আবু জাফর অনিককে ছুরিকাঘাতে হত্যাকারী জোনায়েদ আহমেদ শোভনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তার সঙ্গে গ্রেফতার করা হয়েছে এ মামলার অন্যতম আসামি তার ভাই জোবায়েদ আহমেদ ইমনকেও (১৬)। সোমবার রাতে কুমিলার দাউদকান্দি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়। অনিক হত্যার ঘটনায় চার আসামিকে গ্রেফতার করল পুলিশ। এদিকে ভারত থেকে অনিক হত্যা মামলার দুই আসামি গ্রেফতার ও নগরীর আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে মঙ্গলবার দামপাড়া পুলিশ লাইনসে সংবাদ সম্মেলন করেছেন চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশ কমিশনার মাহবুবুর রহমান।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) এসএম মোস্তাইন হোসাইন জানান, সোমবার গভীর রাতে কুমিল্লার দাউদকান্দি থানার চক্রশালা গ্রামে অভিযান চালানো হয়। সেখানে একটি বাড়িতে আত্মগোপনে থাকা শোভন ও ইমনকে গ্রেফতার করা হয়। তাদের মধ্যে শোভনের ছুরিকাঘাতে অনিক খুন হয়েছে বলে পুলিশ এ দুই আসামির কাছ থেকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জেনেছে। এ ছাড়া অনিককে হত্যার পর যে পিস্তল থেকে ফাঁকা গুলি ছোড়া হয়েছিল সে পিস্তলটিও উদ্ধার করা হয়েছে।
এর আগে গত শুক্রবার কলকাতা পুলিশ হত্যা মামলার প্রধান আসামি মহিউদ্দিন তুষার ও তার সহযোগী এখলাসকে কলকাতার ফ্রি স্ট্রিট স্কুল এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। সোমবার দুপুরে কলকাতা পুলিশ তাদের বেনাপোলে বাংলাদেশ পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। মঙ্গলবার তাদেরকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসা হয়।
এর আগে গত ১৭ জুন রাতে চট্টেশ্বরী রোডের মুখে হর্ন দেওয়াকে কেন্দ্র করে বিরোধের জেরে অনিককে প্রকাশ্যে খুন করা হয়। এই ঘটনায় অনিকের বাবা মো. নাছির চকবাজার থানায় ১২ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
এদিকে শুক্রবার ভারতের কলকাতায় গ্রেফতার হওয়ায় অনিক হত্যা মামলার দুই আসামি যুবলীগ নেতা মোহাম্মদ মহিনউদ্দিন তুষার (৩০) ও তার সহযোগী এখলাসুর রহমান এখলাছকে (২২) গ্রেফতারের বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে সিএমপি কমিশনার। এ সময় সিএমপি কমিশনার মাহবুবুর রহমান বলেন, ১৭ জুন রাত ৯টায় অনিককে খুন করার পর ১৯ জুন বিকাল ৪টায় যশোরের বেনাপোল ইমিগ্রেশন পার হয়ে ভারতে চলে যায় দুই আসামি তুষার ও এখলাসুর রহমান। তারা ভারত হয়ে মালয়েশিয়া যেতে চেয়েছিল। বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে দুই আসামির ভারতে পালানোর তথ্য পেয়ে কলকাতা পুলিশের স্পেশাল টাস্কফোর্সকে (এসটিএফ) বিষয়টি আমরা অবহিত করি। বাংলাদেশ ও ভারতীয় পুলিশের মধ্যে চিঠি চালাচালির পর দুই আসামির ভিসা বাতিল করে ভারতীয় পুলিশ। পাশাপাশি ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করে দুই আসামিকে দ্রুত বাংলাদেশে ফেরত নিয়ে আসতে সক্ষম হই আমরা।
তিনি আরো বলেন, এত দ্রুত সময়ের মধ্যে এর আগে বিদেশ থেকে কোনো আসামিকে দেশে ফেরত আনা সম্ভব হয়নি। এটা সম্ভব হয়েছে এসটিএফের চিফের সঙ্গে আমার ভালো যোগাযোগ ছিল বলেই। কসোভোতে শান্তিরক্ষা মিশনে আমরা একসঙ্গে কাজ করেছিলাম। এ ছাড়া কলকাতা পুলিশ কমিশনারের সঙ্গেও আমি সরাসরি কথা বলেছি। যার কারণে তাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে। একটু দেরি হলে তারা ভারত থেকে মালয়েশিয়া চলে যেত।