মুক্তমত

শিশুদের বিপথগামিতা থেকে রক্ষা প্রসঙ্গে

  • প্রকাশিত ৬ নভেম্বর, ২০১৮

সোহাগ মনি

শিশুরা আগামী প্রজন্মের নায়ক। ‘শিশু আইন-২০১৩’ অনুযায়ী ১৮ বছর পর্যন্ত সবাইকে শিশু বলে গণ্য করা হয়। সে হিসেবে বাংলাদেশে প্রায় ছয় কোটি শিশু, যা মোট জনসংখ্যার ৪০ শতাংশ।

জনসংখ্যার এই ৪০ শতাংশই একসময় নেতৃত্ব দেবে বাংলাদেশকে। এই ৪০ শতাংশকে যদি আমরা ঠিকভাবে পরিচর্যা করতে পারি, তাহলে আগামীর বাংলাদেশ হবে স্বপ্নের বাংলাদেশ। ‘ঘুমিয়ে আছে শিশুর পিতা সব শিশুরই অন্তরে’ অর্থাৎ প্রতিটি শিশুর ভেতরেই রয়েছে অসীম সম্ভাবনা। একটি পথশিশুও হয়ে উঠতে পারে ইঞ্জিনিয়ার, যদি সে পায় আশ্রয়, সহমর্মিতা, সুযোগ আর যদি রক্ষা পায় বিপথগামী হওয়া থেকে। চিন্তা করা যায়, রাস্তার শিশুটি রাস্তায়ই তার জীবন পার করবে, অথচ একটু পরিচর্যা পেলে সে হয়ে উঠতে পারত মানবসম্পদ। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, কীভাবে এই ৪০ শতাংশকে পরিচর্যা করা যায়? কেননা দিন দিনই বিপথগামী হচ্ছে শিশুরা। পারিবারিক পরিমণ্ডলে বড় হওয়া শিশুরা কিছুটা রেহাই পেলেও একেবারে খাদের কিনারায় পথশিশু এবং রাস্তার শিশুরা।

দেশের আনাচেকানাচে এমন অনেক সিন্ডিকেট দেখতে পাওয়া যায়, যারা শুধু এই পথশিশুদের প্রলোভন দেখিয়ে অনেক বড়মাপের অপরাধে জড়িয়ে ফেলে। তাদের কাজ অনেকটা সহজ, কেননা এসব পথশিশুর অভিভাবক নেই, অল্প কিছু টাকা পেলেই এরা খুব বড় ধরনের ঝুঁকি নিতে দ্বিধা করে না। এদের যে দিকে ইচ্ছা সে দিকেই নেওয়া সম্ভব।

ধনী পরিবারের সন্তানরাও রেহাই পাচ্ছে না বিপথগামী হওয়া থেকে। কুচক্রী সদস্যরা তাদের করছে নেশাগ্রস্ত। শিশু আইনে বলা আছে, শিশুকে নেশাগ্রস্ত করালে এক বছরের জেল এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা। আবার পথশিশুদের দিয়ে মাদক চোরাকারবারিরা ব্যবসা করে খুব সহজেই। এসব শিশু জীবনকে জীবনই মনে করে না। আগামীকে দেখতে পায় না তারা। তাদের সামনে আগামীকে তুলে ধরতে পারলে এমন বিপথ থেকে কিছুটা রেহাই সম্ভব। ভাববার বিষয় হচ্ছে, বঞ্চিত শিশুদের যদি চাহিদার ৫০ ভাগও পূরণ করা যায়, তাহলে একেকটি শিশু ফুল হয়ে সুভাস ছড়াতে পারে। এসব শিশু কলিকে কীটের হাত থেকে রক্ষা করতে পারলেই একেকটি ফুল হয়ে ফুটবে।

 

লেখক : গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ, কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads