অন্ধ খায়রুলের বাড়ি খাবার নিয়ে হাজির সাদ্দাম অনন্ত

প্রতিনিধির পাঠানো ছবি

সারা দেশ

অন্ধ খায়রুলের বাড়ি খাবার নিয়ে হাজির সাদ্দাম অনন্ত

  • শ্রীপুর (গাজীপুর) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২০ মে, ২০২০

স্কুলের মাঠের এক কোণে একটি চকলেট বিস্কুটের দোকান দিয়ে সংসার চালাতেন অন্ধ খায়রুল ইসলাম (৩৫)। সংসারে  আট মাসের শিশু সন্তানসহ পাঁচ জনের সংসারে সবার খেয়ে বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন ছিল দোকানটি। কিন্তু করোনার কারনে বিদ্যালয়টি বন্ধ রয়েছে। বিদ্যালয় বন্ধ তাই খায়রুলের দোকানও বন্ধ। খাইরুল অন্ধ বলে স্কুলের শিক্ষার্থীরাই কোনো পণ্য কিনে দাম পরিশোধ করতো সততার সঙ্গে। সে নিয়মেই চলত তার দোকানটি। এখন দোকান বন্ধ হয়ে পড়ায় চরম কষ্টে চলছিল খায়রুলের সংসার। তিন সন্তান নিয়ে খেয়ে না খেয়ে নিদারুন কষ্টে কাটছিল সংসার।

খায়রুলের এমন  দুর্ভোগের কষ্টের কথা গণমাধ্যমের প্রকাশ পেলে চাল ডালসহ খাদ্য সামগ্রী নিয়ে আজ বুধবার দুপুরে তার বাড়িতে হাজির হন ধনুয়া গ্রামের রেস্তুরা ব্যবসায়ী সাদ্দাম হোসেন অনন্ত। নিজে গাড়ি করে খাদ্য সামগ্রী নিয়ে তার বাড়িতে পৌঁছে দেন।

স্থানীয়রা জানান, গাজীপুর গ্রামের মৃত তাইজ উদ্দীনের ছেলে খাইরুল ইসলাম।  আট বছর বয়সে হঠাৎ খাইরুল অন্ধ হয়ে পড়ে। সে সময় সে ইট ভাটায় শ্রমিকের কাজ করতো। আচমকাই সে চোখে কম দেখতে থাকে।  এক সময় সে পুরোপুরিভাবে অন্ধ হয়ে যায়। পরে অনেক চিকিৎসা করেও কোনো উন্নতি হয়নি তার চোখের। পরে বিয়ে করার কিছু দিন পর ৩ নং গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের এক কোণে ছোট্ট চকলেট বিস্কুটের দোকান দেন। অন্ধ বলে শিক্ষাথীরাই তাকে সব রকম সহযোগিতা করত। 

ব্যবসায়ী  সাদ্দাম হোসেন অনন্ত বলেন, অন্ধ খাইরুল ইসলামের তিনটি সন্তান। আট মাসের একটি শিশু সন্তানও আছে। বার বছরের একটি মেয়ে ও আট বছরের একটি ছেলে সন্তানও রয়েছে তার। স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে চরম কষ্টে সংসার চলছে এমন সংবাদ গণমাধ্যমের প্রকাশ পেলে কিছু সাহায্য নিয়ে তার বাড়িতে আসি। মহামারি করোনা কালে তাঁর দোকানটি বন্ধ থাকায় সে চরম বেকায়দায় পড়েছে। তিনি বলেন ৫০ কেজির এক বস্তা চাল সঙ্গে ডাল,আলু,পেয়াজ, তেল,সাবানসহ আরো কিছু প্রয়োজনীয় সামগ্রী তার বাড়িতে পৌঁছে দিলাম।

অন্ধ অসহায় খায়রুল ইসলাম বলেন, আল্লাহ ওনার ভাল করুক। খুবই কষ্টে কাটছিল দিনকাল। আল্লাহর রহমতে তার সাহায্য আমাদের কষ্ট দূর হবে। ঈদকে সামনে রেখে এ সাহায্য অনেক উপকারে আসল।

৩ নং গাজীপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মাহিন রহমান বলেন, অন্ধ হলেও খায়রুল ভিক্ষাবৃত্তি বেছে নেননি। সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করে সততার সঙ্গে জীবন চালাচ্ছেন। আমাদের স্কুলের সাড়ে ৬শ শিক্ষার্থীরাই তার আপন। সবাই নিজ নিজ দায়িত্বে কেনাকাটা করে মুল্য পরিশোধ করে। দোকান বন্ধ করতে ও খোলতে সহায়তা করে। টাকার হিসাব মিলিয়ে দেয় ছাত্রছাত্রীরা। তিনি বলে স্কুল বন্ধ থাকায় আয় রোজগারহীন  হয়ে সে পরিবার নিয়ে বেশ কষ্টে ছিল। ব্যবসায়ির সহায়তায় তার কষ্ট কিছুটা লাঘব হবে।

তিনি বলেন, ক্রান্তিকালে বিত্তবানদের সামর্থ্যানুযায়ী অসহায়ের পাশে দাঁড়ানো উচিত। 

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads