করোনাভাইরাস (কোভিড-১৯) মহামারির মধ্যেও নতুন অর্থবছরে পণ্য ও সেবা খাতে রপ্তানি বাড়িয়ে ৫ হাজার ১০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্য ঠিক করেছে সরকার।
বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি গতকাল মঙ্গলবার প্রধান রপ্তানি খাতের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে এক ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে ২০২১-২২ অর্থবছরে রপ্তানি আয়ের এই লক্ষ্যমাত্রা ঘোষণা করেন।
তিনি বলেন, গত বছর ১৫ শতাংশ প্রবৃদ্ধি, চলতি অর্থবছরের বাজেটে ‘মেইড ইন বাংলাদেশ’ নাম দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্পে বিশেষ নীতি সহায়তা, রপ্তানিপণ্যের বৈচিত্র্যকরণে সরকারি নানা
রপ্তানি আয়ের লক্ষ্য ৫ হাজার কোটি ডলার উদ্যোগ বিবেচনায় এ লক্ষ্যমাত্রা ঠিক করা হয়েছে।
চলমান মহামারির মধ্যেও রপ্তানিমুখী খাতগুলো যেভাবে কাজ করে যাচ্ছে তাতে এই লক্ষ্যমাত্রা খুবই বাস্তবসম্মত এবং অর্জন করার মতো বলে মন্তব্য করেন মন্ত্রী।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিশেষ উদ্যোগে আমাদের রপ্তানিখাতকে প্রণোদনাসহ প্রয়োজনীয় সব ধরনের সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। রপ্তানি পণ্য সংখ্যা বৃদ্ধি এবং বাজার সমপ্রসারণে সরকার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। তাই আমাদের রপ্তানি বৃদ্ধির সুযোগ এসেছে। রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য রপ্তানিকারক এবং রপ্তানির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সবাইকে আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে।
মন্ত্রী বলেন, বর্তমান ব্যবসাবান্ধব সরকার দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। সরকার বেশ কিছু সেক্টরকে পণ্য রপ্তানিতে দক্ষ করে গড়ে তোলার জন্য প্রকল্প হাতে নিয়েছে। তৈরি পোশাকের পাশাপাশি লাইট ইঞ্জিনিয়ারিং, আইসিটি, লেদার ও লেদারগুডস, প্লাস্টিক এবং কৃষিজাত পণ্য রপ্তানির বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ খাতগুলোকে শক্তিশালী করে গড়ে তোলার জন্য বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় বাণিজ্য মন্ত্রণালয় একটি প্রকল্প বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। আশা করা যায়, এ খাতগুলোর রপ্তানি উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। এছাড়া দেশের রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে পিটিএ বা এফটিএ-এর মতো বাণিজ্য চুক্তি করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। পাশাপাশি রপ্তানি বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন দেশে নিযুক্ত কমার্শিয়াল কাউন্সিলররাও কাজ করছেন।
গত ৩০ জুন শেষ হওয়া ২০২০-২০২১ অর্থবছরে ৩ হাজার ৮৭৫ কোটি ৮৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি করেছে বাংলাদেশ। রপ্তানির এই অংক ৪ হাজার ১০০ কোটি ডলারের রপ্তানি লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে সাড়ে ৫ শতাংশ কম হলেও মহামারির মধ্যে ঘুরে দাঁড়ানোর ইঙ্গিত স্পষ্ট।
আগের ২০১৯-২০ অর্থবছরে ৩ হাজার ৩৬৭ কোটি ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়েছিল। সেই হিসাবে এবার প্রবৃদ্ধি হয়েছে ১৫ দশমিক ১০ শতাংশ।
২০১৯-২০২০ অর্থবছরের নয় মাস পেরিয়ে যাওয়ার পর এপ্রিলে মহামারির প্রথম ধাক্কা এসেছিল। অন্যদিকে সদ্য সমাপ্ত ২০২০-২০২১ অর্থবছরজুড়ে সংক্রমণের মধ্যে সময় পার করতে হয়েছে।
বাণিজ্য সচিব তপন কান্তি ঘোষ, বিকেএমইএ সহ-সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম, বাংলাদেশ ট্যানার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান শাহিন আহমেদ, ফিনিশ লেদার এক্সপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাইফুল ইসলাম এবং বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান ভার্চুয়াল সংবাদ সম্মেলনে যুক্ত ছিলেন।
 
                                 
                                 
                                         
                                         
                                         
                                        





