ইমরান এমি, চট্টগ্রাম
আসন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের পছন্দের কোনো প্রার্থী নেই। দলীয় সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যাকেই প্রার্থী ঘোষণা করেন তার জন্যই সবাই কাজ করবেন বলে ঐকমত্যে পৌঁছেছেন নগর আওয়ামী লীগের নেতারা। তবে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে দলীয় প্রার্থী হিসেবে আলোচনায় আছেন প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরীর ছেলে শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল।
জানা যায়, চট্টগ্রাম নগর আওয়ামী লীগ গত শনিবার বর্ধিত সভার আয়োজন করে। সভায় নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন, শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেলসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সভায় অন্যান্য এজেন্ডা নিয়ে আলোচনা হলেও মেয়র নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা হয়নি। গত সোমবার থেকে চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন (চসিক) নির্বাচনে অংশ নিতে আগ্রহী মেয়র, কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত কাউন্সিলর পদের প্রার্থীদের মনোনয়ন ফরম বিতরণ শুরু করে আওয়ামী লীগ। এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৫ জন প্রার্থী মনোনয়ন নিয়েছেন। তারা হলেন- রেজাউল করিম চৌধুরী, খোরশেদ আলম, নুর ইসলাম বিএসসি ও মজিবুর রহমান। এছাড়া গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক কার্যালয় থেকে মনোনয়নের জন্য দলীয় আবেদনপত্র সংগ্রহ করেন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন।
ওই বর্ধিত সভায় মেয়র পদে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির ও শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান কেউ মেয়র পদে লড়ার আগ্রহের কথা না জানালেও এ দুই নেতাকে নিয়েই নগরীর রাজনীতিতে মিলানো হচ্ছে রাজনৈতিক হিসাব। দীর্ঘদিন ধরে দুই ধারায় বিভক্ত নগর আওয়ামী লীগের একটি অংশে প্রয়াত মেয়র এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী ও অপর অংশে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন নেতৃত্ব দিয়ে আসছেন। তবে মহিউদ্দিন চৌধুরীর মৃত্যুর পর তার ছেলে মহিবুল হাসান চৌধুরী পিতার অনুসারীদের নিয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করছেন। তবে নওফেলের নিজের কোনো গ্রুপ নেই বলে বিভিন্ন সময়ে গণমাধ্যমে বক্তব্য দিয়েছেন। তারপরও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র পদে বর্তমান মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনের সঙ্গে জোরেশোরে আলোচনায় আছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। ব্যক্তিগতভাবে নওফেল মেয়র পদে নির্বাচনে আগ্রহী নন জানালেও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পাল্টাপাল্টি বক্তব্য ও বিবাদে জড়িয়ে পড়ছেন এই দুই নেতার অনুসারীরা।
ঐক্যের কারণে বর্ধিত সভায় নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সিটি মেয়র আ জ ম নাছির কর্মীদের সতর্ক করে বলেছেন, আত্মঘাতী কর্মকাণ্ড থেকে যতটুকু সম্ভব, নিজেদের বিরত রাখার চেষ্টা করতে হবে। পরস্পর পরস্পরকে হেয় করা, কোণঠাসা করার চেষ্টা, ফেসবুকে পরস্পরের বিরুদ্ধে কোনো একটা বিষয় ভাইরাল করে দেওয়া এগুলো বন্ধ করতে হবে। এসব বন্ধ করা না গেলে দিন শেষে ক্ষতি হবে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার, সরকারের এবং দলের। এসব প্রচারণা যদি সত্যি হয়, তাহলে আপনারা সভা ডেকে দলীয় ফোরামে আলোচনা করবেন। সেখানে নিষ্পত্তি করুন। যেভাবে হোক, দলের ভাবমূর্তি রক্ষা করতে হবে। না হলে পদে আসীনরা প্রশ্নবিদ্ধ হবে, দল ক্ষতিগ্রস্ত হবে।
সভায় নগর কমিটির কার্যকরী সদস্য ও শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মুহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল বলেন, নগর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক ভিত্তি দেশ ও জাতিকে সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার একটি আদর্শিক শক্তি ও ভিত্তি। চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে যাকে নৌকা প্রতীকের মনোনয়ন দেওয়া হবে, তার পক্ষে আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের ঐক্যের শক্তিকে কাজে লাগিয়ে নৌকা প্রতীকের প্রার্থীকে জয়ী করতে নেতাকর্মীদের বিভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধ থাকার আহ্বান জানান তিনি।
                                
                                
                                        
                                        
                                        
                                        




