তারেকের সহযোগী অপু গ্রেফতার

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপু

ছবি : বাংলাদেশের খবর

অপরাধ

তারেকের সহযোগী অপু গ্রেফতার

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ৫ জানুয়ারি, ২০১৯

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কালো টাকা ছড়িয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগে বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের এপিএস মিয়া নুরুদ্দিন অপুকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। গতকাল শুক্রবার রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় র্যাব তাকে গ্রেফতার করে। তবে তিনি গ্রেফতার অবস্থায় পুলিশ পাহারায় চিকিৎসাধীন থাকবেন। সুস্থ হলে র্যাব তাকে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। ভোটের মাত্র চার দিন আগে মতিঝিল থেকে আট কোটি টাকা উদ্ধার করে র্যাব।

তারেকের ঘনিষ্ঠ সহযোগী হিসেবে পরিচিতি অপু একাদশ সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ (ডামুড্যা-ভেদরগঞ্জ-গোসাইরহাট) আসনে ধানের শীষের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন।

র্যাবের মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক মুফতি মাহমুদ বলেন, নির্বাচনে কালো টাকা ছড়ানোর অভিযোগ ছাড়াও অপুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে। নির্বাচনের আগে কালো টাকা ছড়ানোর নীলনকশার সঙ্গে আর কারা জড়িত বা এর নেপথ্যে কে কে আছে, তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বিস্তারিত জানা যাবে। সূত্র মতে, এবার একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শরীয়তপুর-৩ আসনে বিএনপি প্রার্থী ছিলেন মিয়া নুরুদ্দিন অপু। গত ২৪ ডিসেম্বর গোসাইরহাট উপজেলার কুদালপুর  থেকে মিছিল করে উপজেলা সদরে যাওয়ার পথে কুপিয়ে জখম করেছে দুর্বৃত্তরা। স্থানীয় হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর হেলিকপ্টারযোগে তাকে ঢাকায় আনা হয়।

র্যাব সূত্র জানায়, নির্বাচনের আগে ৮ কোটি টাকাসহ গ্রেফতাররা জিজ্ঞাসাবাদে নুরুদ্দিন অপুর নাম বলেছে। তিনি ইতোপূর্বে গ্রেফতার হওয়া হায়দারের মামা। এসব তথ্যের ভিত্তিতে অপুকে গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি একাদশ সংসদ নির্বাচনকে প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর মতিঝিল থেকে নগদ আট কোটি টাকা ১০ কোটি টাকার চেকসহ এক ব্যবসায়ীসহ তিনজনকে গ্রেফতার করে র্যাব। গ্রেফতারদের মধ্যে আলী হায়দার নামের এক ব্যক্তি আমদানি-রফতানি ও ঠিকাদারি  প্রতিষ্ঠান ইউনাইটেড করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক। অন্য দুজন হচ্ছে আমেনা এন্টারপ্রাইজ ঝালকাঠির অফিস ব্যবস্থাপক আলমগীর ও একই প্রতিষ্ঠানের জিএম জয়নাল হোসেন। জব্দ করা টাকার সঙ্গে তারেক রহমানের ছবিসংবলিত এক বিএনপি প্রার্থী মিয়া নুরুদ্দিন আহমেদ অপু নেতার প্রচারপত্র পাওয়া যায়। এই অফিস থেকে অপুর নির্বাচনী এলাকায় তিন কোটি পাঠানো হয়।

ওই দিন মতিঝিলের সিটি সেন্টারস্থ ২৭ তলায় আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিংয়ে র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, ইউনাইটেড করপোরেশনের অপতৎপরতার সংবাদ পেয়ে আমরা সোর্স নিয়োগ করি। এর আগে তাদের অফিস ছিল নয়াপল্টনস্থ বিএনপি কার্যালয়ে সামনে দেড় দুই মাস আগে তারা সিটি সেন্টারের ২৭ তলায় অফিস ভাড়া নিয়ে কার্যক্রম শুরু করে। আমরা তথ্য পাই এ পর্যন্ত তারা দেশের বিভিন্ন আসনে ভোট কিনতে ৭০ থেকে ৮০ কোটি টাকা ছড়িয়েছে। আমরা তাদের হাতেনাতে ধরার লক্ষ্যে ওত পেতে থাকি। অবশেষে নিশ্চিত হয়ে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার সময় এদের টাকা, চেক পোস্টার আয়-ব্যয়ের টালি খাতাসহ এদের গ্রেফতার করা হয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের সাবেক সহসভাপতি নূর উদ্দিন আহমেদ অপু একসময় খালেদা জিয়ার ছেলে তারেকের ব্যক্তিগত কর্মকর্তা হিসেবে কাজ করতেন।

বিএনপি ক্ষমতায় থাকাকালে হাওয়া ভবনের ক্ষমতার প্রভাবে তিনি নানা অনৈতিক কর্মকাণ্ডে যুক্ত ছিলেন বলেও অভিযোগ আছে। ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজস্ব লোককে বিনা টেন্ডারে কাজ পাইয়ে কমিশন নিয়ে তিনি রাতারাতি কোটিপতি বনে যান।

দণ্ড নিয়ে যুক্তরাজ্যে থাকা তারেক কয়েক বছর আগে লন্ডন থেকে সৌদি আরবে ওমরাহ পালনে গেলে তার সঙ্গে তখনো অপুকে দেখা গিয়েছিল।

গ্রেফতার করা হলেও অপুকে আপাতত হাসপাতালে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হবে বলে র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক মুফতি মাহমুদ খান জানান।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads