার ২৩৬ জন। এর মধ্যে এইচআইভি পজিটিভ পাওয়া গেছে ৩০ জন। আক্রান্তদের মধ্যে ১৮ বছরের নিচে ৫ শতাংশের বেশি শিশু ও কিশোর-কিশোরী আর ২৫ শতাংশ নারী। ২০১৮ সালের ইউনিসেফের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের জনসাধারণের মধ্যে এইচআইভির প্রাদুর্ভাব অনেক কম।

বিশ্বস্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে, বর্তমানে বিশ্বে প্রায় তিন কোটি ৪০ লাখ মানুষ এইডসে আক্রান্ত। চিহ্নিত হওয়ার পর এ পর্যন্ত প্রায় এ মারাত্মক ব্যাধিতে ভুগে মারা গেছে ৩ কোটি ৫০ লাখ মানুষ। প্রতিদিন বিশ্বে নতুন করে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয় ৭০০ কিশোর-কিশোরী। অর্থাৎ প্রায় প্রতি দুই মিনিটে আক্রান্ত হয় একজন। এ পরিস্থিতিতে আজ শনিবার পালিত হবে বিশ্ব এইডস দিবস-২০১৮। প্রতিবারের মতো এবারো দেশে দিবসটি নানা কর্মসূচির মধ্য দিয়ে পালন করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এ বছর বিশ্ব এইডস দিবসের প্রতিপাদ্য হলো— ‘এইচআইভি পরীক্ষা করুন; নিজেকে জানুন’। গত বৃহস্পতিবার ইউনিসেফের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, দেশে এইআইভি-এইডস রোগী এবং এই রোগে মৃত্যুর সংখ্যা কমছে। সরকারি হিসাবে দেশে ২০১৭ সাল পর্যন্ত এইচআইভি এইডস শনাক্ত হয়েছে ৫ হাজার ৫৮৬ জন। মৃত্যু হয়েছে ৯২৪ জনের। তবে আক্রান্ত রোগীর অনুমিত সংখ্যা ১৩ হাজার। প্রায় ৭ হাজার ৫০০ রোগী এখনো শনাক্ত হয়নি। এর আগে ২০১৬ সালে শনাক্ত হয়েছিল ৪ হাজার ৭২১ জন জন। মৃত্যু হয়েছে ৫৭৮ জন। দেশে ২৩ জেলায় আক্রান্তের প্রাদুর্ভাব ও ঝুঁকি বেশি চিহ্নিত করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি রোগী চট্টগ্রামে— ১ হাজার ৬৭১। সিলেটে ১ হাজার ৯২ জন। সবচেয়ে কম ময়মনসিংহ ও রংপুরে যথাক্রমে ৬৪ ও ৫৩। শিরায় মাদক গ্রহণকারীদের এইচআইভির সংক্রমণ ঢাকায় সবচেয়ে বেশি। এদের ২২ শতাংশের শরীরে এইচআইভির সংক্রমণ আছে।

প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ২০১৮ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে এইডস-সম্পর্কিত রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ৩ লাখ ৬০ হাজার কিশোর-কিশোরীর মৃত্যু হতে পারে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির বর্তমান হার বজায় থাকলে ২০৩০ সালের মধ্যে আনুমানিক ২ লাখ ৭০ হাজার কিশোর-কিশোরী এইচআইভিতে আক্রান্ত হবে।

ডাইরেক্টর জেনারলে অব হেলথ সার্ভিস (ডিজিএইচএস) জ্যেষ্ঠ সমন্বয়ক মো. আখতারুজ্জামান  জানান, এইডস রোগে আক্রান্ত হলেই মৃত্যু— এমন ধারণার পরিবর্তন হয়েছে। যথাযথ চিকিৎসায় নিয়ন্ত্রণে রেখে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব। আগের তুলনায় এইচআইভি সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে মানুষ। পাশাপাশি দুরারোগ্য ব্যাধিটির প্রতিরোধে কাজ করছে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা। তবে আরো বেশি সচেতন হতে ব্যক্তি উদ্যোগে সংশ্লিষ্ট রোগের পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার বলে মন্তব্য করেছেন তিনি।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয় (বিএসএমএমইউ), চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কক্সবাজার জেলা সদর হাসপাতাল এবং মহাখালী সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল থেকে পিএমটিসিটি প্রকল্পের মাধ্যমে এইডস আক্রান্ত মা ও শিশুদের চিকিৎসা হচ্ছে।

স্বাস্থ্য অধিদফতরের টিবি-লেপ্রোসি ও এইডস-এসটিডির লাইন ডিরেক্টর অধ্যাপক ডা. সামিউল ইসলাম বলেন, সরকার আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে বাংলাদেশ থেকে এইচআইভি নির্মূলের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এইচআইভি-এইডস রোগীর চিকিৎসা বেশ ব্যয়বহুল। এই এইচআইভি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে পজিটিভ হলে এদিকে, রোগীর পুরো দায়িত্ব সরকারের। রোগী প্রতি ছয় হাজার থেকে ১৪ হাজার টাকা খরচ হয়।

বিশ্ব এইডস দিবস উপলক্ষে আজ বেলা ১১টায় রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট মিলনায়তনে এক আলোচনা সভার আয়োজন করেছে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দিবসটি উপলক্ষে পৃথক বাণী দিয়েছেন। এইডসের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও জনসচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে বিশ্ব সম্প্রদায় ১৯৮৮ সাল থেকে দিবসটি পালন করে আসছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads