ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলায় চলতি মৌসুমে বিস্তৃর্ণ এলাকা জুড়ে সরিষার আবাদ করা হয়েছে। সরিষার হলুদ ফুলে যেন রাঙ্গিয়ে দিয়েছে দিগন্ত জোড়া মাঠ। যতদুর চোখ যায় কেবল হলুদ আর হলুদ চোখে পড়ে। চারদিকে সরিষার ক্ষেত যেন বাতাসে দুলছে। হলুদের সমারোহে সজ্জিত সরিষার প্রতিটি ফুলে দুলছে কৃষকের রঙ্গিন স্বপ্ন। সবুজ শ্যামল প্রকৃতি ও ষড় ঋতুর এই দেশে ঋতু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বদলে দিয়েছে ফসলের মাঠের চিত্রও। সেই সাথে সরিষা ফুলের নয়নাভিরাম দৃশ্য পাল্টে দিয়েছে গ্রামের দৃশ্য। সরিষার ব্যাপক ফলনে গ্রামীন অর্থনীতিতে এক সম্ভাবনার হাতছানি দিচ্ছে। এ মৌসূমে সরিষার ভালো ফলনের সম্ভাবনা হওয়ায় স্থানীয় কৃষকদের মুখে যেন হাসির ঝিলিক ফুটে উঠছে।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে পৌর শহরসহ ৫টি ইউনিয়নে প্রায় ৫০০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদের লক্ষ্য মাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এ মৌসুমে অভাবনীয় সাফল্যের আশায় স্থানীয় কৃষকরা বুকবেঁধে মাঠের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।
সরেজমিনে পৌর শহরসহ উপজেলার দক্ষিণ ইউনিয়ন,মোগড়া, মনিয়ন্দ ও ধরখার ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে গিয়ে দেখা যায়, বিস্তৃর্ণএলাকাজুড়ে সরিষা ক্ষেত হলুদ ফুলে একাকার হয়ে আছে। প্রতি বছর সরিষার ফলন ভাল হওয়ায় বাড়ছে জমির পরিমানও।
এদিকে সরিষার ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করতে ব্যস্ত মৌ মাছিরা। মৌ মৌ শব্দে পুরো মাঠ মুখরিত হয়ে উঠেছে। কম খরচে বেশী লাভের আশায় স্থানীয় কৃষকরা আগাম জাতের ও অধিক ফলনশীল এই ফসলের আবাদ করেছেন। তবে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা।
পৌর এলাকার কৃষক মো. শামসুলহক মিয়া বাংলাদেশের খবরকে বলেন এ মৌসুমে শীতে সরিষার কোন সমস্যা হয়নি। সরিষার মাঠের যে অবস্থা দেখা যাচ্ছে আশা করছি বাম্পার ফলন হবে।
পৌর এলাকার কৃষক মো. জুরুলহক মিয়া বলেন ৪৫ শতক জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়। বর্তমানে সরিষার ক্ষেতের অবস্থা খুবই ভালো। তিনি বলেন সরিষা আবাদে খরচ কম ফলন বেশী হয়। তাছাড়া উৎপাদন সার কম প্রয়োগ করতে হয়। সেই সাথে সেচ, কীটনাশক ও নিড়ানির প্রয়োজন হয় না।
মনিয়ন্দ এলাকার কৃষক আলফাজ মিয়া বলেন, এ মৌসুমে ২ বিঘা জমিতে তিনি সরিষার আবাদ করেছেন। প্রতি বিঘায় তার খরচ হয়েছে ১হাজার টাকা। ফলন ভালো হলে প্রতি বিঘায় ৩ মন সরিষা পাওয়া যাবে। বাজার দর ভালো থাকায় সরিষা চাষে লাভবান হবেন বলে জানায়। তিনি আরো বলেন সরিষার চাষ পদ্ধতি খুবই সহজ ও কম খরছে অল্প সময়ে লাভ জনক উৎপাদন করা যায়। কৃষক আলী আফসার বলেন, এবার দেড় বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। সরিষার ফুলে ক্ষেত ভরে গেছে। আগামী ১ মাসের মধ্যে ফুলে সরিষা আসবে। তিনি আশা করছেন এ মৌসুমে তার জমিতে ২ মনের উপর সরিষা হবে। ফলন ভালো ও বাজারদর ভালো থাকলে এ চাষে তিনি লাভবান হবেন।
আখাউড়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাজেরা বেগম বাংলাদেশের খবরকে বলেন, সরিষা একটি লাভ জনক ফসল। বেশীভাগ ক্ষেত্রে সরিষাচাষ ঝুঁকিমুক্ত। তবে প্রতি বছর সরিষা চাষের আবাদ বাড়ছে। কৃষি অফিস সব সময় ফলন ভালো করতে কৃষকদেরকে সার্বিক ভাবে সহযোগিতা করে আসছে বলে জানান। তিনি আরো বলেন আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে বলে আশা করা হচ্ছে।





