মেয়র ও প্রকল্প পরিচালকের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য

সংগৃহীত ছবি

মহানগর

চট্টগ্রামে ফ্লাইওভারের পিলারে ফাটল

মেয়র ও প্রকল্প পরিচালকের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য

  • চট্টগ্রাম ব্যুরো
  • প্রকাশিত ২৭ অক্টোবর, ২০২১

চট্টগ্রাম নগরীর বহদ্দারহাটে এমএ মান্নান ফ্লাইওভারের একটি র‍্যাম্পের পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে। এ কারণে ফ্লাইওভারের একটি অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। এদিকে ফ্লাইওভারের ফাটল নিয়ে পরস্পরবিরোধী মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের (চসিক) মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম  রেজাউল করিম এবং ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক সিডিএ’র প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান। নির্মাণজনিত ত্রুটির কারণে র্যাম্পের পিলারে ফাটল দেখা দিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন চসিক মেয়র বীর মুক্তিযোদ্ধা এম রেজাউল করিম।

অন্যদিকে ফ্লাইওভারের প্রকল্প পরিচালক সিডিএ’র প্রকৌশলী মাহফুজুর রহমান বলেছেন, ফ্লাইওভারের যে অংশে ফাটল ধরেছে সে অংশটি (র্যাম্পটি) ডিজাইন করা হয়েছিল হালকা যানবাহনের জন্য। উদ্বোধনের সময় হাইট ব্যারিয়ার (প্রতিবন্ধকতা) ও সাইনবোর্ড ছিল। কিন্তু সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তরের পর নিচের রাস্তায় ওয়াসার কাজ চলছিল। তখন ব্যারিয়ার ভেঙে ফেলেছে। এরপর বিলেটবাহী গাড়ি, কভার্ড ভ্যানসহ সব ধরনের ভারী যানবাহন চলাচল শুরু করে। আর এতেই পিলার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

তবে মেয়র এম রেজাউল করিম বলেন, ‘ফ্লাইওভারে যেভাবে ফাটল দেখা দিয়েছে, আমি নিজেই অবাক হয়েছি। ধারণা করা হচ্ছে, নির্মাণজনিত ত্রুটির কারণে এ ফাটল দেখা দিয়েছে। যেহেতু এ ফ্লাইওভার সিডিএ নির্মাণ করেছে, তাই তাদের চিঠি দেওয়া হচ্ছে। তারা তদন্ত করে সিদ্ধান্ত নেবে। প্রয়োজনে আমরা তাদের সহযোগিতা করব।’

সোমবার রাতে ওই র্যাম্পের সংযোগকারী অংশের একটি পিলারের ওপরের দিকে ফাটল নজরে আসে বলে জানান চান্দগাঁও থানার ওসি মঈনুর রহমান। তিনি বলেন, ‘ফাটলের খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকেই ওই অংশ দিয়ে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছি। নিচের দোকানপাট সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। ঝুঁকি বিবেচনায় গাড়ি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। সিডিএ, সিটি করপোরেশন এবং ম্যাক্সকে (ঠিকাদার) জানিয়ে দিয়েছি। এখন উনাদের কাজ।’

১০৬ কোটি টাকা ব্যয়ে বন্দরনগরীর চান্দগাঁও থানা এলাকা থেকে বহদ্দারহাট মোড় পর্যন্ত ১ দশমিক ৩৩ কিলোমিটার এ ফ্লাইওভার চালু হয়েছিল ২০১৩ সালের অক্টোবরে। পরে ২০১৭ সালে ফ্লাইওভার থেকে কালুরঘাটমুথী একটি র‍্যাম্প যুক্ত করা হয়। ভারী গাড়ি চলাচলের কারণে এখন ফাটল ধরার কথা বললেও এর দায় নিতে রাজি নয় নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ) কিংবা রক্ষণাবেক্ষণকারী প্রতিষ্ঠান চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (সিসিসি)।

জানা গেছে, ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে ফ্লাইওভারটি রক্ষণাবেক্ষণের ভার সিসিসিকে দেয় সিডিএ। মাহফুজুর রহমান বলেন, ‘কলামের ওপরে ক্যান্টিলিভার (মূল কাঠামোর সাথে সংযোগ করা অংশ) করে বহদ্দারহাট ফ্লাইওভারের সাথে র্যাম্পটি করা হয়েছে। ভারী যানবাহন চলাচল করায় পিলারের উপরের অংশে ফাটল তৈরি হয়েছে। তবে এটা মেরামত করা যাবে।

এখন যানবাহন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ যেহেতু সিটি করপোরেশন করে, তাদের সাথে যোগাযোগ করে মেরামত করা হবে। অতি দ্রুত যান চলাচলের জন্য র্যাম্পটি উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে।’

সিটি করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক বলেন, বিষয়টি জানার পর ওই র‍্যাম্প নির্মাণকারী ঠিকাদার কোম্পানি ম্যাক্স গ্রুপের সঙ্গে তাদের কথা হয়েছে। তাদের বক্তব্য হলো ‘মূল ডিজাইনে এই র‍্যাম্প ছিল না। পরে সংযুক্ত করেছে। যেহেতু এটা হালকা যানবাহনের জন্যই করা, তাই হাইট ব্যারিয়ার দেওয়া যেত। অতিরিক্ত ভারী গাড়ি চলাচল করায় এ অবস্থা হয়েছে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads