বাংলাদেশ দল কমনওয়েলথ গেমসে দীর্ঘ ২৮ বছর পর পিস্তল ইভেন্টে পদক পেল। আর সেটা এলো শাকিল আহমেদের হাত ধরে। তিনি ৫০ মিটার পিস্তল ইভেন্টে জিতেছেন রৌপ্যপদক। অস্ট্রেলিয়ার গোল্ড কোস্টে আবদুল্লাহ হেল বাকীর পর শাকিল উড়িয়েছেন লাল-সবুজের পতাকা। বাকী ১০ মিটার এয়ার রাইফেল ইভেন্টে রৌপ্যপদক লাভ করেন। সব ইভেন্টে বাংলাদেশি খেলোয়াড়রা ব্যর্থ হলেও একমাত্র শুটিংয়েই দুটি পদক এলো। আর শুধু সেটাই নয়, কমনওয়েলথ গেমসের ইতিহাসে বাংলাদেশ এ পর্যন্ত যে আটটি পদক লাভ করল, তার প্রতিটিই এসেছে শুটিং থেকে।
বাংলাদেশের জন্য দ্বিতীয় পদক এনে দিতে পেরে সেনাবাহিনীর এই শুটার বেশ আনন্দিত। পদক জয়ের জন্য শাকিলের প্রস্তুতি ছিল আগে থেকেই। দেশে থাকতে সেভাবে অনুশীলনও হয়েছে। পদক জয়ের পর জানালেন শাকিল, ‘অবশ্যই ভালো লাগছে। বাংলাদেশ থেকে ভালো প্রস্তুতি নিয়ে এখানে এসেছিলাম। আমার লক্ষ্য ছিল পদক না হোক, আমার যে স্কোরটা ছিল সেটা যেন হয়। আমাদের দলের প্রত্যেকেই তাদের সেরা স্কোর করেছে। কারণ এবার আমাদের প্রস্তুতি খুব ভালো ছিল।’
১০ মিটার ইভেন্ট নিয়ে শাকিল বলেন, ‘আমার ১০ মিটার এয়ার পিস্তলেও ভালো পারফরম্যান্স ছিল। কিন্তু ফাইনালের কথা আগেভাগে কিছুই বলা যায় না। তারপরও আমি চেষ্টা করেছিলাম, হয়নি। ৫০ মিটার পিস্তল ছিল আমার মূল ইভেন্ট। আশা করেছিলাম এখানে ভালো কিছু করব। এখানে যেটা চেয়েছি সেটাই করতে পেরেছি বাছাই পর্বে, ফাইনালেও। অনুশীলনে সব সময় যেটা মারি সেটাই মেরেছি।’
১৯৯০-এর পর আবার পিস্তলে পদক। নিউজিল্যান্ডের অকল্যান্ডে আতিকুর রহমান ও আবদুস সাত্তার নিনি পিস্তল দলগত ইভেন্টে সেবার স্বর্ণপদক জিতেছিলেন। এটাই ছিল দেশের হয়ে গেমসে প্রথম পদক। শাকিল অবশ্য ২০১৬ সালে এসএ গেমসে স্বর্ণপদক জেতার পর পাখির চোখ করেছিলেন এই ইভেন্টে। শাকিল সেটাই জানালেন, ‘আমি ২০১৬ সালে এসএ গেমসে প্রথম স্বর্ণপদক জিতি। তখন থেকেই লক্ষ্য নির্ধারণ করেছিলাম কমনওয়েলথ গেমসকে। সেভাবেই প্রস্তুতি শুরু করি। ফেডারেশন থেকে সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা পেয়েছি। যা চেয়েছি তাই দিয়েছে। বাংলাদেশ আর্মিও আমাকে সহায়তা দিয়েছে। তবে বিশেষভাবে বলব অপু ভাইয়ের কথা। সব সময় তিনি আমাদের পাশে থেকেছেন। প্রতিযোগিতার সময় আমার অন্য সতীর্থরাও আমাকে সমর্থন দিয়েছে। তাদের কাছেও আমি কৃতজ্ঞ।’
এদিকে শুটিং ছাড়া গেমসের বিভিন্ন ইভেন্টে বাংলাদেশের ব্যর্থতার তালিকা বেড়েই চলেছে। ১০০ মিটার স্প্রিন্টে ভালো করতে পারেননি বাংলাদেশের দ্রুততম মানবী শিরিন আক্তার। ৪১ জনের মধ্যে হয়েছিলেন ৩৮তম। এবার ২০০ মিটার স্প্রিন্টে ৩৬ জনের মধ্যে সবার শেষে দৌড় শেষ করেছেন। অ্যাথলেটিক্সের ১০০ মিটার ইভেন্টে অংশ নিয়েছিলেন দেশের দ্রুততম মানব মেজবাহ আহমেদ ও দ্রুততম মানবী শিরীন আক্তার। ছেলেদের ইভেন্টে ষষ্ঠ হিটে অংশ নিয়ে ৭ জন প্রতিযোগীর মধ্যে পঞ্চম হন মেজবাহ। ৬৭ জন প্রতিযোগীর মধ্যে হয়েছেন ৫৩তম। মেয়েদের ১০০ মিটার স্প্রিন্টের প্রথম হিটে অংশ নেন শিরীন। আর মোট ৪২ প্রতিযোগীর মধ্যে তার অবস্থান ৩৮তম।
শুটিংয়ে ছেলেদের ৫০ মিটার রাইফেল প্রোন ইভেন্টে বাছাইপর্বই পার হতে পারেননি শোভন চৌধুরী। ৬০৪.৫ স্কোর করে হয়েছেন ২০তম। শুটিংয়ে মেয়েদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তলে বাছাই পর্ব পার হয়ে পারেননি বাংলাদেশের আরমিন আশা ও আরদিনা ফেরদৌস।
ভারোত্তোলনে মেয়েদের ৫৮ কেজি ওজন শ্রেণিতে ১৪ প্রতিযোগীর মধ্যে ১৩তম হয়েছেন ফায়েমা আক্তার। মেয়েদের ৫৩ কেজি ওজন শ্রেণিতে ১২ প্রতিযোগীর মধ্যে সবার শেষ স্থানটি পান ফুলপতি চাকমা। ছেলেদের ৬৯ কেজি ওজন শ্রেণিতে শিমুল তিনবারের প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়। সাঁতারে ছেলেদের ৫০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকের হিট থেকে বাদ পড়েন আরিফুল। ৭ জনের মধ্যে নাহিদ হয়েছেন সপ্তম। ১০০ মিটার বাটারফ্লাই সাঁতারের দুই নম্বর হিটে অংশ নিয়ে মাহমুদুন্নবী নাহিদ ২৯ জনের মধ্যে হন ২১তম। ছেলেদের ১০০ মিটার ব্রেস্ট স্ট্রোকের তিন নম্বর হিটে ১ মিনিট ০৭ দশমিক ৫১ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাঁতার শেষ করেন আরিফুল। ২৯ প্রতিযোগীর মধ্যে ২০তম হন তিনি। মেয়েদের ৫০ মিটার ফ্রিস্টাইলের দুই নম্বর হিটে ৩১ দশমিক ১০ সেকেন্ড সময় নিয়ে সাঁতার শেষ করেন নাজমা। নিজের হিটে ছয় প্রতিযোগীর মধ্যে পঞ্চম এবং সব মিলিয়ে ৪০ প্রতিযোগীর মধ্যে ৩৭তম হয়েছেন তিনি। সাঁতারে মেয়েদের ৫০ মিটার বাটারফ্লাইয়ে ৩২ দশমিক ৯৬ সেকেন্ড সময় নিয়ে নাজমা খাতুন
 
                                 
                                 
                                         
                                         
                                         
                                        





