আলোক-ফাঁদ, ধানের পোকামাকড় দমনের একটি পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি। এ পদ্ধতি ব্যবহার করে অল্প খরচে কৃষক অতি সহজেই দমন করতে পারছেন ক্ষতিকর সব পোকামাকড়। ফলে ফসলও ফলছে ভালো। যে কারণে দাগনভূঞায় ‘আলোক-ফাঁদ’ প্রযুক্তি ক্রমান্বয়েই কৃষকদের কাছে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
কৃষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সন্ধ্যার পর ধান ক্ষেত থেকে পঞ্চাশ-একশো মিটার দূরে ফাঁকা জায়গায় বাঁশের তিনটি খুঁটি ত্রিকোনাকার করে মাটিতে পুঁতে মাথার অংশ একত্রে বেঁধে দিতে হয়। এরপর মাটি থেকে আড়াই থেকে তিন ফুট ওপরে একটি বৈদ্যুতিক বাল্ব জ্বালিয়ে খুঁটির তিন মাথার সংযোগস্থলে রশির সাহায্যে ঝুলিয়ে দিতে হবে। এর নিচে একটি বড় আকারের প্লাস্টিকের গামলা বা পাত্রে ডিটারজেন্ট পাউডার অথবা কেরোসিন মিশ্রিত পানি রাখা হয়। সন্ধ্যার পর মাঠ জুড়ে যখন অন্ধকার নেমে আসতে থাকে তখন আলোক-ফাঁদের আলোর ঝলকে আকৃষ্ট হয়ে ধান ফসলের বিভিন্ন পোকামাকড় এ পাত্রে চলে আসে।
বর্তমানে ধানখেতে বৈদ্যুতিক বাল্বের পাশাপাশি সৌরবিদ্যুতের আলোক-ফাঁদও ব্যবহার করা হয়ে থাকে। এভাবে আলোক-ফাঁদ ব্যবহার করে ধান ফসলের মাঠে ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি নির্ণয়-পূর্বক নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। অতি অল্প খরচে তৈরি আলোক-ফাঁদ অন্ধকার রাতে দেখতে দৃষ্টিনন্দনও বটে। এতে খরচ কম হয় এবং পরিবেশবান্ধবও। তাই ধানখেতের ক্ষতিকর পোকার উপস্থিতি শনাক্তকরণ ও দমনে আলোক-ফাঁদ প্রযুক্তি দাগনভূঞার কৃষকদের কাছে ক্রমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে।
দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, ধানের ক্ষতিকর ও উপকারী পোকামাকড়ের উপস্থিতি শনাক্তকরণ ও নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে চলতি বছর দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্যোগে রোপা আমন ধানে ‘আলোক-ফাঁদ’ স্থাপনের কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে।
মঙ্গলবার সন্ধ্যায় উপজেলার হাসানগনি পুর গ্রামে রোপা আমনের মাঠে পোকার উপস্থিতি যাচাইয়ের জন্য আলোক ফাঁদ স্থাপন করেন উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
এ সময় কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মো. হারুন অর রশিদ, উপ-সহকারী উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা মো. জামাল হোসেন , উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মারুফ ও শরিফুল ইসলাম ভূঁইয়া সহ আমনচাষী উপস্থিত ছিলেন।





