আপডেট : ১০ June ২০১৯
পটুয়াখালীর কলাপাড়ার ৫০ শয্যা হাসপাতালে ঔষধ ও ডাক্তার সংকটের কারনে চিকিৎসা নিতে রোগীরা সীমাহীন দূর্ভোগে পড়েছে। ঈদ পরবর্তী গত চারদিনে ডায়রিয়া ও পানিবাহিত রোগের আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ক্রমশ বাড়লেও হাসপাতালে খাবার স্যালাইন ছাড়া কোন ঔষধই পাচ্ছে না রোগীরা। এছাড়া ডাক্তার সংকটের কারনে কলাপাড়ায় চিকিৎসা হয় এমন রোগীকেও পটুয়াখালী কিংবা বরিশাল রেফার করে দিচ্ছে ডাক্তার। মাত্র তিনজন ডাক্তারকে তিন লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা প্রদান করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। একই অবস্থা কুয়াকাটা ২০ শয্যা হাসপাতাল ও মহিপুর উপস্বাস্থ্য কেন্দ্রে। হাসপাতার সূত্রে জানাযায়, গতকাল পর্যন্ত ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়ে ভর্তি হয়েছে ১৭ জন শিশু। আউটডোরে চিকিৎসা নিয়েছে কয়েকশ রোগী। কিন্তু হাসপাতাল থেকে শুধু খাবার স্যালাইন ছাড়া কোন ঔষধই পাচ্ছেন না রোগীরা। রোগীদের অভিযোগ, আগে ডাক্তাররা ভিজিট নিতো, কিন্তু ঔষধ দিতো। এখন অফিস টাইমে ভিজিট নেয় না ডাক্তাররা কিন্তু বন্ধ হয়েছে তাদের ঔষধ। এখানে নাকি কোন ঔষধই নেই। প্রতিজন ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগীর স্বজনকে কলেরা স্যালাইন, এন্টিবায়োটিকসহ পাঁচ থেকে সাত ধরণের ঔষধ বাহির থেকে কিনতে হচ্ছে। তবে উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানালেন ঔষধ সংকট না শেষ হয়ে গেছে। ঔষধের ইনডেন পাঠানো হয়েছে। কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলায় ৩৬ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও শূণ্য রয়েছে ২৬ টি পদ। কর্মরত ১০ জন ডাক্তারের মধ্যে কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালে ৫জন। কিন্তু ছুটিতে আছেন ২ জন। বাকি ৫ ডাক্তারকে কুয়াকাটা ও মহীপুর হাসপাতালসহ ১২টি ইউনিয়ন ও দুটি পৌরসভার প্রায় তিন লক্ষাধিক মানুষকে স্বাস্থ্য সেবা দিতে হচ্ছে। এছাড়া উপজেলায় দ্বিতীয় শ্রেণির ৩৬টি পদের বিপরীতে ২টি, তৃতীয় শ্রেণির ১২৯টি পদের বিপরীতে ৩৭টি, চতুর্থ শ্রেণির ৩৪টি পদের বিপরীতে ১৫টি পদ শূণ্য রয়েছে। হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, পুরুষ, শিশু ও মহিলা ওয়ার্ডে রোগী ভর্তি। অনেক রোগী বাইরের ফ্লোরে চিকিৎসা নিচ্ছে। শিশু ওয়ার্ডে ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীরা যন্ত্রনায় চিৎকার করলেও ডাক্তার তো দূরের কথা নার্সদেরও পাওয়া যাচ্ছে না। একাধিক রোগীর স্বজন জানান, নামেই হাসপাতাল। এখানে জ্বর ও কাশ ছাড়া আর কোন রোগের চিকিৎসা হয় না। রোগীর অবস্থা একটু ভিন্ন হলেই ডাক্তাররা রোগীকে রেফার করে দিচ্ছে। এই যদি হয় স্বাস্থ্য সেবা তবে হাসপাতালের কী দরকার, গ্রামের ডাক্তারের ঔষধ খেলেইতো চলে। তারা অভিযোগ করেন দুইদিন আগে হাসপাতালে ভর্তি হলেও ডাক্তার দেখে গেছে মাত্র একবার। ডাক্তারের কাছে বারবার গিয়ে জানালেও তারা একবারও দেখতে আসছে না রোগীর কী অবস্থা। হাসপাতালের সিনিয়র ষ্টাফ নার্স খাদিজা আক্তার বলেন, ঈদের পরদিন থেকে শনিবার পর্যন্ত ১৭ জন ডায়রিয়া আক্রান্ত শিশু ভর্তি হয়েছে। গত দুইদিনে এই সংখ্যা আরো বেড়েছে। কিন্তু খাবার স্যালাইন ছাড়া এই মুহুর্তে কোন ঔষধ সরবরাহ নেই। তারা দিনরাত রোগীদের সেবা দিচ্ছেন। কিছু রোগীর এখানে চিকিৎসা ব্যবস্থা ও প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদি ও চিকিৎসক না থাকায় তাদের রেফার করতে হচ্ছে। কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার জানান, কিছু ঔষধের সংকট রয়েছে। তবে এজন্য ইনডেন দেয়া হয়েছে। তবে ডাক্তারসহ জনবল সংকটের কথা স্বীকার করে বলেন ৫০ শয্যা হাসপাতাল। কিন্তু প্রতিদিন শতাধিক রোগী ভর্তি থাকে। আউটডোরে চিকিৎসা দিতে হয় কয়েকশ রোগীকে। অথচ তারা কর্মরত আছেন মাত্র তিনজন ডাক্তার। রোগী ও সাধারণ মানুষের দাবি কুয়াকাটা পর্যটন কেন্দ্র, পায়রা সমুদ্র বন্দর ও পায়রা তাপবিদ্যুত কেন্দ্র এলাকার দুটি হাসপাতাল। কিন্তু ডাক্তার নেই। এখানে দেশ ও বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা যেমন ঘুরতে আসে তেমনি কর্মক্ষেত্রে নিয়োজিত রয়েছে। তাই কুয়াকাটা ও কলাপাড়া হাসপাতালের আরও আধুনিকায়ন ও জরুরী চিকিৎসা সরঞ্জামাদি ও চিকিৎসক পদায়ন প্রয়োজন। এজন্য তারা স্বাস্থ্য মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করছেন।
Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.
বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com
অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com
ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১