ঘূর্ণিঝড় 'ফণির' প্রভাব এখনও পড়েনি উপকূলীয় দুর্যোগ প্রবণ জেলা বরগুনায়। তবে সর্বত্র বিরাজ করছে চরম আতঙ্ক। বরগুনা ও এর আশপাশ এলাকায় কখনো কখনো আকাশ সামান্য মেঘাচ্ছন্ন আবার কখনো প্রখর তাপসহ সূর্যের দেখা মিলেছে।
এদিকে ঘূর্ণিঝড় 'ফণী' মোকাবেলায় সকল প্রস্তুতি সম্মন্ন করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন। সকাল ১১টায় বরগুনার জেলা প্রশাসকের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত হয়েছে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা। সভায় বরগুনার সকল বিভাগের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের পরিকল্পনার কথা জানান সংবাদ কর্মীদের। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড় আগের ও পরবর্তী উদ্ধারা অভিযানের জন্য প্রস্তত রয়েছে প্রায় ১০ হাজার স্বেচ্ছাসেবী কর্মী। ঘূর্ণিঝড় উপকূল অতিক্রম না করা পর্যন্ত বরগুনা জেলার সকল সরকারি ও বেসরকারি কর্মকর্তাদের ছুটি বাতিল করা হয়েছে। এদিকে মন্ত্রীপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম ঘূর্ণিঝড় ফণি মোকাবেলায় সর্বশেষ প্রস্তুতি সম্পর্কে জানতে ও পরামর্শ দিতে বিকেল সাড়ে ৪টায় বরগুনার জেলা প্রশাসকের সাথে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যেমে কথা বলছেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য বরগুনায় ৩৩৫টি আশ্রয় কেন্দ্র প্রস্তুত করা হয়েছে।এসব আশ্রয়ণ কেন্দ্র অন্তত ২ লাখ মানুষ আশ্রয় নিতে সক্ষম হবে। এছাড়াও ঘূর্ণিঝড়ে সম্ভাব্য ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে নিতে দুই শত ২৬ বান্ডিল ঢেউটিন, চারশত ২৩ মেট্রিক টন খাদ্যশষ্য, নগদ ১৩ লাখ ৯৬ হাজার টাকা মজুদ রাখা হয়েছে। এছাড়াও দুই হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার মজুদ করেছে বরগুনা জেলা প্রশাসন।
দুর্যোগ প্রস্তুতি কর্মসূচি (পিপিপি) বরগুনা সদর উপজেলার টিম লিডার জাকির হোসেন মিরাজ বলেন, ঘূর্ণিঝড় পূর্ববর্তি ও পরবর্তী যে কোনো জরুরি প্রস্তুতি মোকাবেলায় ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির (সিপিপি) সাড়ে সাত হাজার কর্মী বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রায় ১০ হাজার কর্মী বরগুনার বিভিন্ন দুর্যোগপ্রবণ ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে অবস্থান নিয়েছে।
বরগুনা জেলা ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড় ফণির কারণে তীরে থাকা সকল জেলেদের সমুদ্রযাত্রা বাতিল করা হয়েছে। এছাড়াও সমুদ্রে থাকা অনেক জেলে ট্রলার সুন্দরবনে নিরাপদ আশ্রয় নিয়েছে। আর যেসব ট্রলার এখনো আশ্রয় নেয়নি, সেসব ট্রলার আজ সন্ধ্যার মধ্যে নিরাপদ আশ্রয় নেবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।
বরগুনার জেলা প্রশাসক করীব মাহমুদ বলেন, ঘূর্ণিঝড়ফণির পূর্ববর্তী এবং পরবর্তী করণীয় নিয়ে বরগুনা জেলা প্রশাসন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা সম্পন্ন করেছে। এছাড়া বরগুনার সবগুলো আশ্রয়ণ কেন্দ্র খোলা রাখা হয়েছে। মজুদ রাখা হয়েছে বিপুল পরিমাণ শুকনো খাবার ও বিশুদ্ধ পানি। তিনি আরো বলেন, ইতোমধ্যেই বরগুনার সকল রুটের নৌ-যান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। বিভিন্ন দুর্যোগপ্রবণ এলাকাগুলোকা মাইকিং করে স্থানীয় বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে।