অনন্য সুবর্ণা

ছবি : সংগৃহীত

শোবিজ

অনন্য সুবর্ণা

  • সালেহীন বাবু
  • প্রকাশিত ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯

প্রচারবিমুখ  মানুষের বড় একটা সুবিধা থাকে। তাদের কোনো কিছুর পেছনে দৌড়াতে হয় না। অনেক সময় তাদের সফলতা নিজের হাতে এসেই ধরা দেয়, যার কথা বলছি তিনি বাংলাদেশের অভিনয় জগতের একজন জীবন্ত তারকা। কী টেলিভিশন, কী মঞ্চ, কী বড় পর্দা সর্বক্ষেত্রে তার বিচরণ আলোর দ্যুতির মতো। আলোর দ্যুতির ৬টায় যেমন চারদিক আলোকিত হয় ঠিক তেমনি তার দ্যুতিতে এদেশের সাংস্কৃতিক অঙ্গন হয়েছে আলোকিত। এ সাফল্য কয়েক দশক ধরেই। তার এ দাপুটে বিচরণ ক্ষেত্রেও তিনি সব সময় ছিলেন নিরহঙ্কার, প্রচারবিমুখ। সম্প্রতি তিনি একই সঙ্গে দুটো সম্মানে ভূষিত হয়েছেন। একটি একুশে পদক পাওয়া, অন্যটি মহিলা সংরক্ষিত আসনের এমপি হওয়া। বর্তমানে সবচেয়ে বেশি আলোচিত হওয়া এ তারকা হলেন সুবর্ণা মুস্তাফা। প্রচারবিমুখ অভিনেত্রী সুবর্ণা মুস্তাফা এখন সবার ভালোবাসা ও সম্মানে সিক্ত।

তার সঙ্গে আলাপচারিতার প্রথমেই উঠে আসে একুশে পদক পাওয়ার বিষয়টি। উচ্ছ্বাস প্রকাশ করে বলেন, ‘নিঃসন্দেহে এটা অসম্ভব একটা গর্বের মুহূর্ত। রাষ্ট্র যখন একজনকে স্বীকৃতি দেয়, তখন অনুভূতিটা হয় অন্যরকম। সেই একজন যখন আমি, ভালো লাগা যে আরেকটু বেশি হবে, এটাই স্বাভাবিক। পুরস্কার দায়িত্ব বাড়িয়ে দেয়। আগামী দিনে যাতে কাজ ঠিকমতো করে যেতে পারি, সেই চেষ্টা করে যাব সবসময়।’ রাষ্ট্রীয় এ স্বীকৃতির বিশেষত্ব সুবর্ণা মুস্তাফার কাছে যথেষ্ট সম্মানের। বলেন, ‘এটি রাষ্ট্রের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পুরস্কার। একটা দেশের অন্যান্য যেকোনো অর্জনের থেকে এটি অনন্য। আরেকটা বিষয়, দেশ আমার কাছে সব সময় আগে। দেশকে অতিক্রম করে কোনো কিছু নয়। দেশের সঙ্গে চলি আমরা। একুশ নামটাই তো অদ্ভুত, মনের ভেতর অন্যরকম একটা অনুভূতি সৃষ্টি করে। আমি খুবই খুশি।’

তবে এই পুরস্কারের কৃতিত্ব সবার বলে মনে করেন সুবর্ণা। অভিনয় একক কিছু নয় বলেও মত দেন তিনি। জানান, ‘এককভাবে আর অভিনয় হয় না। আমার এই অর্জন সেলিম আল দীন, আবদুল্লাহ আল মামুন, নাসিরউদ্দীন ইউসুফ বাচ্চু, বাবা গোলাম মুস্তাফা, হুমায়ুন ফরীদি, রাইসুল ইসলাম আসাদসহ আমার সব সহশিল্পী, পরিচালক, চিত্রনাট্যকার কলাকুশলী প্রত্যেকের সঙ্গে ভাগ করতে চাই। আমার এই চলার পথে সবারই অবদান আছে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাত থেকে একুশে পদক নেওয়া প্রসঙ্গে সুবর্ণা মুস্তাফা বলেন, ‘এটা অনেক অনেক বিশাল সম্মানের ব্যাপার। আমি খুবই খুশি। জীবিত অবস্থায় প্রধানমন্ত্রীর হাত থেকে পুরস্কার নিতে পারাটা বিরাট ঘটনা।’

এই সম্মানের পাশাপাশি সংসদে মহিলা সংরক্ষিত আসনের সদস্য মনোনীত হয়েছেন তিনি। নতুন এ পরিচয়ের প্রাপ্তির জন্য প্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানান। সুবর্ণা মুস্তাফার জন্য এটি সম্পূর্ণই নতুন এক অভিজ্ঞতা। তিনি নিজেও একজন দেশপ্রেমিক। তার কাছে দেশের ঊর্ধ্বে কোনো কিছুই নয়। প্রধানমন্ত্রীর দিকনির্দেশনা নিয়েই সামনে এগিয়ে যেতে চান সুবর্ণা মুস্তাফা। নিজের পক্ষে শতভাগ সেই চেষ্টাই করবেন বলে জানান। অনেক বিষয়ে কাজ করার ইচ্ছা পোষণ করেন তিনি। তবে নারী ও শিশু অধিকার, সাংস্কৃতিক অঙ্গনের ওপর বেশি জোর দিতে চান। এ ছাড়া তার ওপর যে দায়িত্ব ন্যস্ত হবে সেটিও একনিষ্ঠভাবে করার চেষ্টা করবেন বলে জানান সুবর্ণা মুস্তাফা।

তবে কি তিনি সামগ্রিক ব্যস্ততায় ব্যস্ত হয়ে পড়বেন। প্রত্যুত্তরে তিনি জানান, ‘আমি সবসময় সাধারণ। সবার সঙ্গে মেশার চেষ্টা করি। সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমার কোনো পার্থক্য নেই। আমি সাংস্কৃতিক অঙ্গনের মানুষ। এ ক্ষেত্রকে ছাড়ার কোনো প্রশ্নই আসে না। দোয়া করবেন, এভাবেই যেন সারাজীবন চলতে পারি।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads