চীনের উহানের পাশের শহর ইচানে আটকে পড়া বাংলাদেশি ১৭১ শিক্ষার্থীকে দেশে ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। তবে করোনাভাইরাস মোকাবেলায় শহরটি অবরুদ্ধ রাখায় প্রক্রিয়াটি বেশ কঠিন বলে জানিয়েছেন দেশটিতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মাহবুব-উজ-জামান। গতকাল শনিবার এক ভিডিও বার্তায় এ তথ্য জানান রাষ্ট্রদূত মাহবুব-উজ-জামান।
রাষ্ট্রদূত বলেন, ‘চীনের ইচানে ১৭১ জন বাংলাদেশি শিক্ষার্থী আছেন। উহান সিটি থেকে ইচান যেতে বাসে চার ঘণ্টা সময় লাগে। উহান, ইচান এগুলো এখন পুরোপুরি অবরুদ্ধ অবস্থায় আছে। সেখান থেকে তাদের সরিয়ে আনতে দূতাবাসের তরফ থেকে সব রকমের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের ফেরাতে চীন সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন বলেও জানান রাষ্ট্রদূত।
করোনাভাইরাস মোকাবেলায় দূতাবাসের ভূমিকা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত বলেন, আমরা অত্যন্ত সাফলভাবে লোকাল কো-অর্ডিনেশন শেষ করেছি। যোগাযোগের ব্যবস্থা করেছি। ২২টি সেন্টারে লোকাল কো-অর্ডিনেটর নিয়োগ করেছি, ফোকাল পয়েন্ট নিয়োগ করেছি। করোনাভাইরাস মোকাবেলায় আমরা চীন ও বাংলাদেশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে অবিচ্ছিন্ন যোগাযোগ রাখছি। এটি একটি যৌথ পরামর্শমূলক প্রক্রিয়া এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এবং এজেন্সিগুলোর সঙ্গে সমন্বয় প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের নাগরিকদের সুরক্ষা, কল্যাণ এবং সুরক্ষা নিশ্চিত করতেই দূতাবাস কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
তিনি আরো বলেন, আরেকটা চ্যালেঞ্জ ছিল কিছু পাসপোর্ট ইমিগ্রেশন অথরিটির কাছে জমা হচ্ছিল। প্রায় ৩১টি। সেটাও আমরা ছুটির দিনে ফোন করে ২৫টি মতো পাসপোর্ট উদ্ধার করেছি। এবং আল্লাহর রহমতে ৩১২ জনের মতো তারা যেতে পেরেছে। এ ছাড়া তাদের ফ্লাইট না যাওয়া পর্যন্ত সব ধরনের সাপোর্ট আমরা দিয়েছি।
চীনে করোনাভাইরাস মহামারী আকারে ছড়িয়ে পড়েছে। গতকাল পর্যন্ত এই ভাইরাসে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে কমপক্ষে ৭২৪ জন। এ ছাড়া বিশ্বব্যাপী প্রায় সাড়ে ৩৪ হাজার মানুষের মধ্যে এই ভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়েছে।
এ অবস্থায় ইতোমধ্যে চীনের উহান শহর থেকে ৩১২ জন বাংলাদেশিকে সম্প্রতি দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ওই শহরের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে লেখাপড়া করা বা গবেষণায় থাকা এই ৩১২ বাংলাদেশিকে গত ১ ফেব্রুয়ারি বিশেষ বিমানে করে দেশে ফিরিয়ে আনে সরকার। সংক্রমণ রোধে তাদেরকে ১৪ দিন আলাদা করে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।
উহানের পাশের শহর ইচানে বাংলাদেশি ১৭ শিক্ষার্থী করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের মধ্যে খাদ্যসহ নানা সংকটের কারণে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন। চায়না থ্রি গর্জেস ইউনিভার্সিটিতে পড়ুয়া কয়েকজন শিক্ষার্থীর সাথে আলাপকালে তারা এই আকুতি জানান। অবরুদ্ধ দশায় থাকা শিক্ষার্থীরা বলছেন, সব মিডিয়া উহান নিয়ে যতটা বলছে আশপাশের শহরে একই পরিস্থিতির মধ্যে থাকা অন্য শহরগুলোর কথা ততটা বলছে না।
তাদের মধ্যে মাদারীপুরের ৩ জন শিক্ষার্থীও রয়েছে। তাদের একজন হচ্ছেন শিবচরের আশিক হাওলাদার আবির। তিনি আটকেপড়া শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে সরকারের কাছে জোরালো আবেদন জানিয়েছেন।