চাঁদে ভ্রমণের জন্য প্রথম যাত্রীর নাম ঘোষণা করেছে মার্কিন বেসরকারি মহাকাশ প্রতিষ্ঠান স্পেসএক্স। ৪২ বছর বয়সী জাপানি ধনকুবের ও অনলাইন ফ্যাশন টাইকুন ইউসাকু মায়েজাওয়া পাচ্ছেন স্পেসএক্সের প্রথম বাণিজ্যিক চন্দ্রাভিযানের অভিযাত্রী হওয়ার সুযোগ।
গতকাল মঙ্গলবার স্পেসএক্সের সদর দফতর থেকে দেওয়া এক ঘোষণায় জানানো হয়েছে, ২০২৩ সালে ইউসাকু মায়েজাওয়াকে নিয়ে মিশনে যাবে বিগ ফ্যালকন রকেট (বিএফআর)। সে সময় রকেটটি চাঁদের পথে ২৩৮৮৫৫ মাইল পাড়ি দেবে। তবে ভ্রমণের জন্য ইউসাকু মায়েজাওয়ার কাছ থেকে কী পরিমাণ অর্থ নেওয়া হবে তা জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি।
ঘোষণায় বলা হয়েছে, তাদের এই বাণিজ্যিক মিশনের মধ্য দিয়ে সবশেষ ১৯৭২ সালে নাসার অ্যাপোলো ১৭ মিশনের সময়টিকেও বিশেষভাবে স্মরণীয় করে রাখা হবে। এর আগে মাত্র ২৪ জন ব্যক্তি চাঁদে যাওয়ার সুযোগ পেয়েছেন। যাদের প্রত্যেকেই ছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।
স্পেসএক্স বলছে, মহাকাশ পর্যটনের নবযুগের সূচনা করে দিতে প্রায় প্রতিদিনই উড়বে বিএফআর। আর যেকেউ এর সুযোগ নিতে পারবেন।
এদিকে ইউসাকু মায়েজাওয়া এক টুইট বার্তায় তার চন্দ্রাভিযানের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। একই সঙ্গে তার এই মিশনে কয়েকজন চিত্রশিল্পীকেও সঙ্গে নেওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেছেন। তিনি জানান, বিশ্বের কয়েকজন সেরা আঁকিয়েকে তার সঙ্গে চাঁদে যাওয়ার আমন্ত্রণ জানাবেন যেন তারা পৃথিবীতে ফিরে সেখানকার দৃশ্য ভালোভাবে সবার সামনে তুলে ধরতে পারেন।
বিবিসির এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, স্পেসএক্সের নতুন বিএফআর রকেটটি ১৩৬ টন পর্যন্ত ভর বহন করতে পারবে। এতে রয়েছে ৩৭টি র্যাপটর ইঞ্জিন। সোমবার টুইটারে নতুন বিএফআরের একটি ছবিও দিয়েছে স্পেসএক্স। তারপরই প্রতিষ্ঠানপ্রধান ইলন মাস্ক আরেকটি টুইটে নিশ্চিত করেছেন যে, রকেটটি যখন উৎক্ষেপণ করা হবে তখন এটি দেখতে আসলে এমনটাই হবে।
নতুন বিএফআর রকেটটি বানাতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লস অ্যাঞ্জেলেসে জমি ইজারা নিয়েছে স্পেসএক্স। ২০১৯ সালে সেখান থেকেই রকেটটির পরীক্ষা শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে প্রতিষ্ঠানটির। শতভাগ পুনর্ব্যবহারযোগ্য করেই নকশা করা হয়েছে রকেটটির। ফলে মহাকাশ যাত্রার খরচ অনেকটাই কমে যাবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
এই রকেটের মাধ্যমে পৃথিবীর ভেতরেও যেকোনো প্রান্তে এক ঘণ্টার মধ্যে যাতায়াত করা যাবে। ২০২২ সাল থেকে নতুন বিএফআর রকেটটিতে মঙ্গল গ্রহে কার্গো পরিবহনেরও পরিকল্পনা রয়েছে। মাস্কের দাবি, ২০২৪ সালে মঙ্গলে মানব মিশন পরিচালনা করতে পারবে তার প্রতিষ্ঠান।
অন্যদিকে চাঁদে নভোচারী পাঠানোর পরিকল্পনা রয়েছে নাসারও। কিন্তু ২০২২ সালের আগে এটি শুরু হবে না বলে জানানো হয়েছে।