এটা ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে পড়ার মতো

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর

সংরক্ষিত ছবি

রাজনীতি

ফখরুল বললেন

এটা ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুনে পড়ার মতো

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১ ডিসেম্বর, ২০১৮

বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, তার দলের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে নারায়ণগঞ্জে পুলিশ সুপার পদে যে রদবদল করা হচ্ছে, তাতে তাদের জন্য আরো সমস্যা হচ্ছে। এটা অনেকটা ফুটন্ত কড়াই থেকে জ্বলন্ত উনুড়ে পড়ার মতো অবস্থা। গতকাল শুক্রবার বিকালে রাজধানীর গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন। মির্জা ফখরুল বললেন, নির্বাচন কমিশন বিএনপির অভিযোগের প্রতি নজর দেয়নি। প্রতিষ্ঠানটি ‘প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে’ সবকিছু করছে। ইসি এখনো সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারেনি। অথচ নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না।

এখনো নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হয়নি দাবি করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ইসি এখনো একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি করতে পারেনি। আসন্ন নির্বাচনে ইসি সব দলের জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড তৈরি করার আশ্বাস দিলেও তার বাস্তবায়ন করতে পারেনি। গণভবনে অনুষ্ঠিত সংলাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের রাজনৈতিক কারণে গ্রেফতার করা হবে না বললেও তিনি তার সেই অঙ্গীকার রক্ষা করেননি। তফসিলের পরও সারা দেশে বিএনপিসহ বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। এমনকি বিএনপির মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গ্রেফতার করা হচ্ছে। 

সরকারকে উদ্দেশ করে ফখরুল বলেন, বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে গায়েবি মামলা দেওয়া বন্ধ করুন, গ্রেফতার বন্ধ করুন, অন্যথায় পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য সরকারকে সব দায়দায়িত্ব বহন করতে হবে।

তিনি বলেন, সরকারের নির্দেশে বিরোধী দলের নেতাকর্মীদের গ্রেফতার অব্যাহত রয়েছে। আর ইসি সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে। নির্বাচন গ্রহণযোগ্য করতে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছে না ইসি।

আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, এত কথা বলে কী লাভ? সুষ্ঠুভাবে নির্বাচনটা দিন, দেখেন কে কতটা আসনে জেতে? ভোট সুষ্ঠু হলে আওয়ামী লীগ ৩০টির বেশি আসন পাবে না।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ওবায়দুল কাদেরের কোনো কথার জবাব দিতে চান না। কারণ তিনি সব সময় অবান্তর কথাবার্তা বলেন।

‘জামায়াতে ইসলামীকে কয়টি আসন দেওয়া হয়েছে?’— সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, জামায়াতকে কোনো আসন দেওয়া হয়নি। সবখানে ধানের শীষের প্রার্থী দেওয়া হয়েছে। বলতে পারেন, জামায়াত বিএনপি হয়ে গেছে।

তিনি বলেন, দুর্ভাগ্যজনকভাবে বিচার বিভাগকে সরকার তাদের পরিকল্পনা বাস্তবায়নের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে। বিশেষ করে নিম্ন আদালত আইন মন্ত্রণলায়ের অধীনে সরকার এই নির্যাতন সীমাহীনভাবে চালাচ্ছে। এটা অবিলম্বে বন্ধ করতে হবে। 

সংবাদ সম্মেলনে দলের নেতাকর্মীদের নির্যাতনের চিত্র তুলে ধরে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ঢাকা-৭ নির্বাচনী এলাকার প্রার্থী ও সাবেক কাউন্সিলর মোশাররফ হোসেন খোকনকে গত ২৮ নভেম্বর নমিনেশন পেপার জমা দিয়ে ফেরার পথে সাদা পোশাকের গোয়েন্দারা গ্রেফতার করার পর তার কোনো সন্ধান ছিল না। ২৯ তারিখে ফোন পেয়ে মিন্টু রোডে ডিবি অফিসে তাকে পাওয়া যায়। গতকালই তাকে গায়েবি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ১০ দিনের রিমান্ড চাইলে আদালত তাকে দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বর্তমানে তাকে লালবাগ থানায় রাখা হয়েছে। তাকে কারো সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, গত বুধবার রাতে আদাবর  থানা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক কামালকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে যাওয়ার পর থেকে তার কোনো সন্ধান নেই। এ ছাড়া সরকারের সাবেক উপসচিব নেয়ামত উল্লাহ ভুঁইয়াকে র্যাব কথা বলার জন্য ডেকে নেওয়ার পর দুই দিন নিখোঁজ ছিলেন। এরপর গত বৃহস্পতিবার তার বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা দায়ের করে তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ, মির্জা আব্বাস, ড. আবদুল মঈন খান, নজরুল ইসলাম খান, আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রমুখ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads