নির্বাচনী সহিংসতায় আহত ঢাকা-৩ আসনের বিএনপি প্রার্থী গয়েশ্বর চন্দ্র রায়কে দেখতে গেলেন তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের প্রার্থী নসরুল হামিদ বিপু। বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী বিপু গতকাল বুধবার সকালে গয়েশ্বরের পল্টনের কার্যালয়ে দেখতে যান। মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কেরানীগঞ্জের চুনকুটিয়া এলাকায় হামলায় গয়েশ্বর ছাড়াও বিএনপির আরো কয়েকজন নেতাকর্মী আহত হয়েছেন বলে দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
গতকাল বেলা ১১টায় বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী নয়াপল্টনে গয়েশ্বরের রাজনৈতিক কার্যালয়ে আসেন। তিনি সরাসরি চেম্বারের পাশে তার শয়নকক্ষে যান। ওই সময় মাথায় ব্যান্ডেজ লাগানো আহত গয়েশ্বরকে সালাম দিয়ে দাদা সম্বোধন করে তার পাশে বসেন বিপু। তার কাছ থেকে হামলার ঘটনা শোনার পাশাপাশি সমবেদনাও জানান। পরে গয়েশ্বর প্রতিমন্ত্রীকে নিয়ে কক্ষ থেকে বেরিয়ে চেম্বারে আসেন। সেখানে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় গয়েশ্বর চন্দ্র রায়ের ওপর হামলাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ অভিহিত করেন নসরুল হামিদ।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বরকে ‘গুরুজন’ আখ্যায়িত করে নসরুল হামিদ বলেন, ‘দাদা দীর্ঘদিন এখানে রাজনীতি করছেন। উনি আমার অনেক সিনিয়র এবং আমাদের গুরুজন। গতকাল যে অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে, তার জন্য আমরা সবাই লজ্জিত।
তিনি বলেন, ঘটনার জন্য যারা দায়ী তাদের অবশ্যই শাস্তি পাওয়া উচিত। আইন প্রয়োগকারী সংস্থা রাতেই তিনজনকে ধরেছে। আমরা মনে করি, আমরা যেকোনো ধরনের খারাপ পরিস্থিতি মোটেও প্রশ্রয় দেইনি। আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে বলব তারা যেন সেভাবেই ব্যবস্থা নেয়।
গয়েশ্বর চন্দ্র রায় এ সময় প্রতিমন্ত্রীর সঙ্গে তার দীর্ঘদিনের সম্পর্কের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, গণতন্ত্রের এই টানাপড়েনের মধ্যেও আমার পাশে বসা মাননীয় মন্ত্রী, আমরা বড় ভাই-ছোট ভাইয়ের মতো ১০টি বছর চলেছি। একে অপরের আমন্ত্রণে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে আমরা গেছি। এই সংস্কৃতিটা আমাদের মধ্যে সচল। পুলিশ প্রশাসন আমার নেতাকর্মীদের হয়রানি করেছে, গ্রেফতার করেছে এটা একটা সাবজেক্ট। কিন্তু ব্যক্তিগত পর্যায়ে কখনো আমাদের কোনো মনোমালিন্য হয়নি।
মঙ্গলবারের হামলার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যে ঘটনাটা ঘটেছে সেটা আমার গাড়িতে ওঠার আগে। কিছু অতি উৎসাহী ছেলে-পেলে থাকে, কখনো কখনো মিছিলে গোয়েন্দাদেরও লোক থাকে। তারাও কখনো কখনো কোনো ঘটনা ঘটিয়ে দিয়ে একটা নেতিবাচক পরিস্থিতি তৈরি করে। আমি বিশ্বাস করি, বিপু স্বীকার করবে, যে ছেলের নেতৃত্বে হয়েছে সে তার দলের লোক। সে তার দলের লোকদের কন্ট্রোল করতে পারছে কি পারছে না সেটা বড় কথা নয়, কারণ সে তো তখন উপস্থিত ছিল না। হামলাকারীদের থামানোর চেষ্টা করেও কোনো কাজ হয়নি বলে জানান তিনি। তার খোঁজ নেওয়ায় নসরুল হামিদকে ধন্যবাদ জানান গয়েশ্বর।
এ ঘটনায় মামলার পথে হাঁটবেন না জানিয়ে তিনি বলেন, আমি এর বিচারও চাই না। যারা করেছে তারা অবুঝ। তার দলের লোক আবেগে যা কিছু করেছে সেটা তার দলীয় ব্যাপার। কখনো কারো বিরুদ্ধে মামলা-মোকদ্দমা দেওয়ার মধ্যে কখনো ছিলাম না এখনো নেই। রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায় এর মীমাংসা হবে।
                                
                                
                                        
                                        
                                        
                                        




