বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় আম্পানের প্রভাবে সকাল থেকে বৈরি আবহাওয়া বিরাজ করছে বাগেরহাটে। থেমে থেমে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টির সাথে বইছে দমকা হাওয়া। ক্রমেই বেড়ে চলেছে বাতাসের তীব্রতা। নদ-নদীতে জোয়ারের পানি বাড়ার সঙ্গে উত্তাল অবস্থা বিরাজ করছে।
স্থানীয়রা জানান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩৫/১ পোল্ডারের শরণখোলা উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের বগি একাকার দুই কিলোমিটার বেরিবাঁধ খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। জোয়ারে বলেশ্বর নদীর পানি বেড়ে ইতোমধ্যে এই এলাকা দিয়ে পানি উপচে পড়ছে। এতে কমপক্ষে ১০টি গ্রামের মানুষ ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে। ফলে এলাকাবাসীর মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে।
স্থানীয় মোজাম্মেল হক জানান, ‘বেড়িবাঁধ না থাকায় বিগত দিনে সিডর ও আইলায় এই অঞ্চলের মানুষের জানমালের ব্যপক ক্ষতি হয়েছে। এই বাঁধ ভেঙ্গে গেলে আমাদের গ্রাম অন্তত ১০টি গ্রাম ভেসে যাবে। ঘূর্ণিঝড় আম্পানের ধেয়ে আসার খবরে এলাকার মানুষের মাঝে ভয়ের সৃষ্টি হয়েছে।
শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরদার মোস্তফা শাহীন জানান, সাউথখালী ইউনিয়নের বগি এলাকার ঝুঁকিপূর্ণ বেড়িবাঁধের স্থানে কাজ চলছে। পরিস্থিতি আগের থেকে অনুকুলে রয়েছে।
বাগেরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাহিদ-উজ-জামান খান বলেন, বাগেরহাটের ১০ কিলোমিটার বেরিবাঁধ ঝুঁকিতে রয়েছে। এরমধ্যে শরণখোলার বগি এবং মোরেলগঞ্জের পঞ্চকরণ ইউনিয়নের কিছু এলকা রয়েছে। কোথাও কোথাও বেরিবাঁধের উপর দিয়ে পানি উপচে পড়েছে। ওইসব এলাকায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত কোথাও বেরিবাঁধ ভাঙ্গার খবর পাওয়া যায়নি বলে জানান এই কর্মকর্তা।
ঘূর্ণিঝড় আম্পান থেকে রক্ষা পেতে উপকূলীয় জেলা বাগেরহাটের প্রায় ১ লাখ ৩৫ হাজার মানুষ আশ্রয়কেন্দ্রে অবস্থান নিয়েছে। এছাড়া প্রায় ১৫ হাজার গবাদি পশু নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক ( সার্বিক) মোঃ কামরুল ইসলাম এই তথ্য জানান।
তিনি বলেন, দূর্যোগ মোকাবেলায় জেলায় রেড ক্রিসেন্ট, স্কাউটস, সিপিপির মোট ১১ হাজার ৭০৮ জন স্বেচ্ছাসেক প্রস্তুত রাখা হয়েছে। প্রস্তুত রাখা হয়েছে ৮৫টি মেডিকেল টিম। এ জেলার জন্য ২০০ মে: টন চাল, নগদ ৩ লাখ টাকা, শিশু খাদ্যের জন্য ২ লাখ. গো খাদ্যের জন্য ২ লাখ টাকা ও ২ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার বরাদ্দ দিয়েছেন।