মতলুব হোসেন, জয়পুরহাট
জয়পুরহাটে কলা চাষ করে অন্যান্য ফসলের তুলনায় বেশ লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। ধান, পাট, সবজির তুলনায় কলা চাষ বেশি লাভজনক হওয়ায় জেলায় প্রতি বছরই বাড়ছে কলার চাষ। এখানকার প্রধান অর্থকরি ফসল হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে পুষ্টিগুণসমৃদ্ধ কলা। জেলার পাঁচটি উপজেলার মধ্যে জামালগঞ্জ, জামালপুর ও ভাদসা ইউনিয়নে অনেক পরিবার কেবল কলা চাষ করেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। বর্তমানে জয়পুরহাট জেলার প্রায় ১০ হাজার পরিবার কলা চাষের সঙ্গে জড়িত। অন্যান্য ফসলের তুলনায় অধিক লাভজনক হওয়ায় জেলার কৃষকরা দিন দিন কলা চাষের দিকে ঝুঁকছে এবং সেই সঙ্গে প্রতিবছরই বাড়ছে কলার চাষ। চারা গাছ লাগানোর অল্পদিনেই ফল পাওয়া যায়। সাধারণত বৈশাখ মাসে কলার চারা রোপণ করলে অগ্রহায়ণ থেকে কলা পাওয়া শুরু হয়। যেসব জমিতে বর্ষার পানি সাধারণত এক সপ্তাহের বেশি থাকে না, সেসব জমিতে কলার চাষ ভালো হয়।
কৃষকরা জানান, এক বিঘা জমিতে কলার জাতভেদে তিনশ থেকে সাড়ে তিনশ কলার চারা রোপণ করা হয়ে থাকে। যত্নসহকারে কলা চাষ করলে একটি গাছ থেকে দুই থেকে আড়াই মণ কলা পাওয়া যায়। এক বিঘা জমিতে কলা চাষ করতে ১৫-২০ হাজার টাকা খরচ পড়লেও প্রতিবিঘা জমি থেকে কলা বিক্রি হয় ৮০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা, যা অন্য কোনো ফসলে সম্ভব নয়। জামালগঞ্জ ও ভাদসা এলাকার বেশ কয়েকজন কলাচাষির সাথে আলাপকালে তারা জানান, অন্য যে কোনো ফসলের চেয়ে কলা চাষ বেশি লাভজনক। বিশেষ করে যমুনা সেতু চালু হওয়ার পর জেলার জামালগঞ্জ ও ভাদসা ইউপির দুর্গাদহ বাজারে কলার বিশাল বাজার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এখন কলার চাষও বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। এ ব্যাপারে জয়পুরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, জেলায় এবার ৮০০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ হয়েছে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার টন। সদর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত কৃষিবিদ সেরাজুল ইসলাম বলেন, কলা চাষ অন্যান্য ফসলের চেয়ে বেশি লাভজনক।