বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ১৩ November ২০১৮

সব রাজনৈতিক দলের অংশগ্রহণ

জাতি নিরপেক্ষ নির্বাচন দেখতে চায়


আদর্শভিত্তিক রাজনীতি, সুশাসন ও দেশের উন্নয়ন হাত ধরাধরি করে চলে। কিন্তু আদর্শচ্যুত রাজনীতির কাছ থেকে সমাজ ও দেশ কিছু আশা করতে পারে না। আর তাই স্বাধীনতার সাড়ে চার দশকে দেশে গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রা বার বার বাধাগ্রস্ত হতে দেখি। সাধারণ মানুষ আজ তাই আদর্শের রাজনৈতিক শক্তির উত্থান দেখতে চায়, যে রাজনীতি উন্নয়ন ও গণতন্ত্রকে সমুন্নত রাখবে। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে গত দুই দিনে আমরা সেই আশার আলো দেখতে পেলাম।

জাতি যখন গত ৫ জানুয়ারির মতো একটি নির্বাচনের আশঙ্কা করছিল, ঠিক সেই মুহূর্তে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ও ২০ দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা নির্বাচনের মাঠে সুবাতাস বইয়ে দিল। সমগ্র জাতির জন্য তো বটেই সরকারে থাকা ক্ষমতাসীন দল ও নির্বাচন কমিশনকে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের ক্ষেত্র তৈরি করে দিয়েছে। জাতিকে একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন উপহার দেওয়ার বল এখন তাদের কোর্টে। আর তাই বিরোধীপক্ষের তফসিল পেছানোর দাবি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে মেনে নেওয়াকে আমরা সাধুবাদ জানাই।

অতীতে স্বার্থান্বেষী রাজনীতির সুযোগ নিয়ে বিস্তৃত হয়েছে পেশিশক্তি, রাজনীতি হয় বিত্তবৈভব অর্জনের হাতিয়ার। জনস্বার্থ উপেক্ষিত হওয়ায় অনেক ক্ষেত্রে রাজনীতির ওপর বীতশ্রদ্ধ হয়েছে সাধারণ জনগণ। এ অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হলে রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন ঘটাতে হবে। সুতরাং বর্তমানে রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচনের মাঠে পদচারণা কুসুমাস্তীর্ণ করার বিষয়টি নির্বাচন কমিশনের ওপরই বর্তায়। তফসিল ঘোষণার পর কেবল ক্ষমতাসীন দল নয়, বরং সব দলের চাওয়াকে সমান গুরুত্ব দিতে হবে নির্বাচন কমিশনকে। তবেই একটি সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্পন্ন করা সম্ভব।

আমরা আশা করি, সব রাজনৈতিক দলের নির্বাচনে অংশগ্রহণকে যেমন জাতি স্বাগত জানিয়েছে, তেমনি নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করে তাদের আবারো পথে নামার সুযোগ করে দেবে না ক্ষমতাসীন দল ও নির্বাচন কমিশন। মূলত বাংলাদেশে আদর্শিক রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা না থাকায় রাজনৈতিক দলগুলো রাষ্ট্রের স্বার্থ ক্ষুণ্ন করে ব্যক্তি ও দলীয় স্বার্থকেই বড় করে দেখেছে। এমনকি, তাদের নিজেদের ভেতরেও আস্থাহীনতার সঙ্কট জাতির ক্রান্তিকালেও দেশবাসীর সামনে উন্মোচিত হয়েছে। ফলে দুর্নীতি, অনৈতিকতা, লুটপাট, দলীয়করণ ও পরিবারতন্ত্রের ফলে গণতন্ত্রহীন চর্চার ভেতর দিয়ে এগিয়ে গেছে এ দেশের রাজনীতি। ফলে অসহিষ্ণু ও সংঘাতপূর্ণ রাজনীতি, সন্ত্রাস, দুর্নীতি আমাদের জাতীয় রাজনীতির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য হয়ে দাঁড়িয়েছে।

এখন প্রয়োজন রাজনৈতিক শুদ্ধাচার। একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে কোনো ধরনের সহিংসতা আমাদের কাম্য নয়। মূলত একটি নির্বাচন অনুষ্ঠানকালে নির্বাচন কমিশন সম্পূর্ণ স্বাধীন। এ-সময় প্রশাসনের সব স্তরের কর্মকর্তা ও কর্মচারী নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা মানতে বাধ্য। সরকার তথা নির্বাহী বিভাগের নির্বাচন প্রশ্নে কোনো কর্তৃত্ব থাকে না। এটাই প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক রীতি। বস্তুত পুরো বিষয়টি নির্ভর করছে নির্বাচন কমিশনের নৈতিকতা ও সদিচ্ছার ওপর। বাজারচলতি কথায় এ নৈতিকতা ও সদিচ্ছার রূপক মেরুদণ্ড। তাই নিকট অতীতের প্রশ্নবিদ্ধ সিটি নির্বাচনের মতো কোনো নির্বাচন জাতি দেখতে চায় না। আমরা চাই একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্যভাবে সম্পন্ন হোক। আর এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশনের শক্তি-সদিচ্ছা ও নৈতিকতার উদ্বোধন ঘটুক। পাশাপাশি আমাদের রাজনৈতিক দলগুলো রাজনৈতিক সংস্কৃতির চর্চা অব্যাহত রাখবে- এটাই কামনা।


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১