ইসলামে কন্যাশিশুর গুরুত্ব

কন্যাশিশুকে তার প্রাপ্য অধিকার দিয়ে সম্মানের আসনে বসিয়েছে ইসলাম

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ইসলামে কন্যাশিশুর গুরুত্ব

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

সেপ্টেম্বর মাসের ৩০ তারিখ বিশ্ব কন্যাশিশু দিবস হিসেবে পালিত হয়। জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্রগুলো প্রতি বছর এ দিবসটি পালন করে থাকে। কন্যাশিশুদের শিক্ষার অধিকার, পরিপুষ্টি, আইনি সহায়তা ও ন্যায় অধিকার, চিকিৎসা সুবিধা ও বৈষম্য থেকে সুরক্ষা, নারীর বিরুদ্ধে হিংসা ও জোর করে বাল্যবিয়ে বন্ধে কার্যকর ভূমিকা পালনের উদ্দেশ্যেই মূলত এই দিবসটি পালনের সূচনা হয়ে থাকে। ইসলাম কন্যাশিশুকে দিয়েছে তার প্রাপ্য মর্যাদা ও অধিকার। দিয়েছে সব ভালো কাজের অনুপ্রেরণা। এ মর্মে পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘মুমিনদের মধ্য থেকে যে ভালো কাজ করবে,  হোক সে পুরুষ কিংবা নারী, আমি তাকে অবশ্যই পবিত্র জীবন দান করব এবং তাদের কর্মের শ্রেষ্ঠ পুরস্কার দেবো।’ (সুরা নাহল : ৯৭)

কন্যাশিশুকে তার প্রাপ্য অধিকার দিয়ে সম্মানের আসনে বসিয়েছে ইসলাম। জাহিলিয়াতের ঘোর অন্ধকার অমানিশায় কন্যাশিশুরা যখন অধিকার হারিয়ে চরম অবহেলা আর নির্যাতন নিপীড়নের শিকার হচ্ছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে ইসলাম এসে তাদের রক্ষা করল যাবতীয় অত্যাচারের দাবানল থেকে। শুধু তা-ই নয়, বরং তৎকালীন আরবে যখন কন্যাশিশুকে জীবিত কবর দেওয়া হতো, তখন পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহপাক ঘোষণা দিলেন- ‘জীবিত কবর দেওয়া মেয়েকে জিজ্ঞেস করা হবে কী অপরাধে তাকে হত্যা করা হয়েছিল।’ (সুরা তাকভির, আয়াত ৮-৯)

ইসলাম কেবল আরবের নিষ্ঠুর ও জঘন্য প্রথাটি নির্মূল করেনি, বরং একই সঙ্গে মেয়ের জন্ম যে একটি দুর্ঘটনা এবং অনিচ্ছা সত্ত্বেও একে গ্রহণ করে নিতে হয়-এ ধরনের চিন্তা ও ধারণারও চিরতরে অবসান ঘটিয়েছে। বিপরীতে ইসলাম শিক্ষা দিয়েছে মেয়েদের লালন-পালন করা, তাদের উত্তম শিক্ষাদীক্ষা দেওয়া এবং ঘরসংসারের কাজে পারদর্শী করে গড়ে তোলা অনেক বড় নেকির কাজ। রসুলুল্লাহ (সা.) এ বিষয়ে বেশকিছু হাদিস বর্ণনা করেছেন। একটি হাদিসে এসেছে, মেয়েদের জন্মের মাধ্যমে যে ব্যক্তিকে পরীক্ষার সম্মুখীন করা হয়, তারপর সে তাদের সঙ্গে সদ্ব্যবহার করে, তার জন্য সে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার কারণে পরিণত হবে। (বুখারি ও মুসলিম)

অন্য একটি হাদিসে এসেছে, যে ব্যক্তি তিন কন্যা বা বোনের লালন-পালন করে, তাদের ভালো আদব-কায়দা শেখায় এবং তাদের সঙ্গে স্নেহপূর্ণ ব্যবহার করে, এমনকি শেষ পর্যন্ত তারা তার সাহায্যের মুখাপেক্ষী না থাকে, তার জন্য আল্লাহ জান্নাত ওয়াজিব করে দেবেন। এক ব্যক্তি জিজ্ঞেস করেন, আল্লাহর রসুল! আর যদি দুজন হয়? জবাব দেন, দুজনকে এভাবে লালন-পালন করলে তা-ই হবে। হাদিসের বর্ণনাকারী ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, যদি লোকেরা সে সময় একজনের লালন-পালন সম্পর্কে জিজ্ঞেস করত, তাহলে তিনি একজনের সম্পর্কেও এই একই জবাব দিতেন (শরহুস সুন্নাহ)।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads