একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনী প্রচারণার প্রথম দিন থেকেই মাঠ পর্যায়ে প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে পটুয়াখালী-৪ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মহিব্বুর রহমান মহিব। আওয়ামী লীগের প্রচারনায় গ্রামীন জনপদে উৎসব মূখোর পরিবেশ বিরাজ করছে। দফায় দফায় চলছে আওয়ামী প্রার্থীর উঠান বৈঠকসহ নানা প্রচারনা। গ্রামীন মেঠোপথের অলি-গলিতে ছেয়ে গেছে নৌকার ব্যানার ও পোস্টারে। নৌকা পক্ষের সমর্থকরা বর্তমান সরকারের একাধিক উন্নয়ন কর্মকান্ড তুলে ধরে ভোটারদের মন জয় করার চেষ্টা চালাচ্ছেন। অন্যদিকে নির্বাচনী মাঠে প্রচারনায় স্থবীর হয়ে পরেছেন বিএনপি মনোনীত ধানের শীষের প্রার্থী এবিএম মোশাররফ হোসেন। রাঙ্গাবালী-কলাপাড়া উপজেলার কোথাও দেখা যাচ্ছে না ধানের শীষের ব্যানার-পোস্টার, শোনা যাচ্ছেনা প্রচারণার শব্দ। গত ১১ ডিসেম্বর রাঙ্গাবালীতে আওয়ামী লীগ বিএনপির মুখোমুখি সংঘর্ষের ঘটনার পর বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রচারনা থেকে মাঠ ছেরেছেন এমন দৃশ্য চোখে পরার মত। তবে বিএনপির অভিযোগ মামলা এবং গ্রেফতার আতঙ্কে তারা তাদের প্রচারনায় স্থবীর হয়েছে।
রাঙ্গাবালী উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়ন নিয়ে একটি উপজেলা গঠিত এবং কলাপাড়া উপজেলায় ১২টি ইউনিয়ন, দুইটি পৌরসভা ও দুইটি থানা নিয়ে গঠিত পটুয়াখালী-৪ (কলাপাড়া-রাঙ্গাবালী) নির্বাচনী এলাকায় মোট ভোটার দুই লাখ ৪৯ হাজার ৪৬ জন। পুরুষ ভোটার এক লাখ ২৪ হাজার ৭৮৯ এবং নারী ভোটার এক লাখ ২৪ হাজার ২৫৭ জন। এ আসনে এবার ছয়জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধীতা করছেন। তারা হলেন,মহিব্বুর রহমান মহিব (আ’লীগ), এবিএম মোশাররফ হোসেন(বিএনপি),আনোয়ার হাওলাদার (জাপা), জহিরুল আলম (বাসদ), আব্দুর রহমান হাওলাদার (ইসলামী ঐক্যজোট) ও মুফতি হাবিবুর রহমান (ইশলামী অন্দোলন)।
এ আসনটি আওয়ামী লীগের ঘাঁটি হিসেবে পরিচিত। ১৯৯১ থেকে এ আসনে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়ে আসছে। প্রতিবারই প্রতিদ্বন্ধীতা হয়েছে বিএনপির সাথে। এবারো ভোটের লড়াই হবে আ’লীগ ও বিএনপির মধ্যে। তবে প্রচারনার শেষ দিকে নির্বাচনী মাঠে বিএনপির ভুমিকা কি থাকবে তা নিয়ে সংশয় রয়েছে।
পায়রা তৃতীয় সমুদ্র বন্দর, কলাপাড়া-কুয়াকাটা মহাসড়কের তিন নদীর উপর তিনটি সেতু, ১৩২০ মেঘাওয়াট তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র, সাবমেরিণ কেবল ল্যান্ডিং ষ্টেশন নির্মান হয়েছে। আ’লীগ ক্ষমতায় আসলে প্রস্তাবনায় থাকা ঢাকা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত রেল লাইন, বিমানবন্দর সবই নির্মান হবে। বর্তমান সরকারের উন্নয়নের ধারাবাহিকতা অব্যাহ রাখতে নৌকায় ভোট চেয়ে দিনের শুরু থেকে রাতের গভীর পর্যন্ত সাধারন জনগনের কাছে যাচ্ছেন। দলের সকল গ্রুপিং নিরসন করে সকল পর্যায়ের নেতা কর্মীদের একই সাথে নিয়ে কাজ করছেন আ’লীগ প্রার্থী মহিব্বুর রহমান ।
এলাকায় প্রতিটি পথসভা ও উঠান বৈঠকে জনগনের ব্যাপক উপস্থিতিতে নৌকার প্রার্থী দিচ্ছেন বিভিন্ন উন্নয়নমুলক কর্মকান্ডের প্রতিশ্রুতি। আলহাজ্ব জালাল উদ্দিন কলেজের অধ্যক্ষ মহিব্বুর রহমান দীর্ঘ বছর ধরে পটুয়াখালী কলাপাড়ায় রাজনীতির সাথে জড়িত। ১৯৯১ থেকে এ আসনে আ.লীগের মনোনয়ন চেয়ে আসছেন তিনি । প্রতিবছর শীত ও যেকোনো দূর্যোগে মানুষকে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেয়ায় সর্বস্তরের মানুষের কাছে তিনি দানশীল হিসেবে পরিচিত। পারিবারিক ঐতিহ্য থাকায় এবং ক্লিন ইমেজের প্রার্থী হিসেবে এ আসনে এবারও নৌকা প্রার্থী মহিব্বুর রহমান বিজয়ী হবেন বলে দলের নেতাকর্মীরা আশা করছেন।
গত ২৭ নভেম্বর কলাপাড়া শহরে নির্বাচনী শোডাউন দেয়ার পর তেমন কোন নির্বাচনী কর্মকান্ড দেখা যাচ্ছেনা না বিএনপির। ১১ ডিসেম্বর রাঙ্গাবালীর খালগোড়া বাজারে আওয়ামীলীগ ও বিএনপি কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষের পর গ্রেফতার এড়াতে রাঙ্গাবালী উপজেলার অধিকাংশ নেতাকর্মী এখন এলাকা ছাড়া এ অভিযোগ বিএনপি প্রার্থীর। এছাড়া তার নির্বাচনী সভা ও প্রচারণায় বাঁধা দেয়ারও অভিযোগ করেণ। বিএনপি প্রার্থীর দাবি সুষ্ঠু নির্বাচন হলে তিঁনি এ আসনে ভোটে বিজয়ী হবেন।
আওয়ামী লীগের বিরুদ্বে বিএনপি প্রার্থীর অভিযোগ মিথ্যা দাবি করে আওয়ামীলীগ প্রার্থী মহিব্বুর রহমান বলেন, নির্বাচনে বিএনপির পরাজয় নিশ্চিত একথা বুঝতে পেরে বিএনপি এখন বিভিন্ন অজুহাত দিয়ে নির্বাচনের মাঠ ছাড়ার কৌশল করছে। এ আসনে অপর প্রার্থীদের কর্মী সমর্থকরা নির্বাচনী সভা,মাইকিং,পোষ্টারিং ও প্রচার প্রচারনা চালিয়ে যাচ্ছে।
এদিকে রাঙ্গাবালী-কলাপাড়া উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের কয়েক শতাধিক বিএনপি নেতাকর্মীর আওযামী লীগে যোগদেয়ার খবর পাওয়া গেছে। দলের নেতাকর্মীদের দল ত্যাগ করার বিষয় জানতে চাইলে, কলাপাড়া উপজেলা বিএনপি'র সাবেক সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানে বলেন- শুনেছি মহিপুর থানা সহ বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা দল ত্যাগ করেছেন যা অত্যান্ত মর্মান্তিক ও দুঃক্ষজনক,তারা কেন দল ত্যাগ করছে এই বিষয়ে সঠিক কোন তথ্য আমাদের জানা নেই। গ্রুপিং এর কারনে এমনটা হচ্ছে কিনা? জানতে চাইলে মোস্তফিজুর রহমান বলেন - এটা কোন যোক্তিক কারন হতে পারেনা। প্রার্থীর উচিত বিভিন্ন কৌসল অভলম্বন করে নির্বাচনের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়া,আমরা প্রার্থীর সাথে কাজ করতে সব সময় প্রস্তুত। তিনি আশা প্রাকাশ করেন দলের শত প্রতিকুলতার মধ্যেও দল ঘুরে দাড়াবে।