তালা (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি:
সাতক্ষীরার তালা উপজেলায় টানা ৪ দিনে থেমে থেমে ভারী বর্ষণে নিম্ন অঞ্চলের বিভিন্ন এলাকায় তলিয়ে যায়। ফলে ৯০৫ হেক্টর মাছের ঘের এবং ৩,৩৬৩ হেক্টর ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। এছাড়াও উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বসতবাড়ি পানিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়াও এ সকল এলাকার রাস্তা-ঘাট তলিয়ে রয়েছে। এসব এলাকার মানুষ অতি কষ্টে বসবাস করছে।
মঙ্গলবার (১৭ সেপ্টেম্বর ) এসব এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, উপজেলার ১২টি ইউনিয়নের নিম্ন অঞ্চল তলিয়ে গেছে। এসব গ্রামের রাস্তা-ঘাট, মাছের ঘের, ধানের ক্ষেত, সবজির ক্ষেত পানিতে তলিয়ে আছে। এছাড়াও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, খেলার মাঠে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। নলকূপ তলিয়ে সংকট দেখা দিয়েছে বিশুদ্ধ পানির। রান্নার ব্যবস্থা না থাকায় অনাহারে দিন পার করছেন অনেকেই। তবে টানা ৪ দিন বৃষ্টির পর সোমবার বিকাল থেকে সুর্য্যের দেখা মিলেছে।
এদিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আব্দুল্লাহ আল মামুন, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা ওবায়দুল হক উপজেলা সরুলিয়া, তালা সদর, তেঁতুলিয়াসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করে খাস খাল দখলমুক্ত ও পানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছন তারা।
স্থানীয় ভুক্তভোগীরা জানান, টানা ৪ দিনের ভারি বর্ষণে আমাদের ঘর-বাড়ি, পুকুর, মৎস্য ঘের এবং ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। আমরা বর্তমানে দিশেহারা হয়ে পড়েছি। যদি দ্রুত পানি না সরে তাহলে অনেক ক্ষতির সম্মুখীন হব আমরা।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ হাজিরা খাতুন বলেন, উপজেলাব্যাপী কৃষি ফসলের ক্ষতির তথ্য সংগ্রহের কাজ চলমান। তবে এর মধ্যে ক্ষতি হয়েছে সবজি ৩৭১ হেঃ, আমন ২৮৪৭ হেঃ, ঘেরের আইলের সবজি ৭০ হেঃ, ফল ১২ হেঃ ও অন্যান্য ৬৩ হেক্টর জমি জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তবে এখনি যদি পানি কমে যায় তাহলে আমনের ফসলটা হতে পারে।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা স্নিগ্ধা খাঁ বাবলি বলেন, উপজেলায় ১০২৭ টি মাছের ঘের সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এর আয়তন ৯০৫ হেক্টর। তবে ক্ষতির পরিমাণ এখনো জানানো সম্ভব না কারণ আমাদের সার্ভে এখনো চলছে।
উপজেলা প্রকল্প কর্মকর্তা ওবায়দুল হক বলেন, ‘এলাকায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণের জন্য সব ইউপি ও সরকারি দপ্তরে তথ্য চাওয়া হয়েছে। জেলা প্রশাসকের কাছে সমাধানের জন্য আর্থিক চাহিদা দেওয়া হয়েছে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ভারপ্রাপ্ত ) আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে নিম্ন অঞ্চল ভারী বর্ষণের ফলে তলিয়ে গেছে। এতে মাছের ঘের ও ফসলি জমি তলিয়ে ব্যাপক টাকার ক্ষতি হয়েছে। তবে দ্রুত জলাবদ্ধতা নিরসনের চেষ্টা চলছে বলেও তিনি জানান।