কেমন মেয়র চাই

তিন সিটি নির্বাচন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

সংরক্ষিত ছবি

ফিচার

কেমন মেয়র চাই

বরিশাল, সিলেট ও রাজশাহী সিটি নির্বাচন নিয়ে তারুণ্যের ভাবনা

  • প্রকাশিত ২৯ জুলাই, ২০১৮

আগামী ৩০ জুলাই অনুষ্ঠিত হবে রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন। নির্বাচনের রঙ্গে মেতে উঠেছে এই তিন নগরী। হরেক রকম পোস্টার ফেস্টুনে ছেয়ে আছে সিটি করপোরেশনগুলো। পুরো নগরীতে বিরাজ করছে উৎসব উৎসব আমেজ। সবাই অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন কে হবে আগামীর নগর পিতা? কার হাত ধরে নগরবাসী এগিয়ে যাবে সফলতা ও সম্ভাবনার দিকে। পিছিয়ে নেই নগরীর তরুণরাও। তারাও উন্মুখ হয়ে অপেক্ষা করছেন আগামীর যোগ্য নগর পিতার জন্য। কিন্তু কেমন মেয়র চান তারা? সেসব বিষয়ে তিন সিটির তরুণদের মতামত নিয়ে আজকের আয়োজনটি সাজিয়েছেন ইশতিয়াক আবীর, মেহেদী হাসান গালীব-

sohanur

যিনি বরিশালকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবেন এবং দেখাবেন

সোহানুর রহমান
নির্বাহী প্রধান ও মহাসচিব, বাংলাদেশ মডেল ইয়ুথ পার্লামেন্ট

আমরা তরুণরাই পরিবর্তনের রূপকার। এবারের বরিশাল সিটি করপোরেশন নির্বাচনে ভোটার তালিকায় যুক্ত হওয়া ৩০ হাজার ৭৩২ জন নবীন ভোটারের হাতেই নির্ভর করছে আগামী দিনের নগরপিতার ক্ষমতার চাবিকাঠি। অপরিকল্পিত তিলোত্তমা নগরী হিসেবে নয়, আমরা বরিশালকে দেখতে চাই আধুনিক, পরিচ্ছন্ন ও সবুজ নগরী হিসেবে। আগামী প্রজন্মের জন্য এক বাসযোগ্য নগরী হিসেবে। যেখানে মানুষ নাগরিক সুবিধা পাবে তাদের দোরগোড়ায়। নারীরা নিরাপদে চলাচল করতে পারবে। মাদকমুক্ত ও ডিজিটাল বরিশাল নগরীতে যুবকরা পাবে তাদের উপযুক্ত কর্মের সুযোগ। আমাদের চাহিদাগুলোকে অগ্রাধিকার যিনি দিতে পারবেন, ভোটের মাধ্যমে ভবিষ্যৎ নগরপিতা হিসেবে আমরা তাকেই বেছে নেব। নির্বাচনে যিনি বিজয়ী হবেন, তাকে শুধু দলীয় হলে চলবে না, পুরো ৫৮ বর্গকিলোমিটারের বরিশালবাসী সবার মেয়র হতে হবে। তিনি বরিশালকে নিয়ে স্বপ্ন দেখবেন, বরিশালবাসীকে স্বপ্ন দেখাবেন। তার সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের সক্ষমতাও থাকবে। নাগরিক সুবিধাবঞ্চিত বর্ধিত এলাকার উন্নয়ন এবং কলোনি (বস্তি) এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান বৃদ্ধিতে নতুন নগরপিতাকে সেবকের মতো ভূমিকা রাখতে হবে। আমরা তরুণরা একজন দক্ষ, যোগ্য এবং নিষ্ঠাবান মেয়র চাই, যার দ্বারা নগরীর প্রকৃত উন্নয়ন হবে ও সাধারণ মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন ঘটবে। নগরের নিরাপদ পানির সমস্যা ও জলাবদ্ধতা দূর হবে। রাস্তাঘাট ও ড্রেনেজ সিস্টেমের উন্নয়ন হবে, যানজটের সমস্যা দূর করতে চলবে সিটি বাস। বরিশাল যেমনি নারী ও শিশুবান্ধব নগরী হবে, তেমনি যুববান্ধব নগরী হতে হবে। প্রাচ্যের ভেনিসখ্যাত বরিশালের ঐতিহ্য যিনি পুনরুদ্ধার করতে পারবেন, তাকেই আমরা নগরপিতার আসনে দেখতে চাই।
FB_IMG_1532677373056

নারীদের জন্য চাই নিরাপদ নগরী

শাকিলা ইসলাম
সংগঠক, ইয়ূথনেট ফর ক্লাইমেট জাস্টিস, বরিশাল

আজো নারী তার পরিবার ও সমাজের কাছে নানাভাবে নির্যাতিত। তাই নারীবান্ধব মেয়র পেলে বিপদে-আপদে তার সাহায্য পাব, এমনই প্রত্যাশা করি। আমাদের অসুবিধার কথা যিনি শুনবেন, বুঝতে চেষ্টা করবেন এবং সাধ্যানুযায়ী সমাধান দেবেন, সেই রকম একজন মেয়র চাই আমরা। তবে বরিশালকে নারীবান্ধব করে গড়ে তুলতে বিগত তিনটি সিটি নির্বাচনে নির্বাচিত নগর পরিষদের কোনো ধরনের সদিচ্ছা ছিল না। এমনকি বার্ষিক বাজেটেও এ বিষয়টি তুলে ধরা হয়নি। ফলে এখনো নগরীতে নারীরা চলাফেরায়, কর্মস্থলে এবং সমান অধিকারপ্রাপ্তিতে নানাভাবে হয়রানির শিকার হচ্ছেন। নগরীর নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের নারীরা স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও চিকিৎসা অধিকার যথাযথভাবে পাচ্ছেন না। নিরাপদ পানীয় জলের অভাবে নারীরাই বেশি কষ্ট পান। মজুরি বৈষম্যের শিকার শ্রমজীবী নারীরা মজুরি বৈষম্যের শিকার। কর্মজীবী মায়েরা তাদের শিশু-সন্তানদের কোথায় রেখে কর্মস্থলে যাবেন তার কোনো সুব্যবস্থা নেই। নগরীতে স্বাচ্ছন্দ্যে নারীদের চলাচলেও নানা প্রতিবন্ধকতা আছে। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগামী ছাত্রীরা যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছেন প্রতিনিয়ত। এখনো একজন নারী সহজে গণপরিবহনে যাতায়াত করতে পারেন না। সব দিক বিবেচনা করলে এ নগরীতে নারীরাই সর্বাধিক উপেক্ষিত। যেমন- নির্বাচিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলরদের এলাকা বড় হওয়ায় ভোটও পান বেশি। অথচ তাদের কাজের সমসুযোগ দেওয়া হয় না, অবমূল্যায়ন করা হয়। সাধারণ কাউন্সিলরদের পাশাপাশি তাদেরও (নারী) উন্নয়নমূলক কাজ করতে দিতে হবে। বরিশালের নারী নেত্রীরা আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীদের কাছে নারীবান্ধব নগরী গড়ে তুলতে কর্মজীবী মহিলা হোস্টেল নির্মাণ, নারী শ্রমিকদের মজুরি বৈষম্য বিলুপ্ত, মাদার্স কর্নার প্রতিষ্ঠাসহ নারীবান্ধব নগরী গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি এবং নির্বাচিত হলে তা বাস্তবায়ন যিনি করতে পারবেন তাকে আমরা মেয়র হিসেবে বেছে নেব।
Monirul Islam

সমস্যাগুলো বলার মতো ভরসাওয়ালা মেয়র চাই
মনিরুল ইসলাম

ইয়েস লিডার, সনাক বরিশাল, টিআইবি

বর্তমানে সবদিকেই তারুণ্যের জয়জয়কার হলেও যোগ্য নেতৃত্বের বড়ই অভাব। তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি প্রতীক কিংবা প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরিতে নয়, বাস্তবতার নিরিখে প্রার্থীর যোগ্যতা বিচার করে ভোট দেব। আমার মনে হয়, নাগরিক সমস্যা একটাই, এক দিনের গণতন্ত্র! অর্থাৎ নির্বাচনের পরে মেয়রের আর নাগরিকদের দরকার পড়ে না। ফলে নগর ভবনে কী হয় না হয় তার খোঁজখবর নাগরিকরা পান না। নাগরিকদের সঙ্গে নগরপিতার এই দূরত্ব কমাতে হবে।
যাতে আমরা নাগরিক সমস্যাগুলো জেলা প্রশাসকের কাছে না বলে আমাদের মেয়রের কাছে বলতে পারি, এমন একজন ভরসাওয়ালা মেয়র চাই। যিনি মেয়র নির্বাচিত হওয়ার পর নাগরিক ও তরুণদের নিয়ে আলোচনায় বসবেন, সেই আলোচনা থেকে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করবেন, পরে পাঁচ বছরের মধ্যে ওই গৃহীত পরিকল্পনা বাস্তবায়নে তার পরিষদ নিয়ে সমন্বিতভাবে কাজ করবেন। তার বলিষ্ঠ নেতৃত্ব নগরীর তরুণ সমাজকে মাদকের ভয়াল থাবা থেকেও দূরে রাখবে। পাশাপাশি তিনি সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে আরো বেশি সম্পৃক্ত হবেন এবং তরুণদের উদ্বুদ্ধ করবেন। এ ছাড়া অবকাঠামোগত উন্নয়নের পাশাপাশি উন্নয়নকৃত কাজগুলোর যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ করবেন। বরিশাল সিটি করপোরেশনের সমস্যা এখানেই। এর বাস্তব প্রমাণ নগরীর পানীয় জলের সমস্যা দূরীকরণে আমানতগঞ্জে ওয়াটার ট্রিটমেন্ট প্লান্ট। যা নির্মাণের পর বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে সচল করা যায়নি। এখন সেই প্রকল্প নদী ভাঙনের হুমকির মুখে। জলাবদ্ধতা দূর করতে ড্রেনেজ ব্যবস্থার উন্নয়ন ও ময়লা ফেলার স্থান নির্দিষ্ট করে দিতে হবে।
তাই নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি না দেখিয়ে জনগণের বিশেষ করে যুবদের চাহিদা বিশ্লেষণ করে যুগোপযোগী ও বাস্তবায়নযোগ্য কর্মসূচির ওয়াদা করতে হবে। সময়ের সঙ্গে মানুষের রুচিবোধেও পরিবর্তন আসছে। যিনি এসব বিষয়ে টেকসই উন্নয়ন করবেন, আগামীর সিটি নির্বাচনে তরুণ ভোটার হিসেবে তাকেই আমি ভোট দেব।

SAYEM SARKAR_1

উন্নয়নে যিনি কাজ করবেন তিনিই আমাদের কাঙ্ক্ষিত নগরপিতা

সায়েম সরকার
চতুর্থ বর্ষ, যন্ত্রকৌশল বিভাগ
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

আসন্ন রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে একজন সৎ, আদর্শবান ও দক্ষ ব্যক্তিকেই জনপ্রতিনিধি হিসেবে দেখতে চাইব; যিনি রাজশাহী নগরীর রাস্তাঘাটসহ সার্বিক যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করে রাজশাহীবাসীকে একটি পরিকল্পিত, সুন্দর ও পরিচ্ছন্ন নগরী উপহার দেবেন। যেখানে বৃষ্টির পানিতে জলাবদ্ধতা তৈরি হয়ে জনগণের দুর্ভোগ সৃষ্টি হবে না কিংবা বার বার রাস্তা কেটে সরকারের অর্থের অপচয় হবে না। আমরা চাইব রাজশাহীবাসীর দীর্ঘদিনের আকাঙ্ক্ষা বাসাবাড়িতে গ্যাস সংযোগের ব্যবস্থা করে মানুষের দুর্ভোগ লাঘব করবেন। রাজশাহীতে বড় কোনো শপিং কমপ্লেক্স নেই। একটি বিভাগীয় শহর হিসেবে রাজশাহীতে ঢাকার বসুন্ধরা সিটি কিংবা যমুনা ফিউচার পার্কের মতো শপিং কমপ্লেক্স আশা করাই যায়।
রাজশাহীর মানুষের কর্মসংস্থানের মূল উৎস হচ্ছে এখানকার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া তেমন বড় কোনো উৎস নেই। দুঃখের বিষয়, রাজশাহীতে একটি প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় থাকা সত্ত্বেও এখানে কোনো শিল্প-কারখানা নেই। শিল্প-কারখানা তৈরি হলে বেকার যুবসমাজের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হতো, যার ফলে সমাজের অপরাধ ও বেকারত্ব অনেকাংশে দূর হতো। রাজশাহী নগরীর মানুষকে ভালো চিকিৎসার জন্য যাতে ঢাকায় যেতে না হয়, সেই লক্ষ্যে নগরীতে উন্নত ও আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা জরুরি। গরিব ও অসহায় মানুষের জন্য বিনামূল্যে কিংবা স্বল্পমূল্যে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।
সর্বোপরি নগরীর উন্নয়নে যিনি কাজ করবেন, জনগণের প্রয়োজনে সবসময় তাদের পাশে থাকবেন এবং সুখী, সমৃদ্ধ, ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়তে সহায়তা করবেন- তিনিই আমাদের রাজশাহীর কাঙ্ক্ষিত নগরপিতা।

FAHIM LATIF

রাজশাহীতে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি

মো. ফাহমিদ লতিফ
তৃতীয় বর্ষ, পুরকৌশল বিভাগ
রাজশাহী প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়

রাজশাহী শহরের অলিগলি এমনকি ঘরের ভেতরেও চলছে নির্বাচনী হাওয়া। আবালবৃদ্ধবনিতার পাশাপাশি সেই হাওয়া লেগেছে তরুণদের গায়েও; বিশেষ করে যারা এবার প্রথম ভোট দেবেন। রাজশাহী শহর বরাবরই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন, দূষণমুক্ত, ছিমছাম পরিপাটি একটি শহর। এখানে সন্ধ্যা নামলেই দল বেঁধে কর্মীরা নেমে পড়েন পরিচ্ছন্নতা অভিযানে। ভোর হতে হতেই পুরো শহর পরিপাটি। এটাই রাজশাহী শহরের অন্যতম একটি বিশেষত্ব। কিন্তু গত দু-এক বছরে এ কাজে ভাটা পড়েছে। রাস্তাঘাটের সংস্কার হচ্ছে না। ফলে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ জনগণকে। শিক্ষানগরী নামে পরিচিত এই শহর থেকে প্রতি বছর অগণিত শিক্ষার্থী পাস করলেও এখানে নেই চাকরির কোনো ব্যবস্থা। ফলে কর্মাভাবে দিশাহারা শিক্ষিত তরুণরা। এক্ষেত্রে পদ্মাকে কেন্দ্র করে রাজশাহী শহরে পর্যটন শিল্প গড়ে তুললে তা হতে পারে একটি উল্লেখযোগ্য সমাধান। এ ছাড়া শহরে শিল্প-কারখানা গড়ে তোলা এখন সময়ের দাবি। তরুণদের বেকারত্ব থেকে মুক্তি দিলেই তো মুক্তি পাবে সমাজ, জাতি ও দেশ। এ অবস্থায় আবশ্যক একজন সৎ, যোগ্য ও কর্মঠ নগরপিতা। কারণ যোগ্য হলে নগরপিতা, বাড়াবে আমাদের নাগরিক সুবিধা।
নতুন নগরপিতার হাত ধরে এই শহরে শিল্প বিপ্লব আসুক ও রাজশাহী ফুলে ফলে সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক।

SALEH ANJUM

সব নাগরিক সুবিধা সুনিশ্চিত করতে পারবেন এমন ব্যক্তিকে চাই

ডা. মুহাম্মদ সালেহ আনজুম সুজন

ইন্টার্ন চিকিৎসক

রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

নির্বাচন মানেই একটি শহরে উৎসবের আমেজ। রাজশাহীও এর ব্যতিক্রম নয়। তবে ভোট মৌসুমের চিরায়ত যে রূপ, নানা প্রার্থীর নানা প্রতিশ্রুতি, আমরা নাগরিকরা চাই এর বাস্তবায়ন। এদিক থেকে যিনি সবচেয়ে যোগ্য, যাকে ভরসা করা যায়, যিনি রাজশাহী শহরকে একটি আধুনিক, বসবাসযোগ্য, উন্নত জীবনযাপনসহ সব নাগরিক সুবিধা সুনিশ্চিত করতে পারবেন- এমন প্রার্থীকে আমরা নগরপিতা হিসেবে চাই। রাজশাহীতে একটি অন্যতম সমস্যা হলো বেকারত্ব। শিক্ষানগরী হলেও উচ্চশিক্ষার পরবর্তী কর্মসংস্থানের সুযোগ এখানে খুবই সীমিত। আমরা চাই আমাদের পরবর্তী মেয়র যিনি হবেন, তিনি এটিকে গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করবেন। কেননা আমাদের কাছে মনে হয়েছে গত পাঁচ বছরে রাজশাহীতে দৃশ্যমান তেমন উন্নয়ন হয়নি। সুতরাং যিনি এসব নাগরিক সুবিধা নিশ্চিত করবেন, জনগণের পাশে থাকবেন- এমন মেয়রই আমরা বেছে নেব ইনশাল্লাহ।

RONY

মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেন এমন ব্যক্তিই চাই

দেবাশীষ দাস রনি
এমসি কলেজ
গণিত বিভাগ

আমাদের দেশে যেকোনো নির্বাচন উৎসবের মতো। এই উৎসবে প্রত্যাশার পাশাপাশি উত্তেজনাও থাকে অনেক। স্বচ্ছ ও অবাধ নির্বাচন সবাই প্রত্যাশা করেন। তবুও নির্বাচনকে ঘিরে তৈরি হয় সংশয়ের বেড়াজাল। অনেক সময় দেখা যায় প্রার্থী এবং তার সমর্থকরা বিরোধী প্রার্থীর সমালোচনা ও অপপ্রচারে মগ্ন থাকেন। আমি মনে করি, এটি না করে নিজেদের ভালো দিকগুলো প্রচার করলে সেটি আমাদের সবার জন্যই মঙ্গলের হবে। প্রার্থীরা জয়ের জন্য মরিয়া না হয়ে ভ্রাতৃত্ব, সম্প্রীতি ও সৌহার্দ্যপূর্ণ আচরণ প্রদর্শন করুক। আর ভোটাররাও যেন ভোট প্রদানের ক্ষেত্রে প্রত্যেক প্রার্থীর দোষ-গুণ বিবেচনা করে সর্বোত্তম ব্যক্তিকে ভোট দেন। বিজয়ী ব্যক্তিকে অবশ্যই হতে হবে সৎ, যোগ্য, নান্দনিক ও প্রগতিশীল। মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে ধারণ করেন এমন ব্যক্তিই নির্বাচিত হয়ে নগরীর উন্নয়নে নিজেকে নিয়োজিত করুক, এটিই প্রত্যাশা।

KABBO

কর্মসংস্থানের সুযোগ ও তরুণদের প্রতি দৃষ্টি দিতে হবে

উত্তম কাব্য
সম্মান (২য় বর্ষ), ইংরেজি বিভাগ
নর্থইস্ট ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ

এবারই প্রথম ভোট দিতে যাচ্ছি। জীবনের প্রথম ভোট দেব- এটা একদিকে যেমন নতুন অভিজ্ঞতা, অপরদিকে একটা অন্যরকম অনুভূতি কাজ করছে। কিন্তু কাকে ভোট দেব তা এখন পর্যন্ত ঠিক করে উঠতে পারলাম না। আমরা যারা নতুন প্রজন্ম আছি, যারা দেশ নিয়ে ভাবছি, যাদের ভেতরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা কাজ করছে, তারা ঠিকই ভোট দেওয়ার আগে ভাবব। একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে যোগ্য প্রার্থীকেই বেছে নেব। সিলেটের একজন বাসিন্দা হিসেবে সিলেটেই আমার ভোট। একজন তরুণ হিসেবে বলব, সিলেটের তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ কম। যেসব ছেলেমেয়ে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছে তাদের পড়াশোনার পাশাপাশি পার্টটাইম জবের তেমন কোনো সুযোগ সিলেটে নেই।

তরুণ-তরুণীরা যদি পড়াশোনার পাশাপাশি কিছু করতে পারত, তবে লাভ হতো আমাদের সিলেটেরই। কেননা বর্তমান যুগে এরাই একটি দেশের একটি শহরের সম্পদ। আগামীর নেতৃত্ব তরুণরাই দেবে। তাই বলতে চাই, আগামীতে নগর পিতা যে-ই আসুন তিনি তরুণদের প্রতি খেয়াল করবেন। তাদের কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেবেন- এটাই চাওয়া।

RAJIB

কমিউনিটি সার্ভিসের সঙ্গে তরুণদের যুক্ত করতে হবে
খুর্শিদ রাজীব
তৃতীয় বর্ষ, শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট
রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী বরেন্দ্র নগরী রাজশাহী। উত্তর বাংলার এই জনপদটি নানা দিক থেকে সম্ভাবনাময়। কিন্তু বিভিন্ন কারণে এর উন্নয়ন হচ্ছে না। রাজশাহীর উন্নয়নের জন্য যেমন বেশি বেশি রাষ্ট্রীয় বরাদ্দ প্রয়োজন, তেমনি এই বরাদ্দগুলো সঠিক জায়গায় ও সুষ্ঠুভাবে ব্যবহারের জন্য প্রয়োজন যোগ্য নেতৃত্ব। রাসিক মেয়রই এই নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা রাখেন। তার নেতৃত্বেই নগরীতে উন্নয়ন ও পরিবর্তন সম্ভব। আগামী ৩০ জুলাই রাজশাহী সিটি করপোরেশন নির্বাচনে হবু মেয়রকে নিয়ে তাই প্রত্যাশার পারদটাও বেশ উঁচু।
এক কথায় বলতে গেলে নগরপিতার কাছ থেকে আমার প্রতাশ্যা টেকসই উন্নয়ন। এই উন্নয়ন ছোট কোনো বিষয় নয়। এর সঙ্গে জড়িত আরো কিছু আনুষঙ্গিক বিষয়। এই মুহূর্তে রাজশাহীর জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন কর্মসংস্থান। এ অঞ্চলে বেকারত্ব কমানোর জন্য কর্মসংস্থানের খুবই অভাব। তাই দেখা যায়, যখন নগরীর বড় আয়ের উৎস রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকে, তখন আশপাশের এলাকাসহ গোটা নগরীতে একটা অর্থনৈতিক মন্দা লক্ষ করা যায়। নেশা, ছিনতাইও এই নগরীতে কম হয় না। এসব সমস্যাও কর্মসংস্থানের বাই-প্রোডাক্ট। রাজশাহী নগরী ও এর আশপাশে প্রচুর ফাঁকা জায়গা রয়েছে, যেগুলো কলকারখানা স্থাপনের জন্য উপযোগী এবং এ অঞ্চলে মানবসম্পদও প্রচুর রয়েছে। এসব সম্ভাবনা ও রিসোর্সগুলো কাজে লাগিয়ে রাজশাহীতেই কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা যায়। আসন্ন নির্বাচনে নির্বাচিত মেয়রের কাছে সবচেয়ে বেশি প্রত্যাশা, তিনি এসব সম্ভাবনা ও রিসোর্সের পূর্ণ ব্যবহার নিশ্চিত করবেন।
রাজশাহী নগরীতে চুরি, ছিনতাইসহ নৈতিক অবক্ষয় যেমন তরুণদের মধ্যেই বেশি, আবার এসব সমস্যা সমাধানে এই তরুণরাই মোক্ষম হাতিয়ার। এসব সমস্যা সমাধানে শুধু কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলেই হবে না, সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে তরুণদের বিভিন্ন কমিউনিটি সার্ভিসের সঙ্গে যুক্ত হয়ে কাজ করার সুযোগ দিতে হবে। কারণ আজকের তরুণরাই তো আগামীর কারিগর।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads