ফিলিপিনের মতো উন্নয়নশীল দেশে দ্রুত বেড়ে চলা জনসংখ্যার চাহিদা মেটানো কঠিন কাজ। বর্তমানে দেশটিতে প্রায় ১০ কোটি মানুষের চাহিদার তালিকায় শীর্ষে আছে বিদ্যুৎ সংযোগ। বিশেষ করে রাজধানী ম্যানিলায় এই চাহিদা সবচেয়ে বেশি। বর্তমানে দেশটিতে যে পরিমাণ বিদ্যুৎ উৎপাদিত হচ্ছে, তা প্রচুর ব্যয়বহুল একই সঙ্গে এ থেকে পরিবেশও প্রচুর পরিমাণে দূষণের শিকার হচ্ছে। তাই বিদ্যুৎ উৎপাদনের পাশাপাশি পরিবেশ সংরক্ষণও জরুরি হয়ে পড়েছে দেশটিতে।
এদিকে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ এবং পরিবেশকে দূষণমুক্ত রাখতে এক যাজকের নেতৃত্বে একদল মানুষ ছোট পরিসরে একটি দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্যোগ নিয়েছে। এ ছাড়া একটি ব্যাংকের কর্মকর্তার আর্থিক সহায়তায়ও চালু হতে যাচ্ছে আরেকটি দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র। যেখানে মাটির নিচে চাপা আবর্জনা মিথেন ও অন্যান্য গ্যাস উৎপাদন করে পাম্পের মাধ্যমে মাটির গভীর স্তর থেকে তা উত্তোলন করে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণ করা হবে।
দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য প্রায় ১০ লাখ ইউরো ঋণ দিয়েছেন ব্যাংক অব ফিলিপিন আইল্যান্ডসের জো অ্যান বি এয়ালা। পরিবেশবান্ধব প্রকল্পগুলোর জন্য ঋণদাতা এই কর্মকর্তা বলেন, ফিলিপিনে বিদ্যুতের প্রায় দুই তৃতীয়াংশের উৎসই জীবাশ্মভিত্তিক জ্বালানি। এ দেশের ব্যাংক হিসেবে আমাদের ছোট্ট জগতে আমরা আরো দূষণমুক্ত জ্বালানির দিকে এগোনোর ক্ষেত্রে সহায়তার আশা করি। আমরা উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে সেই প্রকল্পকে লাভজনক ও প্রযুক্তিগতভাবে কার্যকর করার চেষ্টা করি।
ঋণপ্রাপ্ত এই বিদ্যুৎ উৎপাদন প্রকল্পের প্রকৌশলী সিলভার নাভারো জানান, আমরা দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য এমন একটি জায়গা পছন্দ করেছি যা এক বছর আগেও দুর্গন্ধে ভরা আবর্জনার পাহাড় ছিল। এই জায়গাটিই ম্যানিলায় সবচেয়ে বড় আবর্জনার স্তূপ ছিল। এখানেই যত ময়লা আবর্জনা ছিল সেগুলোকে আমরা মাটি দিয়ে চাপা দিয়েছি, যার ফলে মাটির নিচে চাপা থাকা আবর্জনা মিথেন ও অন্যান্য গ্যাস উৎপাদন হবে, যা আমাদের কাছে থাকা ১০০টিরও বেশি পাম্পের মাধ্যমে মাটির গভীর স্তর থেকে তা উত্তোলন করা হবে।
এ ছাড়া স্থানীয় পাদ্রি নোয়েল ভিলারেয়ালও এগিয়ে যাচ্ছেন নিজের ছোট্ট প্রকল্প নিয়ে। তিনি ইতোমধ্যেই দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য দুই সেট সৌর প্যানেল বসিয়েছেন। বর্তমানে যাজকের দফতর ও গির্জার ওপর বসানো এই সৌর প্যানেল থেকে কম খরচে দূষণমুক্ত বিদ্যুৎ উৎপাদন করলেও ভবিষ্যতে সৌর প্যানেল দিয়ে গোটা ছাদ ঢেকে দিতে চান নোয়েল। তিনি বলেন, গোটা বিশ্বকে দেখাতে পারি যে, আমরা পুনঃব্যবহারযোগ্য জ্বালানি ব্যবহার করতে পারি।