সারা দেশ

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে কমলা চাষে সম্ভাবনার হাতছানি

  • অনলাইন ডেস্ক
  • প্রকাশিত ২৪ নভেম্বর, ২০২৩

রাশিদুল ইসলাম রাশেদ, কুড়িগ্রাম:  

উত্তরের জেলা কুড়িগ্রাম। বেকারত্ব এখানকার যুবকদের অভিশাপ। শিক্ষিত বেকার যুবকরা কাজের সন্ধানে ছুঁটে যায় রাজধানী উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে কমলা চাষে সম্ভাবনার হাতছানি সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। এবার সেই বেকারত্বের গ্লানি ঘুচতে চায়না ঝুঁড়ি জাতের কমলা চাষ করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন আবু রায়হান ফারুক।  তাঁর কমলা বাগান সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে  অগণিত বেকারদের।

কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার বেলগাছা ইউনিয়নের কাজী হাবিবুর রহমানের ছেলে আবু রায়হান ফারুক। তার বর্তমানে দুই বিঘা জমিতে রয়েছে শতাধিক কমলা গাছ। গাছে গাছে ঝুঁলছে থোকায় থোকায় কমলা। চারা লাগানোর মাত্র দেড় বছরের মাথায় গাছে কমলা আসতে শুরু করে। বর্তমান তার বাগানের বয়স ৩০ মাস। এ বছর তিনি বাণিজ্যিকভাবে চাষাবাদ শুরু করছেন। মাত্র সপ্তাহ খানেক পর শুরু হবে পরিপক্ক কমলা সংগ্রহ। এ বছর বাগান থেকে ১৫ থেকে ২০ মণ কমলা বিক্রি করার আশা করছেন ফারুকের। যা বর্তমান কমলার বাজার মূল্যে প্রায় ৮০ হাজার টাকা। এতে উৎপাদন ব্যয় বাদে দ্বিগুণ।

সরেজমিনে দেখা যায়, আবু রায়হান ফারুক পড়াশোনা শেষ করে আত্মকর্মসংস্থানের জন্য কৃষিখাত বেচে নেন। বাবার জমিতে শুরু করেন সমন্বিত ফলের চাষ। প্রায় ৬ একর জমিতে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানান জাতের ফলের গাছ। মাল্টা, আঙুর ও আম চাষের পাশাপাশি কমলা চাষের উদ্যোগ নেন।প্রথমে বগুড়া শহর থেকে একটি চায়না ঝুড়ি কমলা জাতের গাছ সংগ্রহ করেন তিনি।একটি গাছ থেকে কলম পদ্ধতি ব্যবহার করে দুই বিঘা জমিতে ১০০ কমলা গাছ রোপণ করেন। কলমকৃত গাছের চারা থেকে দেড় বছরের মধ্যে কমলা পেতে শুরু করেন।বর্তমানে তিনি বাণিজ্যিকভাবে কমলা চাষে সফলতা পেয়েছেন। কমলা বাগানে বাড়তি কোন ঝামেলা নেই। সময়মত জৈব সার, কীটনাশক ও ছত্রাক নাশক স্প্রে ব্যবহার করে কমলা গাছ থেকে ভালো ফলন পাওয়া যায়।

কমলা বাগান দেখতে আসা মাইদুল ইসলাম বলেন, 'ফারুক ছোট বেলা থেকেই কৃষি কাজের প্রতি দুর্বল। ফারুকের কমলা বাগান দেখে খুবই ভালো লাগে। বেকার যুবকরা তাঁর মত সবাই উদ্যোগী হলে বেকারত্ব নিরসনের পাশাপাশি দেশে কমলার চাহিদা পূরণ হবে। সরকারের উচিত এমন উদ্যোক্তাদের  সুদ মুক্ত ঋণ দিয়ে উৎসাহ দেয়া।'

উদ্যোক্তা আবু রায়হান ফারুক বলেন, 'আমাদের দেশের মানুষের কমলার চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন দেশ থেকে আমদানি করতে হয়। যদি দেশের মধ্যে কমলার বাণিজ্যিক চাষ করা যায় তাহলে চাহিদা মেটানোর পাশাপাশি বাইরের দেশে রপ্তানি করা সম্ভব হবে। পড়ালেখা করে চাকরির পিছনে না ছুটে পৈত্রিক জমিতে আমি কৃষিতে আত্মকর্মসংস্থানের পথ বেচে নিয়েছি। কমলা চাষের পাশাপাশি বাগানে বিভিন্ন রকমের ফলের গাছ আছে। তবে কমলার বাজার চাহিদা ভালো থাকায় কমলা চাষে আগ্রহ তৈরি হয়। আমিনপ্রথম পর্যায় পরীক্ষামূলক দুই বিঘা জমিতে চায়না ঝুড়ি কমলা জাতের শতাধিক কমলা গাছ লাগাই। এটি মিষ্টি জাতের কমলা এবং অনেক অনেক সুস্বাদু। বর্তমান বাগানের বয়স আড়াই বছর। শুরু থেকে এ পর্যন্ত ২০ হাজার টাকা খরচ করেছি। আশা করছি এ বছর কমলা বিক্রি করে দ্বিগুণ লাভ হবে।

কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত বলেন, 'কমলা চাষ এখন জেলায় এক নতুন সম্ভাবনার ক্ষেত্র তৈরি করেছে। কমলা চাষের এখন পর্যন্ত কোন লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয় নাই। তবে ফারুকের কমলা বাগানে কৃষি বিভাগের সব ধরনের সহযোগিতা আছে এবং  আগামীতেও থাকবে। আমরা ফারুকের মত উদ্যোক্তা খুঁজছি যারা কমলা চাষে বিপ্লব ঘাটতে সহায়ক ভূমিকা পালন করবে।'

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads