ফিচার

আনই রাজার ভিটা ও সন্তোষপুর

  • প্রকাশিত ১৫ জুলাই, ২০১৮

মো. আবদুল হালিম

চারদিকেই সবুজের হাতছানি নিয়ে এক অপার পর্যটন সম্ভাবনাময় এলাকা ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া। এই উপজেলাতেই শাল-গজারি, রাবার ও অন্যান্য বৃক্ষরাজিসহ বন্যপ্রাণীর অপরূপ সৌন্দর্যের লীলাভূমি সন্তোষপুর গ্রাম। এই উপজেলাতেই আছে মনোমুগ্ধকর আনই নদী আর দেশের বৃহৎ বদ্ধ জলাশয় বড়বিলা। রাঙ্গামাটিয়া ইউনিয়নে অবস্থিত বড় বিলাতে অনেক কুড়ি আছে। এর মধ্যে প্রায় ৩০০ বর্গফুট এলাকা জুড়ে রহস্যঘেরা এক স্থানের নাম নবাইকুড়ি। বড়বিলার পাশেই রয়েছে আনই রাজার ভিটা। বহু আগে এ ভিটায় বাস করতেন আনই নামে এক রাজা। রূপকথা নয়, বাস্তবেই নাকি সেখানে ছিল জাঁকজমকপূর্ণ এক রাজপ্রাসাদ। নিরাপত্তার জন্য প্রাসাদের চারদিকে খনন করা হয়েছিল একটি বিশাল আকৃতির খাল। সে খালই একসময় আনই রাজার ধ্বংসের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ঝড় তুফানে রাজপ্রাসাদ ভেঙে পড়ে। লোহার প্রাসাদ তৈরি করেও শেষ রক্ষা হয়নি। এক ঝড়ের রাতে আনই রাজার মায়ের রূপ ধারণ করে অলৌকিক শক্তি ‘তুফান’ লোহার প্রাসাদ উড়িয়ে সেই খালেই তলিয়ে দেয়। উপজেলার কেশরগঞ্জ বাজার থেকে প্রায় ৮ কিলোমিটার পশ্চিমে আঁকাবাঁকা গ্রামীণ মেঠোপথ পেরোলে চোখে পড়বে নয়নাভিরাম পাহাড়ি এলাকা সন্তোষপুর। গ্রামটি ঘিরে আছে বনশিল্প উন্নয়ন করপোরেশনের নিপুণ হাতে তৈরি রাবার বাগান। শাল-গজারির বন, বন্যপ্রাণী, পাখিদের কিচিরমিচির শব্দে অন্য এক আবহ সেখানে। দর্শনার্থীদের কাছেও গ্রামটি দারুণ উপভোগ্য। বনের মাঝে বিরল পাঁচ প্রজাতির পাঁচ শতাধিক বানরের বাস। বেশ কয়েকটি উপদলে বিভক্ত এসব বানর। প্রতিটি দলেই রয়েছে শতাধিক বানর, আর এক দলপতি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে সহজ স্বাভাবিক সম্পর্কের জন্য ইতোমধ্যে ‘সামাজিক বানর’ তকমা পেয়েছে এরা। দর্শনার্থীদের সঙ্গে দারুণ ভাব জমাতে পারে বানরগুলো। শিশুরা দুষ্টুমি করলেও কামড় কিংবা আঁচড় কাটে না। ফুলবাড়িয়া সদর থেকে ১৯ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে নাওগাঁও ইউনিয়নে সন্তোষপুর রাবার বাগান ও বন বিট। বাস, সিএনজি কিংবা অটোরিকশায় চড়েও সেখানে যাওয়া যায়।

লেখক : ফুলবাড়িয়া (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads