দুই শতাধিক বছর আগে মুক্তাগাছার প্রসিদ্ধ মণ্ডার জনক গোপাল পাল এক রাতে স্বপ্নাদিষ্ট হলেন। শিয়রে দাঁড়িয়ে এক ঋষি তাকে আদেশ দিচ্ছেন- মণ্ডা মিষ্টি তৈরি কর। পরদিন ঋষির আদেশে চুল্লি খনন শুরু করলেন গোপাল। দৈবাৎ উদয় হলেন সাধু। তিনি হাত বুলিয়ে দিলেন চুল্লিতে। গোপালকে শিখিয়ে দিলেন মণ্ডা তৈরির কলাকৌশল। দুধ আর চিনি দিয়ে তৈরি হলো মণ্ডা। গোপাল তার নবউদ্ভাবিত মণ্ডা পরিবেশন করলেন তৎকালীন মুক্তাগাছার জমিদার মহারাজা সূর্যকান্ত আচার্য চৌধুরীর দরবারে। মণ্ডা খেয়ে তৃপ্তিতে মুগ্ধ মহারাজ গোপালকে মণ্ডা তৈরির অদ্বিতীয় কারিগর হিসেবে আখ্যা দিলেন। সেই থেকে যাত্রা শুরু হলো ঐতিহ্যবাহী মুক্তাগাছার মণ্ডার। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন আর তৃপ্তিতে দেশসেরা মণ্ডা তৈরির রেকর্ড করলেন গোপাল পাল। জানা যায়, ময়মনসিংহের মুক্তাগাছায় মণ্ডা অনেকেই তৈরি করেন। ফলে অনেক দোকানেই মণ্ডা পাওয়া যায়। তৈরির সব উপাদানও দেওয়া হয়। কিন্তু তারপরও পাওয়া যায় না গোপাল পালের বংশধরদের তৈরি মণ্ডার স্বাদ। বাংলাদেশের সঙ্গে মিশে আছে মুক্তাগাছার গোপাল পালের মণ্ডা, কুমিল্লাার রসমালাই, পোড়াবাড়ির চমচম, বগুড়ার দই, নাটোরের কাঁচাগোল্লা, নেত্রকোনার বালিশ মিষ্টি। তবে মুক্তাগাছার মণ্ডার নাম শোনেননি ভোজন রসিকদের মধ্যে এমন লোক খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। স্থানীয়রা জানান মণ্ডা তৈরির কারিগর গোপাল পাল বাংলা ১২০৬ সালে তৎকালীন ভারতবর্ষের মুর্শিদাবাদে জন্মগ্রহণ করেন। এরপর নবাব সিরাজউদ্দৌলার মৃত্যুর পর গোপাল মাতৃভূমি রাজশাহীতে চলে আসেন। পরে বাংলা ১২৩০ সালে তিনি মুক্তাগাছায় বসত গড়েন এবং স্বপ্নযোগে নির্দেশ পেয়ে বাংলা ১২৩১ সালে তিনি প্রথম মণ্ডা তৈরি করেন।