সন্দেহের তীর শারুনের দিকে

সংগৃহীত ছবি

অপরাধ

মুনিয়ার মৃত্যু

সন্দেহের তীর শারুনের দিকে

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৮ মে, ২০২১

নাটকীয় মোড় নিয়েছে মুনিয়ার মৃত্যুরহস্য। গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান তিনি। তার মৃত্যুর পরপরই পোস্টমর্টেম এবং সুরতহাল রিপোর্টের আগেই মুনিয়ার বোন নুসরাত তানিয়া গুলশান থানায় আত্মহত্যার প্ররোচনার অভিযোগে একটি মামলা করেন। এই মামলার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পাচ্ছে পুলিশ। পুলিশের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে যে, মামলা তদন্ত এখন চূড়ান্ত পর্যায়ে রয়েছে। শেষ মুহূর্তে তারা বিভিন্ন বিষয়গুলোর খুঁটিনাটি দেখছে। একাধিক দায়িত্বশীল সূত্রগুলো বলছে, মুনিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় নাটকীয় মোড় নিয়েছে। জানা গেছে যে, তদন্তকারী কর্মকর্তারা পোস্টমর্টেম রিপোর্ট এবং অন্য বিষয়গুলো থেকে নিশ্চিত হয়েছেন, মুনিয়া আত্মহত্যাই করেছেন। আর আত্মহত্যার প্ররোচনার যে অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে, সেটি সম্পর্কে কোনো রকম তথ্য-প্রমাণ তদন্তকারীরা পাননি।

বিশেষত মুনিয়ার মৃত্যুর বেশ কিছুদিন আগ পর্যন্ত মুনিয়ার সঙ্গে বসুন্ধরা এমডির কোনো রকম যোগাযোগ ছিল না। কথিত যে ফোন রেকর্ড দেওয়া হয়েছে সেই ফোন রেকর্ডটি অনেক দিনের পুরনো একটি ফোন রেকর্ড ছিল। কাজেই অপমৃত্যুর প্ররোচনার জন্য এত পুরনো ফোনের কথোপকথন প্রযোজ্য হবে না। তা ছাড়া এই অপমৃত্যুর মামলায় যে ডায়েরির কথা বলা হয়েছিল, সেই ছয়টি ডায়েরিতে মুনিয়া যা লিখেছিল সবই এক থেকে দেড় বছর আগের ঘটনা লিখেছে।

সাম্প্রতিক সময়ে ডায়েরিতে মুনিয়ার যে সমস্ত কথাবার্তা সেগুলো হলো তার ব্যক্তিগত হতাশার কথা। এখান থেকে বোঝা যায় যে, মুনিয়ার সঙ্গে বসুন্ধরার এমডির গত প্রায় এক বছরের মধ্যে কোনো যোগাযোগ ছিল না। আর যে হতাশার কথা মুনিয়া ডায়েরিতে লিখেছেন, তা কখনো আত্মহত্যার প্ররোচনার জন্য বিবেচিত হতে পারে না। তবে মুনিয়ার মৃত্যুতে কিছু চাঞ্চল্যকর বিষয় সামনে এসেছে এবং সে বিষয়গুলোই এখন তদন্তের জন্য গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বিশেষ করে শারুনের ভূমিকা। মুনিয়ার মৃত্যুর আগে শারুনের সঙ্গে মুনিয়ার যে মেসেজ আদান-প্রদান সেটি এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। বিশেষ করে মুনিয়াকে যে শারুন ব্যবহার করত এবং শারুনের সঙ্গে যে মুনিয়ার সখ্য ছিল সেটি মামলার একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। একটি সূত্র বলছে, মুনিয়ার আত্মহত্যা আগে একাধিকবার শারুনের সঙ্গে তার যোগাযোগ হয়েছে। যদিও শারুনের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে অস্বীকৃতি জানানো হয়েছে।

কিন্তু বিভিন্ন সূত্র থেকে প্রাপ্ত খবরে জানা গেছে, শারুন যা বলছেন তা সত্য নয়। বরং মুনিয়ার মৃত্যুর আগে তার সঙ্গে দুজনার একাধিকবার যোগাযোগের তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। একটি হলো নুসরাত অন্যটি হলো শারুন। আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, এ ব্যাপারে তারা শারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করবে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়নি। বিভিন্ন মহল মনে করছেন যে, যদি শারুনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা যায় এবং শারুনের সঙ্গে মুনিয়ার সম্পর্ক কী সেই সূত্রের উৎস খোঁজা যায়, তাহলেই এই মৃত্যুর জট অনেকটাই খুলবে। শারুন মুনিয়ার মৃত্যুর জন্য মুনিয়াকে প্ররোচিত করেছিল কি না, তাকে ব্ল্যাকমেইল করেছিল কি না বা তার ওপর কোনো চাপ সৃষ্টি করেছিল কি না, সেটি এই আত্মহত্যার রহস্য উদ্ঘাটনে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads