প্রাণ সংহারক নভেল করোনাভাইরাস মোকাবেলায় সার্ক তহবিল গঠনের প্রস্তাব দিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কভিড-১৯ রোগ বৈশ্বিক মহামারী রূপ ধারণ করার প্রেক্ষাপটে রোববার দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার (সার্ক) নেতাদের ভিডিও কনফারেন্সে এই প্রস্তাব দেন তিনি।
ভারতের প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগে আয়োজিত এই ভিডিও কনফারেন্সে যোগ দেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, নেপালের প্রধানমন্ত্রী কেপি শর্মা ওলি, ভুটানের প্রধানমন্ত্রী শেরিং তোবগে, মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহ, শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোটাবে রাজাপাকসে, আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট আশরাফ গনি এবং পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের স্বাস্থ্য উপদেষ্টা জাফর মির্জা।
দক্ষিণ এশিয়ার নেতাদের একজোট হওয়ার দিনে ১৪১টি দেশ ও অঞ্চলে করোনাভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা দেড় লাখ ছাড়িয়ে যায়, এতে মৃতের সংখ্যাও বেড়ে হয়েছে ৬ হাজার ছাড়িয়েছে। বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক ছড়ানো এই রোগ মোকাবেলায় সম্মিলিত উদ্যোগ গ্রহণের উপর জোর দেন সার্কে দেশগুলোর সরকার প্রধানরা। নিজ নিজ দেশে নেওয়া কাজের অভিজ্ঞতাও বিনিময় করেন তারা।
সার্ক নেতারা এক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বিনিময়ের উপর জোর দেন। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মোদী চীন থেকে প্রতিবেশী বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের ফিরিয়ে আনার কথাও বলেন।
মোদী ‘কভিড-১৯ ইমারজেন্সি ফান্ড’ গঠনের প্রস্তাব দিয়ে বলেন, প্রাথমিকভাবে ভারত ১ কোটি ডলার দিয়ে এই তহবিলের শুরুটা করতে পারে। এই তহবিলের অর্থ ব্যয় সমন্বয়ের কাজটি ভারতের দূতাবাসগুলো করতে পারে বলে প্রস্তাব দেন মোদী। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলোর স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণও দিতে পারে ভারত। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে অর্থনীতিতে করোনাভাইরাসের নেতিবাচক প্রভাবের বিষয়টি তুলে ধরে জরুরি এই পরিস্থিতিতে সার্ক নেতাদের দ্রুত উপায় খোঁজার তাগিদ দেন।
আফগানিস্তানের প্রেসিডেন্ট গনি সাংহাই করপোরেশনে গুরুত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে ভারতের থাকার বিষয়টি তুলে ধরে পরিস্থিতি মোকাবেলায় চীনের অভিজ্ঞতা গ্রহণের পরামর্শ দেন। টেলিমেডিসিন সেবার একটি অভিন্ন রূপরেখা প্রণয়নের জন্য সার্ক নেতাদের প্রতি আহ্বান জানান আফগান প্রেসিডেন্ট। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী সার্ক দেশগুলোর স্বাস্থ্যমন্ত্রী ও সচিবদের নিয়ে এমন একটি ভিডিও কনফারেন্সের প্রস্তাব দেন, যাতে সবাই অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারেন।
জনস্বাস্থ্য ঝুঁকি প্রতিরোধে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো যেন একসঙ্গে কাজ করতে পারে, সেজন্য একটি ইনস্টিটিউট গড়ে তোলার প্রস্তাব দেন শেখ হাসিনা।
তিনি বলেন, ‘যেন ভবিষ্যতে কোনো সমস্যা দেখা দিলে আমরা একসাথে কাজ করতে পারি। নিজেদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে পারি। বাংলাদেশ এমন একটি প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলতে পারে, যদি আপনারা একমত হন।‘একটি ফোরাম গঠন করা যেতে পারে। আমরা আমাদের বিশেষজ্ঞদের শেয়ার করতে প্রস্তুত আছি। লজিস্টিক সাপোর্ট দেব, যদি প্রয়োজন হয়।’
কভিড-১৯ রোগ প্রতিরোধে বাংলাদেশের নেওয়া পদক্ষেপ অন্য রাষ্ট্রনেতাদের কাছে তুলে ধরেন শেখ হাসিনা।