'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে নিয়োগে অনিয়ম, ৮ সিনেট সদস্যদের বিবৃতি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

শিক্ষা

'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে নিয়োগে অনিয়ম, ৮ সিনেট সদস্যদের বিবৃতি

  • চবি প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ৯ মার্চ, ২০১৯

নিময়নীতির তোয়াক্কা না করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) 'বঙ্গবন্ধু চেয়ার' পদে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরীর যোগদান নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে সিনেট সদস্যরা। আজ শনিবার (৯ মার্চ) বিকাল ৪টায় আটজন সিনেট সদস্যের স্বাক্ষরিত একটি বিবৃতি গণমাধ্যমে প্রেরণ করা হয়।

বিবৃতিতে স্বাক্ষরকারী সিনেটরবৃন্দ হচ্ছেন প্রফেসর ড. রাহমান নাসির উদ্দিন (নৃবিজ্ঞান বিভাগ, চবি), প্রফেসর ড. কাজী এস এম খসরুল আলম কুদ্দুসী (লোকপ্রশাসন বিভাগ, চবি), প্রফেসর ড. অলক পাল (ভূগোল ও পরিবেশবিদ্যা বিভাগ, প্রফেসর ড. আব্দুল্লাহ আল ফারুক (আইন বিভাগ), প্রফেসর এস এস মনিরুল হাসান (সমাজতত্ত্ব বিভাগ), প্রফেসর ড. মোহাম্মদ আবুল মনছুর (মাইক্রোবায়োলজি বিভাগ), প্রফেসর সিরাজ উদ দৌল্লাহ (লোকপ্রশাসন বিভাগ,) এবং জনাব মোহাম্মদ ওমর ফারুক রাসেল (উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগ)।

বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়, বর্তমান উপাচার্য কোন ধরনের নিময়নীতির তোয়াক্কা না করে সদ্য প্রতিষ্ঠিত “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” পদে গত ৭ মার্চ নিজেকে নিয়োগ দিয়েছেন। ভিসি কর্তৃক “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” পদে যোগদান করাকে কেন্দ্র করে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে যে তীব্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে।

বিবৃতিতে আরো বলা হয়,  এ নিয়োগকে কেন্দ্র করে বাংলাদেশের প্রায় সকল ১ম সারির সংবাদপত্রসহ চট্টগ্রামের জনপ্রিয় সংবাদপত্রগুলোতে নানান সংবাদ প্রকাশের মধ্য দিয়ে খোদ ভিসির এ পদ গ্রহণ করাকে কেন্দ্র করে যে বিতর্ক তৈরী হয়েছে সেটা বিশ্ববিদ্যালয় এবং “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” উভয়ের জন্য সম্মানজনক নয়।

সিনেট প্রতিনিধিবৃন্দ মনে করেন, উপাচার্য ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদে নিয়োগের নীতিমালা এবং ১৯৭৩-এর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্টের কোন তোয়াক্কা না করে নিজের পদ, পদবী, এবং ক্ষমতাকে ব্যবহার করে নিজেই এ চেয়ার/পদে নিজেকে নিয়োগ দিয়ে প্রকারান্তরে “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” এর মর্যাদা এবং সম্মান ক্ষুন্ন করেছেন এবং এ চেয়ারে বসার নৈতিক অধিকার হারিয়েছেন।

সিনেটরবৃন্দ দাবি করেন, “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” পদে নিয়োগের প্রধান দু’টি শর্তই (একাধারে ২০ বছর বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে গবেষণা এবং আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত মানের কমপক্ষে ১০ টি প্রবন্ধ/নিবন্ধ প্রকাশ করা) বর্তমান উপাচার্য পূরণ করেননি। তাছাড়া, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট ১৯৭৩-এর ধারা ২৬ (এন) অনুযায়ী যে কোন গবেষণা সংশ্লিষ্ট পদে নিয়োগের জন্য চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের সুপারিশ  প্রয়োজন। অথচ এ বিষয়ে একাডেমিক কাউন্সিলে কোন ধরনের আলোচনা হয়নি।

এছাড়াও, এ পদে নিয়োগের জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের নীতি-নির্ধারণী পর্ষদ সিন্ডিকেট সভার অনুমোদন আবশ্যক। অথচ এ বিষয়ে সিন্ডিকেট সভায় কোন অনুমোদন নেয়া হয়নি। কেবল “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” নিয়োগের নীতিমালা গত ২৩ ফেব্রুয়ারি সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন করা হয় এবং সেখানেও নিয়ম-নীতি ও যথাযথ প্রক্রিয়া অনুসরণ না করার কারণে দু’জন সিন্ডিকেট সদস্য ভিন্নমত (নোট অব ডিসেন্ট) পোষণ করেন।

এ দু’জনের মধ্যে একজন হচ্ছেন স্বয়ং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য। এভাবে “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” পদে নিয়োগের কোন নীতিমালা অনুসরণ না করে, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এ্যাক্ট ১৯৭৩-এর নিয়মনীতি ভঙ্গ করে, একাডেমিক কাউন্সিলের কোন সুপারিশ ছাড়া এবং সিন্ডিকেটের কোন ধরনের অনুমোদন ছাড়া কেবল নিজের ক্ষমতা ব্যবহার করে “বঙ্গবন্ধু চেয়ার” এর মতো সম্মানজনক ও মর্যাদাকর পদটি বিতর্কিতভাবে গ্রহণ করাকে সিনেটরবৃন্দ অত্যন্ত  নীতিবহির্ভুত, অনাকাঙ্খিত এবং অনভিপ্রেত বলে মনে করেন।

বিবৃতিতে সিনেটরবৃন্দ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’কে কেন্দ্র করে যে অনাকাক্সিক্ষত বিতর্ক এবং বিব্রতকর পরিস্থিতির উদ্ভব হয়েছে তা নিরসন করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, প্রধানমন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য ও মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুদৃষ্টি কামনা করেছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads