কুলাউড়ায় হুমকির মুখে ১৫ সেতু

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

পাউবোর অপরিকল্পিত ফানাই নদী খনন

কুলাউড়ায় হুমকির মুখে ১৫ সেতু

  • জিয়াউল হক জিয়া, কুলাউড়া
  • প্রকাশিত ৫ এপ্রিল, ২০২১

উপজেলার ফানাই নদীতে পানি উন্নয়ন বোর্ডের অপরিকল্পিত খনন কাজের ফলে রাউৎগাঁও, কর্মধা, ব্রাহ্মণবাজার, কাদিপুর ও কুলাউড়া সদরসহ এই পাঁচটি ইউনিয়নে ১৫টি সেতু হুমকির মুখে রয়েছে। যে কোনো সময় সেতুগুলো ভেঙে বড় ধরনের দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। ইতোমধ্যে ৪-৫টি সেতু দেবে গেছে।

স্থ্থানীয়রা জানান, ফানাই নদীর ওপর রাউৎগাঁও ইউনিয়নের কবিরাজি গুতগুতি রাস্তার ওপর ধলামিয়ার বাড়ির পাশের সেতু, চৌধুরীবাজার কর্মধা মুকুন্দপুর রাস্তায় খাতুন বিবির বাড়ির পাশের সেতু। কর্মধা ইউনিয়নের হাসিমপুর রাঙ্গিছড়া রাস্তায় গেন্দুর বাড়ির পাশে ব্রিজ দেবে গেছে। এছাড়া পূর্ব বাবনিয়া থেকে রাঙ্গিছড়ার রাস্তায় ব্রিজ এবং হুসনাবাদ হয়ে কর্মধা ইউনিয়ন পরিষদের রাস্তার ওপর ব্রিজ যে কোনো সময় ভেঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে।

মুকুন্দপুর পালগ্রাম রাস্তায় কুরফান উল্লাহ বাড়ির পাশের সেতু, কুলাউড়া রবিরবাজার সড়কে বেইলি সেতু, ভাটুত গ্রামে রেললাইনের ওপর রেলসেতু, ভবানীপুর নর্তন রাস্তায় কাজল চৌধুরীর বাড়ির পাশে নদীর ওপর সেতু খুবই ঝুঁকিপূর্ণ রয়েছে। সেতুগুলোর মধ্যখানোর পিলার দেবে যাচ্ছে। শূন্যে রয়েছে পিলারগুলো। ভবানীপুর হেলাপুর রাস্তার মাসুক মিয়ার বাড়ির পাশে নদীর ওপর গত বছর ৩৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেতুটি নদী খননের ফলে নদীর মধ্যখানে পড়ে রয়েছে। ফলে যাতায়াতের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ব্রাহ্মণবাজার ইউনিয়নের শ্রীরামপুর গ্রামের পাটনী বাড়ির পাশে ফুটসেতু, কাদিপুর ইউনিয়নের লক্ষ্মীপুর গ্রামে মনোরঞ্জনের বাড়ির পাশে নদীর ওপর সেতু, মিনার মহল দাড়ার মুখের সেতু। কিন্তু সাম্প্রতি সরকারিভাবে ফানাই নদীর খনন কাজ শুরু হলে ঠিকাদারের গাফলতির কারণে এই তিনটি সেতু মারাত্মক ঝুঁকির মুখে পড়ে। শ্রমিকরা মাটি কাটার মেশিন দিয়ে অপরিকল্পিতভাবে ফানাই নদী খনন করতে গিয়ে নদীর মধ্যখানে সেতুর পিলারের নিচ থেকে মাটি খনন করায় পিলারের নিচ থেকে মাটি সরে যায়। সেতুর পিলারের উভয় দিক থেকে প্রায় তিন ফুট মাটি শূন্য হয়ে পড়ে। যার ফলে সেতুর মধ্যখান দেবে গিয়ে বাঁকা হয়ে বড় ফাটল দেখা দিয়েছে।

স্থানীয় লোকজনের দাবি, এই সেতুগুলো নতুনভাবে নির্মাণ খুবই জরুরি। স্থানীয় ইউপি সদস্য মুহিব আহমেদ জানান, ফানাই নদী খনন করায় সেতুর পিলারের নিচের মাটি সরে গিয়ে এমন অবস্থা হয়েছে।

বাবনিয়া গ্রামের বাসিন্দা সাবেক শিক্ষক আব্দুল মালিক জানান, ফানাই নদী সম্পূর্ণভাবে অপরিকল্পিতভাবে খনন করায় সেতুগুলো এ অবস্থা হয়েছে। যে কোনো সময় সেতুগুলো ভেঙে পড়তে পারে। আর এই সেতুগুলো ভেঙে পড়লে স্থানীয় লোকজনের যাতায়াতের বিকল্প কোনো রাস্তাও নেই। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে ফানাই নদী খনন শুরুর আগে সঠিকভাবে খননের জন্য কয়েকবার উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রকৌশলী বরাবরে আবেদন করা হয়েছিল। কিন্তু তা উপেক্ষিত থেকে যায়।

রাউৎগাঁও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জলিল জামাল বলেন, বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অব্যহিত করা হয়েছে। সেতুগুলো প্রায় ৬০ ফুট লম্বা। প্রতিদিন এসব সেতু দিয়ে ভারী যানবাহনসহ স্থানীয় লোকজন যাতায়াত করে থাকেন।

কর্মধা ইউপি চেয়ারম্যান এম আতিকুর রহমান আতিক বলেন, রাঙ্গীছড়া থেকে হাসিমপুর রোডে অবস্থিত একটি সেতু অনেক পুরাতন। এরমধ্যে ফানাই নদী খননের সময় সেতুর নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় বর্তমানে আরো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। তিনি সেতুগুলোর দ্রুত সংস্কার করার দাবি জানান।

মৌলভীবাজার পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আখতারুজ্জামান জানান, সেতুগুলো নদী খননের কারণে নাকি সেতু নির্মাণের সময় কোনো ত্রুটির কারণে দেবে গেছে-তা এখন বলা যাচ্ছে না। সরেজমিনে খোঁজ নিয়ে বিষয়টি দেখছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads