বাংলাদেশের খবর

আপডেট : ২৯ August ২০১৮

২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলা

বাবর জড়িত নয়  দাবি আইনজীবীর

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর সংরক্ষিত ছবি


একুশে আগস্ট ভয়াবহ গ্রেনেড হামলা মামলার যুক্তিতর্কের শুনানিতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেছেন, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর ঘটনার সঙ্গে জড়িত ছিলেন না। তার মক্কেল নির্দোষ। হয়রানির উদ্দেশ্যে সম্পূরক অভিযোগপত্রে তার নাম এনেছেন তদন্ত কর্মকর্তা। মুফতি হান্নানের জবানবন্দিতে বাবরের নাম আসা বিশ্বাসযোগ্য নয়।

গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নাজিমউদ্দিন রোডে পুরনো কেন্দ্রীয় কারাগারের পাশে স্থাপিত ঢাকার ১ নম্বর দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনালের বিচারক শাহেদ নূর উদ্দিনের আদালতে যুক্তিতর্কের এ শুনানি হয়েছে। বাবরের পক্ষে যুক্ততর্কের সপ্তম দিনে তার আইনজীবী নজরুল ইসলাম মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আবদুল কাহ্হার আকন্দের (পিডব্লিউ-২২৫) জবানবন্দি ও সাক্ষ্য থেকে যুক্তিতর্ক তুলে ধরে শুনানিতে এ দাবি করেন। আজ বুধবার ফের বাবরের পক্ষে যুক্তিতর্কের দিন ধার্য রয়েছে।

বাবরের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেন, হাওয়া ভবনে গিয়ে তার মক্কেলের বৈঠকের বিষয়টি তদন্ত কর্মকর্তা ফজলুল কবির প্রমাণ করতে পারেননি। কারণ বাবরের গানম্যান, গাড়িচালক ও হাওয়া ভবনের লোকজনকে মামলায় সাক্ষী করা হয়নি।

তিনি বলেন, মুফতি হান্নানের জবানবন্দি বিশ্বাসযোগ্য নয়। বাবরকে জড়িয়ে দেওয়া জবানবন্দি অবিশ্বাস্য। কারণ এ জবানবন্দি পরে তিনি প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। আর মুফতি হান্নানকে বাবর কখনো দেখেননি, চেনেনও না। হান্নান সম্পর্কে বাবরের কোনো ধারণাও নেই।

অন্যদিকে সরকারের প্রধান কৌঁসুলি সৈয়দ রেজাউর রহমান বাবরের আইনজীবীর যুক্তির বিরোধিতা করে বলেন, আসামিপক্ষের আইনজীবী যুক্তি খণ্ডন না করে অপ্রাসঙ্গিক কথা বলে যাচ্ছেন। এরপর আদালত বাবরের আইনজীবীকে প্রাসঙ্গিক যুক্তি পেশের তাগিদ দেন।

শুনানি শেষে সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের বলেন, ভয়াবহ ও বর্বরোচিত গ্রেনেড হামলার পরও ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যাননি তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর। ঘটনাস্থলের অদূরে স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরের কর্মস্থল হওয়ার পরও একবারের জন্যও পরিদর্শনে যাননি তিনি। আসামি বাবর ২১ আগস্ট ঘটনার সঙ্গে সম্পৃক্ত। সাক্ষ্য ও তথ্য-প্রমাণে তা স্পষ্ট করতে সক্ষম হয়েছে প্রসিকিউশন।

শুনানিতে বাবরের আইনজীবী নজরুল ইসলাম বলেছেন, আজ বুধবার তিনি যুক্তিতর্ক শেষ করবেন। তারপর বাবরের পক্ষে আইনগত যুক্তি উপস্থাপন করবেন আইনজীবী এসএম শাহজাহান।

শুনানির শুরুতে সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, ‘আজ (গতকাল) এ মামলার যুক্তিতর্কের ১১১তম দিন। এর মধ্যে টানা ৮৬ কার্যদিবস আসামিপক্ষ যুক্তিতর্ক পেশ করছে।’

আদালতে সরকারপক্ষে আরো উপস্থিত ছিলেন বিশেষ পিপি মো. আবু আবদুল্লাহ ভূঁইয়া, আকরাম উদ্দিন শ্যামল, অ্যাডভোকেট ফারহানা রেজা, আমিনুর রহমান প্রমুখ।

একুশে আগস্টের ঘটনায় পৃথক মামলায় মোট আসামি ৫২ জন। এর মধ্যে জামায়াতের সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ (মানবতাবিরোধী অপরাধ), হরকাতুল জিহাদ নেতা মুফতি হান্নান ও শরীফ সাহেদুল আলম বিপুলের (ব্রিটিশ হাই কমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা) মৃত্যুদণ্ড কার্যকর হওয়ায় তাদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। এ তিনজন বাদে এখন আসামি ৪৯ জন। এর মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান, হারিছ চৌধুরীসহ ১৮ জন পলাতক। লুৎফুজ্জামান বাবর, আবদুস সালাম পিন্টুসহ ২৩ আসামি কারাগারে ও ৮ জন জামিনে রয়েছেন।

সরকারপক্ষে ২২৫ সাক্ষী আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন। গত বছরের ৩০ মে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দের জেরা শেষের মধ্য দিয়ে সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়।

বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট বিকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের সমাবেশে ভয়াবহ গ্রেনেড হামলায় আওয়ামী লীগের মহিলাবিষয়ক সম্পাদক ও প্রয়াত রাষ্ট্রপতি জিল্লুর রহমানের স্ত্রী আইভী রহমানসহ ২২ জন নিহত হন। গুরুতর আহত হন তখনকার বিরোধীদলীয় নেত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের কয়েকশ’ নেতাকর্মী।

 


বাংলাদেশের খবর

Plot-314/A, Road # 18, Block # E, Bashundhara R/A, Dhaka-1229, Bangladesh.

বার্তাবিভাগঃ newsbnel@gmail.com

অনলাইন বার্তাবিভাগঃ bk.online.bnel@gmail.com

ফোনঃ ৫৭১৬৪৬৮১