অভিযোগে-পাল্টা অভিযোগে প্রচার শেষ করেছেন প্রার্থীরা

সংগৃহীত ছবি

নির্বাচন

অভিযোগে-পাল্টা অভিযোগে প্রচার শেষ করেছেন প্রার্থীরা

  • সাইদ আরমান
  • প্রকাশিত ৩১ জানুয়ারি, ২০২০

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার শেষ। গত মধ্যরাত থেকে শেষ প্রচারণা। নির্বাচনী বিধি অনুযায়ী, ভোটের ৩২ ঘণ্টা আগে প্রচারণা শেষ করতে হয়। আগামীকাল দুই সিটিতে ভোট। ওই দিন সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত একযোগে সব কেন্দ্রে ইভিএমে ভোট চলবে।

অভিযোগ, পাল্টা অভিযোগ, হামলা, সংঘর্ষ ও গুলির ঘটনা ঘটেছে ভোটকে কেন্দ্র করে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রে বিরোধী প্রার্থীরা আক্রমণের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। উত্তরের মেয়রপ্রার্থী তাবিথ আউয়াল নির্বাচনী প্রচারকালে হামলার শিকার হয়েছেন। সর্বশেষ দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়রপ্রার্থী ইশরাক হোসেনের প্রচারেও হামলার অভিযোগ তোলা হয়েছে।

জানা গেছে, ভোটের জন্য দায়িত্ব পালন করছে মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্স। এ নির্বাচনে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষায় পুলিশ, বিজিবি, আনসার ও ভিডিপি নিয়োগে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সাধারণ কেন্দ্রে ১৬ জন করে এবং গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রে ১৮ জন করে নিরাপত্তা সদস্য নিয়োজিত থাকবে। মোবাইল ও স্ট্রাইকিং ফোর্সে দায়িত্ব পালন করবে পুলিশ, এপিবিএন, ব্যাটালিয়ন আনসার, বিজিবি ও র্যাব। নির্বাহী ও বিচারিক হাকিমও থাকবে এসময়। ইভিএমের কারিগরি সহায়তায় প্রতি ভোট কেন্দ্রে ২ জন করে সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য নিয়োগ থাকবে।

মহিলা ও শারীরিক প্রতিবন্ধী ভোটাররা যাতে নিরাপদে, নির্বিঘ্নে ও স্বাচ্ছন্দ্যে ভোট দিতে পারে আইন শৃঙ্খলাবাহিনী প্রয়োজনীয় সহায়তা করবে।

নির্বাচনের দিন পর্যন্ত আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্সধারীদেরও আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ চলাচল নিষিদ্ধ থাকবে। ভোটকেন্দ্রের ৪০০ গজ ব্যাসার্ধের মধ্যে কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বা তার পক্ষে কোনো ব্যক্তি ক্যাম্প করতে পারবে না। ভোটকেন্দ্রে কোনো প্রকার দাঙ্গা, সন্ত্রাস বা অনিয়ম হলে কিংবা আইন বিধির ব্যত্যয় হলে ভোটগ্রহণ বন্ধ।

ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন নির্বাচন কেন্দ্র করে বড় চ্যালেঞ্জের মুখে নির্বাচন কমিশন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশন এরই মধ্যে তিন বছর পূর্ণ করেছে। এই কমিশনের অধীনে সামনে থাকা নির্বাচনগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় ও গুরুত্বপূর্ণ নির্বাচন হচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচন। কমিশনের মেয়াদের বাকি সময়ের সম্ভাব্য নির্বাচনের মধ্যে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ৩০ জানুয়ারির নির্বাচন ঘিরে। সবার জন্য লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নিশ্চিত করে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষে নির্বাচনের বৈতরণী পার হতে হবে কমিশনকে।  

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বর্তমান নির্বাচন কমিশনের প্রথম দুটি নির্বাচন, কুমিল্লা ও রংপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সফলতা ছিল। কিন্তু বেশিদিন সেটি থাকেনি। পরবর্তী পাঁচটি সিটি করপোরেশন নির্বাচনের তিনটির বিষয়ে নানা অভিযোগ উঠেছে। বরিশাল সিটি করপোরেশন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন ও খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচন সম্পর্কে সাধারণ মানুষের মধ্যে ভিন্ন বার্তা যায়। ২০১৫ সালের ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন নির্বাচনেও ব্যাপক অনিয়মের তথ্য এসেছে সংবাদ মাধ্যমগুলোতে।

জানতে চাইলে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও সুশাসনের জন্য নাগরিক-সুজন সভাপতি এম হাফিজ উদ্দিন খান বাংলাদেশের খবরকে আলাপকালে বলেন, ১  ফেব্রুয়ারির নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করা বড় চ্যালেঞ্জ। তবে নির্বাচন কমিশনের কাছে এমনটি আমি আশা করি না। তাদের অতীতের যে কর্মকাণ্ড তাতে এই কমিশন দিয়ে নিরপেক্ষ নির্বাচন আয়োজন করা সম্ভব নয়।

সাবেক এই উপদেষ্টা স্পষ্ট করে বলেন, নির্বাচন কমিশনের যে সততা ও কর্ম দক্ষতা থাকা উচিত সেটি নেই। ফলে আশা করা যাচ্ছে না নির্বাচন ভালো হবে।

ইভিএম ব্যবহারের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, অনেক বিশেষজ্ঞই এটি ব্যবহার চাননি। এমনকি বুয়েটের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক জামিলুর রেজা চৌধুরীও কমিশনকে পরামর্শ দিয়েছেন ইভিএম ব্যবহার না করতে। তবে কেন এটি করা হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলোর অনেক প্রার্থী এর বিরুদ্ধে কথা বলছেন। আমিও মনে করি, এখনই শতভাগ কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহারের দরকার ছিল না।

এ নির্বাচনে আইনশৃঙ্খলা সমন্বয় ও মনিটরিং সেলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন নির্বাচন কমিশনের এনআইডি উইংয়ের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।

দুই সিটিতে সব মিলিয়ে ২৪৬৮ জন প্রিজাইডিং অফিসার, ১৪ হাজার ৪৩৪ জন সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার এবং ২৮ হাজার ৮৬৮ জন পোলিং অফিসার দায়িত্ব পালন করবেন।

উত্তর সিটি করপোরেশন : সাধারণ ওয়ার্ড ৫৪টি, সংরক্ষিত ১৮টি, মোট ভোট কেন্দ্র ১ হাজার ৩১৮টি, মোট ভোট কক্ষ ৭ হাজার ৮৪৬। মোট ভোটার ৩০ লাখ ১০ হাজার ২৭৩ জন। তাদের মধ্যে ১৫ লাখ ৪৯ হাজার ৫৬৭ জন পুরুষ, ১৪ লাখ ৬০ হাজার ৭০৬ জন নারী।

দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে সাধারণ ওয়ার্ড ৭৫টি, সংরক্ষিত ২৫টি, মোট ভোটকেন্দ্র ১ হাজার ১৫০টি, মোট ভোট কক্ষ ৬ হাজার ৫৮৮টি। মোট ভোটার ২৪ লাখ ৫৩ হাজার ১৯৪ জন। তাদের মধ্যে ১২ লাখ ৯৩ হাজার ৪৪১ জন পুরুষ; ১১ লাখ ৫৯ হাজার ৭৫৩ জন নারী।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads