অবশেষে জমি ও ঘর পেলেন নরসুন্দর শেফালী রানী শীল

কাঠালিয়ার নারী নরসুন্দর (নাপিত) শেফালী রানী শীলকে ঘর প্রদান করেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান এমপি

ছবি : বাংলাদেশের খবর

সারা দেশ

গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর

অবশেষে জমি ও ঘর পেলেন নরসুন্দর শেফালী রানী শীল

  • কাঠালিয়া (ঝালকাঠি) প্রতিনিধি
  • প্রকাশিত ২ জুলাই, ২০১৯

দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মোঃ এনামুর রহমান এমপি বলেছেন, আমাদের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন, বাংলাদেশে কেহ গৃহহীন থাকবেন না। সেই লক্ষে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।

আজ মঙ্গলবার সকাল ১১ টায় ঝালকাঠির কাঠালিয়ার দোগনা বাজারের একমাত্র নারী নরসুন্দর (নাপিত) শেফালী রানী শীলকে নিয়ে ইত্তেফাকসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে সংবাদ প্রচারিত হওয়ায় মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে ৪ শতাংশ জমির দলিল ও ঘর প্রদানের কাগজপত্র শেফালী রানী শীলের হাতে তুলে দেন। জমি ও ভবন নির্মাণের সুসংবাদ শুনে শেফালী রানী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।

প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুর রহমান গণমাধ্যম কর্মীদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, শেফালী রানীর দুরবস্থার কথা গণমাধ্যমে তুলে ধরায় বিষয়টি প্রধানমন্ত্রীর নজরে এসেছে। প্রত্যন্ত গ্রামের মানুষের খবর রাখেন প্রধানমন্ত্রী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সরকার, একটি কল্যানমূখী সরকার। শেখ হাসিনা একজন মানবতাবাদি নেতা, মানবতাবাদি প্রধানমন্ত্রী। তাঁর নির্দেশে শেফালী রানীকে চার শতাংশ জমি ও একটি একতলা বিশিষ্ট ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হচ্ছে।

পরে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. এনামুল রহমান কাঠালিয়া উপজেলার বলতলা গ্রামের দোগনা বাজারে সুধিজনদের সঙ্গে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন।

ঝালকাঠির জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলীর সভাপতিত্বে প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অসহায় দুখী মানুষের খোজ খবর রাখেন বলেই তিনি আজ মাদার অব হিউমেনিটি। তিনি আরও বলেন, এ সরকারের প্রধান নীতি হল দেশের কোন মানুষ না খেয়ে থাকবে না। সরকার সকল নাগরীকের তিন বেলা খাওয়া এবং বসত ঘরের নিশ্চয়তা প্রদান করবে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নের জন্য মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দিনরাত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন।

এসময় অন্যন্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বিশেষ অতিথি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালায়ের অতিরিক্ত সচিব মো. মোহসীন, ঝালকাঠির পুলিশ সুপার ফাতিহা ইয়াসমিন ও কাঠালিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমাদুল হক মনির, উপজেলা নির্বাহী অফিসার আকন্দ মোহাম্মদ ফয়সাল উদ্দীন, জেলা আওয়ামীলীগের সহ সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান উজির সিকদার, শৌলজালিয়া ইউপি চেয়ারম্যান মো. মাহমুদ হোসেন রিপন। উপস্থিত ছিলেন নলছিটি উপজেলা চেয়ারম্যান মো. সিদ্দিকুর রহমান ও গালুয়া ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মুজিবুল হক কামাল, কাঠালিয়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান বদিউজ্জামান বদু সিকদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফাতেমা খানম, সকল ইউপি চেয়ারম্যান, সরকারী কর্মকর্তাবৃন্দ, রাজনৈতিক দলের নেতৃবৃন্দ, স্থানীয় গন্যমান্য ব্যক্তিসহ গনমাধ্যম কর্মীরা।

উল্লেখ্য, গত ১২ বছর আগে স্বামী নিরুদ্দেশ হওয়ার পর অসহায় হয়ে পড়েন শেফালী রানী শীল (৪৭)। ৮ মেয়ে ও ১ ছেলের লেখাপড়া ও সংসার চালানো দায় হয়ে পড়ে তাঁর। বাধ্য হয়ে অন্যের বাড়িতে ঝিয়ের কাজ শুরু করেন। সেখান থেকে যে টাকা পাওয়া পেতো, তা দিয়ে কোন রকমের খাবার ঝুটতো। কখনো একবেলা খেয়ে পুরো দিন কাটতো ছয় সদস্যের এ পরিবারের। বাধ্য হয়ে স্বামীর পেশাকে বেছে নিলেন তিনি। সেই থেকে ১২ বছর ধরে পুরুষের চুল দাড়ি কাটছেন ঝালকাঠির কাঠালিয়া উপজেলার বলতলা গ্রামের দোগনা গ্রামের শেফালী রানী শীল। দোগনা বাজারে এক প্রবাসীর ঘরের বারান্দায় তিনি সেলুন দেন। এ কাজেই চলছে তাঁর ছয় সদস্যর সংসার। সামান্য আয়ে অভাব অনটনের মধ্যে কেটে যাচ্ছিল তাঁর দিন। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তাকে জমি ও ঘর দেওয়ায় অভাব কিছুটা পূরণ হল।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads