সিলেটে রমজাননির্ভর পণ্যের দামে নাভিশ্বাস

সংগৃহীত ছবি

পণ্যবাজার

সিলেটে রমজাননির্ভর পণ্যের দামে নাভিশ্বাস

  • ইমরান আহমদ, সিলেট
  • প্রকাশিত ১৩ এপ্রিল, ২০২১

লকডাউন আর রমজানকে পুঁজি করে সিলেটের অসাধু ব্যবসায়ীরা পুরনো ছক কাজে লাগাচ্ছেন। রমজাননির্ভর ছয়টি পণ্যের দাম প্রায় তিন মাস থেকেই বাড়াতে শুরু করেছেন, যাতে রমজানে নতুন করে বাড়ানোর প্রয়োজন না পড়ে। সেই সঙ্গে দীর্ঘ সময় ভোক্তার পকেট কেটে অতিরিক্ত মুনাফা করা যায়।

রমজাননির্ভর পণ্য-ছোলা, ভোজ্যতেল, ডাল, খেজুর, আদা ও রসুনের দাম ব্যাপক হারে বেড়েছে। আরেক পণ্য পেঁয়াজের বাজার তো কয়েক মাস ধরেই চড়া। সেই সঙ্গে বাজারে চাল, সব ধরনের সবজিসহ বেশ কিছু খাদ্যপণ্য বাড়তি দরে বিক্রি হচ্ছে।

সিলেটের বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, ইফতারির জন্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম এখন চড়া। নতুন করে বেড়েছে বোতলজাত সয়াবিনের দাম, খোলা ময়দা, আলু, রসুন, আদা ও গুঁড়ো দুধসহ নিত্যপণ্যের দাম। সেই সাথে বেড়েছে সব ধরনের সবজি, মাছ, মোরগ ও গরুর মাংসের দাম। এ ছাড়া রকেটগতিতে বেড়েছে বিভিন্ন প্রকার চালের দামও। এই সপ্তাহে নতুন করে বেড়েছে সব ধরনের চালের দাম। বেড়েছে খেজুর, সয়াবিন তেল, মসলা, সবজি, ব্রয়লার মুরগি, গরু মাংস, আলু, রসুন ও পেঁয়াজের দাম।

খুচরা বাজারে গত এক সপ্তাহে মোটা চালের দাম বেড়েছে কেজিতে ৪ টাকা। মোটা চাল কিনতে হচ্ছে প্রতি কেজি ৫২ টাকা দিয়ে। এক সপ্তাহ আগে এই চালের দাম ছিল ৪৮ টাকা কেজি। প্রতি কেজি মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৬৬ টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ৬৪ থেকে ৬৫ টাকা। পাইজাম চাল বিক্রি হয়েছে ৬০ টাকা কেজি, যা সাত দিন আগে ছিল ৫৬ টাকা। বাজারে মসলা জাতীয় পণ্যের মধ্যে প্রতি কেজি এলাচি বিক্রি হয়েছে সাড়ে ৩ হাজার টাকা, যা সাত দিন আগে ছিল ৩ হাজার টাকা। এক সপ্তাহে এই পণ্যটির দাম বেড়েছে কেজিতে ৫০০ টাকার মতো।  মাঝারি মানের মসুর ডাল বিক্রি হয়েছে ৮০ থেকে ৯০ টাকা কেজি, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৭৫ থেকে ৮৫ টাকা কেজি। পাঁচ লিটারের বোতলজাত সয়াবিন বিক্রি হচ্ছে ৬৫০ থেকে ৬৬০ টাকায়, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৬২০ থেকে ৬৪৫ টাকা। বর্তমানে পটোলের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৫০ টাকা। বেগুনের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৫০ থেকে ৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা। লাউ বিক্রি হচ্ছে প্রতি পিস ৬০ থেকে ৭০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা। পাকা টমেটোর কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ১৫ থেকে ২০ টাকা। চিচিঙ্গা কিনতে কেজিতে ৫০ টাকা গুনতে হচ্ছে ক্রেতাদের। শশা ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এদিকে, মাত্র দুদিনের ব্যবধানে ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে বেড়েছে ১০ টাকা করে। গত সপ্তাহে প্রতি কেজি বয়লার মুরগি বিক্রি হয় ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা। রোববার এ মুরগি বিক্রি হয় ১৬৫ টাকা কেজি। 

সিলেট চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি আবু তাহের মোহাম্মদ শুয়েব বলেন, রমজাননির্ভর পণ্যের মজুত থাকা সত্ত্বেও কৃত্রিমভাবে ঘাটতি দেখিয়ে কেউ দাম বাড়ায় কি না, তা প্রশাসন কঠোর নজরদারি রাখতে হবে। সঙ্গে আমরা যারা ভোক্তা, আমাদেরও পুরো মাসের পণ্য একবারে কেনার প্রবণতা বাদ দিতে হবে বলেও তিনি পরামর্শ দেন।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেট-এর সহকারী পরিচালক (মেট্রো) শ্যামল পুরকায়স্থ গতকাল সোমবার বাংলাদেশের খবরকে বলেন, বাজারে অভিযান পরিচালনার জন্য এখনো আমাদের কাছে কোনো নির্দেশনা আসেনি। তবে স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে কি না তা প্রতিদিনই আমরা মনিটরিং করছি। দু-এক দিনের মধ্যে অভিযানের নির্দেশনা পেলে আমরা ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads