ভ্রমণ একটি ইবাদত

দুনিয়াবী কোনো বৈধ কাজের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা বৈধ

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ভ্রমণ একটি ইবাদত

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ২৭ সেপ্টেম্বর, ২০১৮

মানুষ ভ্রমণ করে। দেশে বা দেশের বাইরে মানুষ তাদের সাধ্যানুসারে ভ্রমণ করে থাকে। ভ্রমণের মাধ্যমে স্রষ্টার বৈচিত্র্যময় সৃষ্টি দেখলে অন্তর বিকাশিত হয়। নৈসর্গিক সৃষ্টিলীলা দর্শন, রিজিক উপার্জন, জ্ঞান অর্জন, রোগ নিরাময় এবং আত্মশুদ্ধির জন্য ভ্রমণ বা পর্যটনের নির্দেশ রয়েছে ইসলামে। এই বিষয়ে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, তারা কী এই উদ্দেশ্যে দেশ ভ্রমণ করেনি, যাতে তারা সমঝদার হূদয় ও শ্রবণ শক্তিসম্পন্ন কর্ণের অধিকারী হতে পারে? বস্তুত চক্ষু তো অন্ধ হয় না, কিন্তু বক্ষস্থিত অন্তরই অন্ধ হয়। (সূরা : হজ্জ, আয়াত-৪৬) অন্য একটি আয়াতে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, আপনি বলুন (হে প্রিয় নবী) তোমরা পৃথিবীতে ভ্রমণ করো এবং দেখো, কীভাবে সৃষ্টিকর্ম শুরু করেছেন। তার পর আল্লাহ পুনরায় সৃষ্টি করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ সবকিছু করতে সক্ষম। (সূরা : আনকাবুত, আয়াত-২০)

ভ্রমণ সম্পর্কে নবী (সা.) বলেছেন, যে জ্ঞানার্জনের জন্য ঘর থেকে পথে বের হবে, সে যেন আল্লাহর পথে বের হলো। (মুসলিম)

ভ্রমণ বলতে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে গমনকে বোঝানো হয়। ভ্রমণ বা পর্যটন হতে পারে ইবাদত, বিনোদন, ব্যবসা বা কর্মক্ষেত্রে গমনের উদ্দেশ্যে। আবার হতে পারে ব্যক্তিগত বা প্রাতিষ্ঠানিক যেকোনো ধরনের সফর বা জ্ঞান লাভের যাত্রা। কেউ যদি সওয়াবের নিয়তে ভ্রমণ করে থাকে তাহলে তার পুরো ভ্রমণই হবে সওয়াবের ভ্রমণ। স্বামী-স্ত্রী সপরিবারে বা দলবদ্ধভাবে ভ্রমণে কল্যাণ ও পুণ্য নিহিত রয়েছে। ইবনে বতুতা বলেছেন, ভ্রমণ স্রষ্টার সৃষ্টি রহস্য জানায়, ভ্রমণ আমাদের আত্মবিশ্বাস বাড়ায়।

ইসলামের পরিভাষায় সফর তিন প্রকার। এক. প্রশংসনীয় সফর : যে সফর আল্লাহর আদেশ বা নিষেধ র্কাযকর করার উদ্দেশ্যে হয়। যেমন- হজ, ওমরাহ পালন অথবা আত্মীয়তার সম্পর্ক বজায় রাখা অথবা জ্ঞান অর্জন করা ইত্যাদি উদ্দেশ্যে সফর করা। এটাকেই প্রশংসনীয় সফর বলা হয়। দুই. নিন্দনীয় সফর : এমন কোনো খারাপ উদ্দেশ্যে সফর করা, যার অনুমতি ইসলামী শরিয়ত প্রদান করেনি। যেমন- মদ বা নেশা জাতীয় কোনো বস্তু ক্রয়-বিক্রয় বা আমদানি-রফতানি ইত্যাদি উদ্দেশ্যে সফর করা। তিন. বৈধ সফর : দুনিয়াবী কোনো বৈধ কাজের উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা। যেমন- বৈধ কোনো ব্যবসা বাণিজ্য, হালাল ও রুচিশীল বিনোদন ইত্যাদি উদ্দেশ্যে ভ্রমণ করা।

আল্লাহর অপরূপ সৃষ্টিকে যে একবার অন্তরের চোখে দেখেছে এবং গভীরভাবে চিন্তা করেছে, সেই মহান স্রষ্টার কাছে আত্মসমর্পণ করে লুটিয়ে পড়েছে সেজদায়। তার সব অহঙ্কার, আমিত্ব, আভিজাত্য ডুবেছে চোখের পানিতে। একটি হাদিসে আছে, সৃষ্টির প্রতি যার অন্তরে দয়া আছে তার প্রতি আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের দয়া থাকবে। (আবু দাউদ, তিরমিযী)

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads